
চট্টগ্রাম ব্যুরো
চীনের আনহুই প্রদেশের উহু সিটির মেয়র শু ঝি (Xu Zhi) মঙ্গলবার টাইগারপাসস্থ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন।
২৫ নভেম্বর মঙ্গলবার বেলা ২ টায় পরিদর্শনকালে উহু সিটির মেয়রের সাথে ছিলেন উহু ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনোলজিকাল ডেভেলপমেন্ট জোনের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কমিটির ডিরেক্টর ঝৌ হাও (Zhou Hao), উহু মিউনিসিপ্যাল ফরেন অ্যাফেয়ার্স অফিসের ডিরেক্টর লিউ শিংরং (Liu Xingrong), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যুরোর ডিরেক্টর কাও জিয়ে (Cao Jie), ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি ব্যুরোর ডিরেক্টর ঝৌ ওয়েই (Zhou Wei), ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর দং লিয়াং (Dong Liang), চেরি হোল্ডিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট শু হুই (Xu Hui), উহু শিপইয়ার্ড কোম্পানি লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান ঝাং ঝাও (Zhang Zhao), রুইইয়ান ইন্টারন্যাশনাল রিসোর্সেস ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড-এর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়েন সংইয়িং (Wen Songying) এবং রুইইয়ান ইন্টারন্যাশনাল রিসোর্সেস ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড-এর সাউথইস্ট এশিয়া রিজিয়নের ডিরেক্টর মা শিয়াওলি (Ma Xiaoli)।
চসিকের পক্ষে সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সাদাত তৈয়ব।
সভায় মেয়র শু ঝি বলেন, “উহু সিটি চীনের সবচেয়ে দ্রুত অগ্রসরমান ও শিল্পায়ন-প্রবণ শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষ ৪০–এর একটি হিসেবে বিবেচিত, যেখানে উচ্চপ্রযুক্তি, অটোমোবাইল এবং নির্মাণ শিল্প অত্যন্ত শক্তিশালী। নতুন এনার্জি যান, অটোমোবাইল, জাহাজ নির্মাণ, বন্দর প্রযুক্তি এবং ভারী শিল্প—এসব খাতে আমাদের সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা রয়েছে। চট্টগ্রামকে আমরা বাংলাদেশের একটি কৌশলগত অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে দেখি। বিশেষ করে জাহাজ নির্মাণ শিল্প, সমুদ্রবন্দর সম্প্রসারণ, উৎপাদনমুখী শিল্প এবং পরিবেশবান্ধব অটোমোবাইল কারখানা স্থাপনে এখানে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। উহু সিটির কোম্পানিগুলো চট্টগ্রামে এসব খাতে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ব্যাপারে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করছে।”
তিনি আরও বলেন, “উহু সিটিতে চেরি অটোমোবাইল, বিওয়াইডি এবং একাধিক বিশ্বমানের কোম্পানি রয়েছে, যারা দীর্ঘমেয়াদে বিদেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহী। চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান এবং দক্ষ মানবসম্পদ বিবেচনায় এখানে যৌথ উদ্যোগে অটোমোবাইল অ্যাসেম্বলি প্ল্যান্ট, গবেষণা ও প্রযুক্তি সহযোগিতা, এবং স্মার্ট লজিস্টিক্স অবকাঠামো গড়ে তোলার বাস্তব সুযোগ আমরা দেখতে পাচ্ছি।”
“জাহাজ নির্মাণ শিল্পেও উহু সিটির প্রতিষ্ঠানগুলোর অভিজ্ঞতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। চট্টগ্রামের সম্ভাবনাময় জাহাজ নির্মাণ খাতে আমরা প্রযুক্তি সহায়তা, যৌথ উদ্যোগ এবং দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি নিতে আগ্রহী। একই সঙ্গে বন্দরের মডার্নাইজেশন, কার্গো হ্যান্ডলিং সিস্টেম উন্নয়ন এবং স্মার্ট পোর্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে উহু সিটি সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত।”
তিনি আরও যোগ করেন, “উহু–চট্টগ্রাম সিটির সম্পর্ক গভীর হলে দুই শহরের মধ্যে শিক্ষা, বিনিয়োগ, পর্যটন, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি—এই অংশীদারিত্ব দুই শহরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
জবাবে চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন নগরীর শিল্পখাতের বিকাশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি বন্দর কর্তৃপক্ষও আমদানি-রপ্তানির গতিবৃদ্ধিতে বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। উহু সিটির বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো চট্টগ্রামে বিনিয়োগ করলে উভয় দেশ লাভবান হবে।

























