Dhaka , Wednesday, 15 October 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
চট্টগ্রামে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন চাঁদাবাজির মামলায় বিএনপি নেতার জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় আইনজীবীর উপর হামলার চেষ্টা, সংবাদ সংগ্রহে বাধা তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে রূপগঞ্জে দলীয় জনসভা সদরপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ৭ জেলের কারাদণ্ড। কালিহাতীতে বাক প্রতিবন্ধী কিশোরী ধর্ষণ: অবশেষে গ্রেফতার ধর্ষক ইসমাইল সরাইলে মাসব্যপি টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন হাটহাজারীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ, তিন ফার্মেসীকে জরিমানা। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে মানুষ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের মিনিবার ফুটবল মেগা ফাইনাল অনুষ্ঠিত নোয়াখালীতে বাসে গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আহত ৪ ভোলাকোট ইউনিয়ন শিক্ষক সমিতির কমিটি গঠন মতিন সভাপতি  হারুন সাধারণসম্পাদক   যশোরে ১০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক মাদক কারবারি গ্রেফতার শার্শায় আরোও এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার ঈদগাঁওতে বন্দুকসহ পুলিশের হাতে আটক ১ রূপগঞ্জে জোরপূর্বক ব্যবসায়ীর জমি ঘরে দখলের চেষ্টা কক্সবাজারে টেকসই মৎস্যচাষ উন্নয়নে দিনব্যাপি কর্মশালা অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজে উদ্বোধন হলো JUSC Sports Club গর্জনিয়া–কচ্ছপিয়া লাইন পরিচালনা কমিটি অনুমোদন দিল কক্সবাজার জেলা সিএনজি, অটোরিকশা ও টেম্পো সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন- রেজিষ্ট্রেশন নং-১৪৯১ রামগঞ্জে আলোচিত মা মেয়ে হত্যার সন্দেহভাজন আরেক আসামি গ্রেফতার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ডোর টু ডোর প্রকল্পের মাধ্যমে জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে হবে:- মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সাভার আশুলিয়ায় প্রতারণা মামলায় ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার রামগঞ্জে আলোচিত মা-মেয়ে হত্যাকান্ডে খুনিদের ফাঁসির দাবিতে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন নোয়াখালীতে রাস্তায় প্রকাশ্যে যুবককে গলা কেটে হত্যা নোয়াখালীতে বিএনপি নেতার উদ্যোগে সড়ক সংস্কার ঠাকুরগাঁও হরিপুরে ঘন কুয়াশায় শীতের আগমনী বার্তা নোয়াখালীতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার-১ সরাইল,ব্যাটালিয়ন(২৫বিজিবি) কর্তৃক বিপুল পরিমাণের অবৈধ মালামাল আটক সুন্দরগঞ্জে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে কর্মবিরতি ‘সমন্বিত উদ্যোগ, প্রতিরোধ করি দুর্যোগ’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে হাটহাজারীতে দুর্যোগ প্রশমন দিবস উদযাপন সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু তাহের চৌধুরীর ইন্তেকালঃ বিভিন্ন মহলের শোক নরসিংদীর পলাশে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত

জলাবদ্ধতা নিরসনে সব সেবা সংস্থাকে একসাথে কাজ করতে হবে : মেয়র ডা. শাহাদাত।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 09:00:30 pm, Tuesday, 22 April 2025
  • 157 বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সম্মিলিত কৌশল নির্ধারণে কর্মশালা:- মেয়রের নেতৃত্বে নতুন উদ্যোগের ঘোষণা

ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেছেন, “আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়—এই অঙ্গীকারে আমরা সবাই মিলে একটি নিরাপদ ও সবুজ শহর গড়তে একযোগে কাজ করব।”
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন সেবা সংস্থার সঙ্গে এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, “নগরের নালা ও খালগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও ম্যানহোলের ঢাকনা নেই, কোথাও স্ল্যাব মিসিং—এসব সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে। চসিকের ছয়টি জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী ও আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি ওয়ার্ডে কোথায় কোথায় এই সমস্যাগুলো রয়েছে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
সভায় মেয়র জানান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড, বন্দর কর্তৃপক্ষ, ওয়াসা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, “যদিও কিছু জায়গা সরাসরি কোনো সংস্থার আওতায় পড়ে না, তবুও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেগুলোতে কাজ করতে হবে। যেমন আগ্রাবাদের বক্স কালভার্টে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করেছি কাজ করার জন্য।”
একই সঙ্গে মেয়র ফায়ার সার্ভিস ও সিএমপির কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে সিএমপি যেভাবে অবৈধ অটোরিকশা জব্দ করেছে, তা প্রশংসনীয়। এই অটোরিকশাগুলোই অনেক দুর্ঘটনার কারণ। ফায়ার সার্ভিসও সম্প্রতি দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হয়ে উদ্ধার তৎপরতায় ভূমিকা রেখেছে।”
মেয়র জানান, সাম্প্রতিক এক দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে সিটি কর্পোরেশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চসিক সচিবকে, সদস্য করা হয়েছে প্রধান আইন কর্মকর্তা, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে এবং সদস্য সচিব প্রধান প্রকৌশলীকে। সাত দিনের মধ্যে তারা রিপোর্ট দেবেন।
মেয়র বলেন, “শপথ গ্রহণের পর গত ছয় মাসে নগরীর সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছি। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে ইনশাআল্লাহ সম্মিলিতভাবে কাজ করে জলাবদ্ধতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব এবং চট্টগ্রামবাসীকে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হব। মেয়র আরও বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে চসিক, সিডিএ, বন্দর কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, নেভি ও সেনাবাহিনীসহ সব সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে। বিশেষ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের সীমানার বাইরেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।”
মেয়র বলেন, নগরবাসীর অভিযোগ ও পরামর্শ সহজেই গ্রহণের জন্য ‘আমাদের চট্টগ্রাম’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ অ্যাপে যে কেউ নালা-নর্দমা, ম্যানহোল ঢাকনা, ডাস্টবিন বা খালের সমস্যাসংক্রান্ত ছবি আপলোড করে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। তিনি বলেন, “এই অ্যাপের মাধ্যমে আমরা নাগরিক সেবাকে আরও কার্যকর ও জনবান্ধব করে তুলতে চাই।”
পাহাড় কাটা ও ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, “আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। ইতোমধ্যে পাহাড় কাটা বন্ধে অভিযান শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বর্ষার আগে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করতে হবে।”
তিনি জানান, জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে প্রতিটি ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী ও আঞ্চলিক কর্মকর্তারা স্ল্যাব ও ম্যানহোল ঢাকনার অনুপস্থিতি চিহ্নিত করছেন। এসব স্থানে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
নগরবাসীর সচেতনতাকে জলাবদ্ধতা মোকাবিলার অন্যতম প্রধান উপাদান হিসেবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি ও নালায় পলিথিন ফেলা নগর ব্যবস্থাপনার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন থাকতে হবে। শহরকে নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন রাখতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এটা আমাদের শহর, আমাদের দায়িত্ব। চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও জলাবদ্ধতামুক্ত রাখার এই যাত্রায় সকল নাগরিককে পাশে চাই।”
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার অনিয়ন্ত্রিত চলাচল রোধে কয়েক হাজার রিকশা জব্দ করা হয়েছে। নগর শৃঙ্খলা রক্ষায় এ ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
তিনি জানান, নগরীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে পাওয়ার চায়নার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্ভাব্য অংশীদারত্ব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান ২১টি খাল পুনঃখনন ও সংস্কারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে যে, সিটি কর্পোরেশন অনুমোদন দিলে এবং অর্থায়ন নিশ্চিত করা হলে তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে সরাসরি খাল সংস্কারের কাজ শুরু করতে প্রস্তুত।
তবে মেয়র উল্লেখ করেন, বর্ষাকাল আসন্ন হওয়ায় বর্তমানে খাল সংস্কারের মতো সময়সাপেক্ষ কাজ নয়, বরং জরুরি ভিত্তিতে খাল ও ড্রেনসমূহ পরিষ্কারের কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এটি একটি মাধ্যমিক স্তরের প্রকল্প হিসেবে বর্ষাকালের পরে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন প্রধান লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছি বর্ষাকালের জলাবদ্ধতা মোকাবিলা। এজন্য খাল পরিষ্কার ও ড্রেন ব্যবস্থাপনার কাজ জোরদার করা হয়েছে।”
একইসঙ্গে মেয়র জানান, ময়লাকে সম্পদে রূপান্তরের জন্যও একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। সলিড ওয়েস্ট থেকে বায়োগ্যাস, সার বা জ্বালানিতে রূপান্তরের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে নেদারল্যান্ডস, জাপান, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন এবং সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “আমরা সব দিক বিবেচনা করে এমন প্রতিষ্ঠান বেছে নিচ্ছি যারা দ্রুত কাজ বাস্তবায়নে সক্ষম। সময় দিলে আমরা একটার পর একটা সমস্যা সমাধানে সক্ষম হবো।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে চসিকের কর্মকর্তাবৃন্দ, মেয়রের জলাবদ্ধতা বিষয়ক উপদেষ্টা শাহরিয়ার খালেদসহ সিডিএ, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড, মেট্রোপলিটন পুলিশ, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, বন্দর, পরিবেশ অধিদপ্তর, পানির উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রামে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন

জলাবদ্ধতা নিরসনে সব সেবা সংস্থাকে একসাথে কাজ করতে হবে : মেয়র ডা. শাহাদাত।

আপডেট সময় : 09:00:30 pm, Tuesday, 22 April 2025

ইসমাইল ইমন চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেছেন, “আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়—এই অঙ্গীকারে আমরা সবাই মিলে একটি নিরাপদ ও সবুজ শহর গড়তে একযোগে কাজ করব।”
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন সেবা সংস্থার সঙ্গে এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, “নগরের নালা ও খালগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও ম্যানহোলের ঢাকনা নেই, কোথাও স্ল্যাব মিসিং—এসব সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে। চসিকের ছয়টি জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী ও আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি ওয়ার্ডে কোথায় কোথায় এই সমস্যাগুলো রয়েছে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
সভায় মেয়র জানান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড, বন্দর কর্তৃপক্ষ, ওয়াসা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, “যদিও কিছু জায়গা সরাসরি কোনো সংস্থার আওতায় পড়ে না, তবুও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেগুলোতে কাজ করতে হবে। যেমন আগ্রাবাদের বক্স কালভার্টে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অনুরোধ করেছি কাজ করার জন্য।”
একই সঙ্গে মেয়র ফায়ার সার্ভিস ও সিএমপির কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে সিএমপি যেভাবে অবৈধ অটোরিকশা জব্দ করেছে, তা প্রশংসনীয়। এই অটোরিকশাগুলোই অনেক দুর্ঘটনার কারণ। ফায়ার সার্ভিসও সম্প্রতি দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হয়ে উদ্ধার তৎপরতায় ভূমিকা রেখেছে।”
মেয়র জানান, সাম্প্রতিক এক দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে সিটি কর্পোরেশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চসিক সচিবকে, সদস্য করা হয়েছে প্রধান আইন কর্মকর্তা, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে এবং সদস্য সচিব প্রধান প্রকৌশলীকে। সাত দিনের মধ্যে তারা রিপোর্ট দেবেন।
মেয়র বলেন, “শপথ গ্রহণের পর গত ছয় মাসে নগরীর সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছি। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে ইনশাআল্লাহ সম্মিলিতভাবে কাজ করে জলাবদ্ধতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব এবং চট্টগ্রামবাসীকে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হব। মেয়র আরও বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে চসিক, সিডিএ, বন্দর কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, নেভি ও সেনাবাহিনীসহ সব সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে। বিশেষ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের সীমানার বাইরেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।”
মেয়র বলেন, নগরবাসীর অভিযোগ ও পরামর্শ সহজেই গ্রহণের জন্য ‘আমাদের চট্টগ্রাম’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ অ্যাপে যে কেউ নালা-নর্দমা, ম্যানহোল ঢাকনা, ডাস্টবিন বা খালের সমস্যাসংক্রান্ত ছবি আপলোড করে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। তিনি বলেন, “এই অ্যাপের মাধ্যমে আমরা নাগরিক সেবাকে আরও কার্যকর ও জনবান্ধব করে তুলতে চাই।”
পাহাড় কাটা ও ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, “আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। ইতোমধ্যে পাহাড় কাটা বন্ধে অভিযান শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বর্ষার আগে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করতে হবে।”
তিনি জানান, জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে প্রতিটি ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী ও আঞ্চলিক কর্মকর্তারা স্ল্যাব ও ম্যানহোল ঢাকনার অনুপস্থিতি চিহ্নিত করছেন। এসব স্থানে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
নগরবাসীর সচেতনতাকে জলাবদ্ধতা মোকাবিলার অন্যতম প্রধান উপাদান হিসেবে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “ম্যানহোলের ঢাকনা চুরি ও নালায় পলিথিন ফেলা নগর ব্যবস্থাপনার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন থাকতে হবে। শহরকে নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন রাখতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এটা আমাদের শহর, আমাদের দায়িত্ব। চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও জলাবদ্ধতামুক্ত রাখার এই যাত্রায় সকল নাগরিককে পাশে চাই।”
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার অনিয়ন্ত্রিত চলাচল রোধে কয়েক হাজার রিকশা জব্দ করা হয়েছে। নগর শৃঙ্খলা রক্ষায় এ ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
তিনি জানান, নগরীর বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে পাওয়ার চায়নার মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্ভাব্য অংশীদারত্ব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান ২১টি খাল পুনঃখনন ও সংস্কারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে যে, সিটি কর্পোরেশন অনুমোদন দিলে এবং অর্থায়ন নিশ্চিত করা হলে তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে সরাসরি খাল সংস্কারের কাজ শুরু করতে প্রস্তুত।
তবে মেয়র উল্লেখ করেন, বর্ষাকাল আসন্ন হওয়ায় বর্তমানে খাল সংস্কারের মতো সময়সাপেক্ষ কাজ নয়, বরং জরুরি ভিত্তিতে খাল ও ড্রেনসমূহ পরিষ্কারের কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এটি একটি মাধ্যমিক স্তরের প্রকল্প হিসেবে বর্ষাকালের পরে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন প্রধান লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছি বর্ষাকালের জলাবদ্ধতা মোকাবিলা। এজন্য খাল পরিষ্কার ও ড্রেন ব্যবস্থাপনার কাজ জোরদার করা হয়েছে।”
একইসঙ্গে মেয়র জানান, ময়লাকে সম্পদে রূপান্তরের জন্যও একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। সলিড ওয়েস্ট থেকে বায়োগ্যাস, সার বা জ্বালানিতে রূপান্তরের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে নেদারল্যান্ডস, জাপান, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন এবং সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মেয়র আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “আমরা সব দিক বিবেচনা করে এমন প্রতিষ্ঠান বেছে নিচ্ছি যারা দ্রুত কাজ বাস্তবায়নে সক্ষম। সময় দিলে আমরা একটার পর একটা সমস্যা সমাধানে সক্ষম হবো।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে চসিকের কর্মকর্তাবৃন্দ, মেয়রের জলাবদ্ধতা বিষয়ক উপদেষ্টা শাহরিয়ার খালেদসহ সিডিএ, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড, মেট্রোপলিটন পুলিশ, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা, বন্দর, পরিবেশ অধিদপ্তর, পানির উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।