মো. ইমরান হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার।।
বৈসম্যবিরুধী ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে দেশের বৃহত্তম শিল্পাঞ্চল গাজীপুর টংগী ও আশুলিয়া এলাকায় হঠাৎ করে শ্রমিক অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মালিক পক্ষের অভিযোগ- শ্রমিকরা নিত্যনতুন ইস্যু তৈরী করে বিভিন্ন দাবি আদায়ে মালিক পক্ষকে চাপ সৃষ্টি করছে । শ্রমিকদের অভিযোগ- মালিক পক্ষ সময়মতো বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ও নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর- জয়দেবপুর- কোনাবাড়ী- শ্রীপুর- টঙ্গী ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকার শ্রমিকদের সাথে আলাপকালে জানাযায়- বেশকিছু পোশাক এবং ঔষধ কারখানার শ্রমিকদের নিয়মিত মাসিক বেতন- ওভারটাইম- হাজিরা বোনাস দিচ্ছেনা। এছাড়া ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের চাকুরিতে পুনর্বহাল- চাকুরি স্থায়ীকরণ- ট্রেড ইউনিয়ন সহ অন্যান্য নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এসব নায্য দাবির বিষয়ে শ্রমিকরা দির্ঘদিন যাবত কারখানা কতৃপক্ষের সাথে আলোচনা করতে গিয়ে বরং উল্টো নানা অজুহাতে শ্রমিকদেও ছাঁটাই করা হচ্ছে। শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের কারণে কর্মবিরতি- ঢাকা টাঙ্গাইল ও ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে।
এব্যাপারে মালিক পক্ষ জানান- কিছু কারখানার মালিকদের খামখেয়ালিপনার জন্য শ্রমিকরা বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছে ঠিকই কিন্তু বেশিরভাগ কারখানায় কোন সমস্যা নেই। এসুযোগে শ্রমিকরা নিত্যনতুন ইস্যু যেমন- নারী শ্রমিকদের সমান পুরুষ শ্রমিক নিয়োগ সহ বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবি নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে অসন্তোষ সৃষ্টি করছে। এসব এলাকায় ক্রমাগত বিশৃঙ্খলা- কর্মবিরতি ও ভাংচুরের কারণে একদিকে যেমন উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হচেছ । অপরদিকে অনেক মালিক নিরাপত্তাজনিত কারণে কারখানা সাময়িক বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান- বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একটি পরাজিত অপশক্তির ইন্ধনে বহিরাগতরা শ্রমিক সেজে পরিকল্পিত ভাবে শিল্পখাতকে ধ্বংষ করার অপচেষ্টা করছে। সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে একটি মহল কারখানাগুলোতে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বর্তমানে কারখানাগুলোকে সচল রাখতে গেলে সেনাবাহিনীর অগ্রনী ভূমিকা পালন অত্যাবশ্যক।
এসব বিষয়ে শিল্প ও থানা পুলিশ জানান- কারখানার মালিক ও শ্রমিক পক্ষের দাবি দাওয়া তাদের দ্বি-পক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারে। এখানে শিল্প পুলিশ মধ্যস্থতা করতে পারে। তবে আইন শৃঙ্খলা অবনতি হলে সেটা পুলিশ দেখে। মহাসড়ক অবরোধের ফলে জন দূর্ভোগের সৃষ্টি হলেও পরবর্তিত সময়ে এখন পুলিশ কোন এ্যাকশনে যেতে পারছেনা। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।