Dhaka , Saturday, 1 November 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি’র অভিযানে ১১ লাখ টাকার গরু ও মাদক জব্দ সার পাচার রুখতে তৎপর ১৫ বিজিবি: সীমান্তের ৩ অভিযানে উদ্ধার ২৪৫ বস্তা সার ফরিদপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাইয়ের আসামি র‍্যাব-১০ এর অভিযানে গ্রেফতার। রূপগঞ্জে ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বিপ্লবীর রক্তে রঞ্জিত চট্টগ্রামে লিখিত হয়েছে শোষণ ও বৈষম্য মুক্তির মহাকাব্য: মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন শ্রীপুরে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও আলোচনা সভা কলমের পাশাপাশি কাস্তে হাতে: সংবাদকর্মী মিজানুর রহমানের কৃষিজীবনের নতুন যাত্রা রামু উপজেলা মহিলা দলের মাসিক সভা সম্পন্ন ঘুমধুমে টিভি টাওয়ার রাবার গাছে রোহিঙ্গা যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ বিএনপি ও ধানের শীষ প্রশ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে- রফিকুল ইসলাম রূপগঞ্জে বৃহত্তর হাটাব সমাজকল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে মাদক বিরোধী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল তারেক রহমান যাকে ধানের শীষ প্রতীক দিবেন’ তাকেই বিজয় করতে হবে– খায়রুজ্জামান মধু ব্লাড ক্যানসারে ৪২ বছরেই চিরবিদায় হাইমচর থানার ওসি মহিউদ্দিন সুমন সোনারগাঁয়ে বিএনপির বিশাল জনসভা:মানবিক রাষ্ট্র গঠনে ঐক্যের ডাক তাছিনের চিকিৎসার সমস্ত দায়িত্ব নিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল শার্শার বাগআঁচড়ায় বিএনপির কর্মি সমাবেশ মাদক কারবারিদের গ্রেফতারের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটামে ফতুল্লায় মানববন্ধন — রাস্তা অবরোধ, প্রশাসনের কাছে তীব্র অভিযোগ নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড চালু ১২০০ কেজি অবৈধ সার জব্দ করেছে নগরকান্দা উপজেলা প্রশাসন।ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা।  লাইসেন্স না থাকায় ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা  পাঁচ বছরে ক্লাস না নিয়েই বেতন ভাতা নিচ্ছে ; অনিয়মে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জড়িয়ে থাকার অভিযোগ  আওয়ামীলীগ দেশের গনতন্ত্রকে হত্যা করেছে  : রুহুল কবির রিজভী শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করতে চাই: মনির হোসেন পাইকগাছায় উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত রূপগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী শফিকুল রাজধানী সবুজবাগ থেকে বিদেশি রিভলবারসহ গ্রেফতার দেশের তৃতীয় পায়রা বন্দর সংযোগ সড়ক প্রকল্পে সমন্বহীনতা। উন্নয়ন কাজে স্থবিরতায় হতাশ সচেতন মহল জোরপূর্বক স্ট্যাম্প নেওয়ার অভিযোগে বিতর্ক: পোকখালী ৩নং ওয়ার্ডের জনপ্রিয় মেম্বার সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হাসিনা রেহানা ও তাদের সন্তানরা মিলে ১১ বছরের বাজেট লুটপাট করেছে আবুল খায়ের ভূঁইয়া খুলনায় কার্যকর সাক্ষরতা ও ব্যবহারিক কর্মদক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন রূপগঞ্জে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন

গাজীপুরে আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য মাছের মেলায় জামাই-শ্বশুরের প্রতিযোগিতা

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 09:09:20 pm, Saturday, 15 January 2022
  • 330 বার পড়া হয়েছে

গাজীপুরে আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য মাছের মেলায় জামাই-শ্বশুরের প্রতিযোগিতা

 

মো.ইমরান হোসেন,
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি।।

গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বিনিরাইল গ্রমের আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য প্রতি বছরের মতো এবছর পৌষ মাসের শেষের দিন মাছের মেলা ব্যাপক উৎসাহ -উদ্দীপনার সাথে পালিত হয়েছে। প্রতি বছর পৌষ-সংক্রান্তিতে অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা । মাছের মেলাকে ঘিরে আশে পাশের কয়েক জেলায় শুক্রবার দিনভর চলে আনন্দ-উৎসব। মূলত এটা জামাই মেলা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত | কিন্তু সবাই এটাকে বলে মাছের মেলা। আর এই দিনটিকে ঘিরেই এখানে দিনব্যাপী চলে আনন্দ-উৎসব। এ দিনটির জন্য সারাটি বছর অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয়রা। এই মেলায় আছে একের ভেতর দুই। কারণ এটা মাছের মেলা হলেও, এখানে চলে এলাকার জামাইয়ের মাছসহ সবকিছু বড় কেনার প্রতিযোগীতা। বিনিরাইল এবং এর আশপাশের গ্রামে যারা বিয়ে করেছেন, সে সমস্ত জামাইরা হচ্ছে ওই মেলার মূল ক্রেতা ও দর্শণার্থী |

জানা যায় ,একটা মাছকে ঘিরে শুক্রবার ক্রেতা জামাইদের জটলা লেগে আছে। বিশাল আকৃতির এ মাছের নাম বাঘা আইড়। বিক্রেতা ৪০ কেজি ওজনের এ মাছের দাম হেঁকেছেন ৬৫ হাজার টাকা। ক্রেতাদের মধ্যে স্থানীয় কাপাইশ এলাকার জামাই মোহাম্মদ হোসেন আলী মাছটির দাম সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা বলছেন।,কিন্তু বিক্রেতা আরো বেশি দাম পাবার আশায় মাছটি ছাড়ছেন না। চলছে দর কষাকষি। যত না ক্রেতা তার চেয়ে অনেক বেশি উৎসুক জনতা ভিড় জমিয়েছেন মাছটি দেখার জন্য। পৌষ মাসের শেষ দিন শুক্রবার কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ত্রিমোহনার বিনিরাইল গ্রামে ঐতিহ্যবাহী আড়াইশ বছরের পুরনো মাছের মেলায় দেখা গেছে এই দৃশ্য।

এছাড়া এই মেলাকে ঘিরে এলাকার শ্বশুরদের মধ্যেও চলে এক নীরব প্রতিযোগীতা। আর এই প্রতিযোগীতাটি হচ্ছে কোন জামাই সবচেয়ে বড় মাছটি ক্রয় করে শ্বশুরবাড়ীতে নিয়ে যেতে পারে। আবার শ্বশুররাও চান কোন শ্বশুর সবচেয়ে বড় মাছটি ক্রয় করে জামাই আপ্যায়ন করতে পারে। বিনিরাইলের মাছের মেলা যেন জামাই-শ্বশুরের বড় মাছ কেনার প্রতিযোগীতার মাঠ। গাজীপুর জেলার সর্বত্র টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন কেবল এই মেলা উপলক্ষেই কালীগঞ্জে এসেছেন। এর বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন উপজেলার সর্ববৃহৎ এই মাছের মেলায়। প্রতি বছর পৌষ-সংক্রান্তিতে অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা। এবারের মেলায় প্রায় ৩ শতাধিক মাছ ব্যবসায়ী বাহারি মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় মাছ ছাড়াও আসবাবপত্র, খেলনা, মিষ্টি ইত্যাদির পসরাও বসেছে। মাছের মেলায় সামুদ্রিক চিতল, বাঘাড়, আইড়, বোয়াল, কালী বাউশ, পাবদা, গুলসা, গলদা চিংড়ি, বাইম, কাইকলা, রূপচাঁদা মাছের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে নানা রকমের দেশী মাছও।

বিনিরাইলের মাছের মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য কিশোর আকন্দ জানান, এই মেলাটি প্রথম অনুষ্ঠিত হতো খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে এটি অগ্রহায়ণের ধান কাটা শেষে পৌষ-সংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসবে আয়োজন করা হতো। প্রায় ২৫০ বছর যাবৎ মেলাটি আয়োজন হয়ে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ মেলাটি একটি সর্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে বিনিরাইলের মাছের মেলা এখন ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। এ মেলা কালীগঞ্জের সবচেয়ে বড় মাছের মেলা হিসেবে স্বীকৃত। এলাকার জামাইরা বলেন, শ্বশুরবাড়ীতে মাছ নিয়ে যাওয়া বলে কথা। তাই এলাকার সকল জামাইদের নজর বিনিরাইলের মাছের মেলার বড় মাছটার দিকেই। তাই স্থানীয় বড় মাছ ব্যবসায়ীরা সপ্তাহব্যাপী বড় বড় মাছ সংগ্রহ করে থাকেন। সেই অনুযায়ী মাছের দামও হাঁকানো হয়।

বিনিরাইলের মাছের মেলা নিয়ে কথা হয় মেলা সংলগ্ন জামালপুর ইউনিয়নের কাপাইস গ্রামের জামাই মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, শ্বশুরবাড়ীতে মাছ নিয়ে যাওয়া বলে কথা। তাই এলাকার সকল জামাইদের নজর বিনিরাইলের মাছের মেলার বড় মাছটার দিকেই । তিনি জানান, এবার সাড়ে ১৭ হাজার টাকার চিতল, বোয়াল, আইড়সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনেছেন শশুরবাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা থেকে মেলায় আসা মাছ ব্যবসায়ী বিজয় কুমার দাস জানান, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে এই মেলায় দোকান করেন। বিনিরাইলের পাশেই চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসে তিন দিনব্যাপী মাছের এ মেলা। ইতিহাস ঐতিহ্যের কারণে বিনিরাইলে কেনার চেয়ে দেখতে আসা মানুষের ভীড় এখন বেশী। তাছাড়া স্থানীয় মানুষের সাথে ভালো সম্পর্ক স্থাপন হওয়াতে প্রতি বছর এ মেলায় যোগদেন। এখানে বেচা-কেনাকে মুখ্য মনে করেন না বলে জানান তিনি। এবার মেলায় প্রচুর দেশি রুই, কাতল, বোয়াল, আইড়, বাঘাইর, চিতল, কালবাউশ ও রিটা মাছের সমাগম হয়েছে। টাঙ্গাইল থেকে ঘুরতে আসা মো. আজগর আলী বলেন, ব্যবস্হাপনায় উন্নত ও ব্যাপক প্রচার হলে ঐতিহাসিক মাছের মেলায় জনসমাগম আরো বৃদ্ধি পাবে।

ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি’র অভিযানে ১১ লাখ টাকার গরু ও মাদক জব্দ

গাজীপুরে আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য মাছের মেলায় জামাই-শ্বশুরের প্রতিযোগিতা

আপডেট সময় : 09:09:20 pm, Saturday, 15 January 2022

 

মো.ইমরান হোসেন,
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি।।

গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বিনিরাইল গ্রমের আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য প্রতি বছরের মতো এবছর পৌষ মাসের শেষের দিন মাছের মেলা ব্যাপক উৎসাহ -উদ্দীপনার সাথে পালিত হয়েছে। প্রতি বছর পৌষ-সংক্রান্তিতে অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা । মাছের মেলাকে ঘিরে আশে পাশের কয়েক জেলায় শুক্রবার দিনভর চলে আনন্দ-উৎসব। মূলত এটা জামাই মেলা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত | কিন্তু সবাই এটাকে বলে মাছের মেলা। আর এই দিনটিকে ঘিরেই এখানে দিনব্যাপী চলে আনন্দ-উৎসব। এ দিনটির জন্য সারাটি বছর অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয়রা। এই মেলায় আছে একের ভেতর দুই। কারণ এটা মাছের মেলা হলেও, এখানে চলে এলাকার জামাইয়ের মাছসহ সবকিছু বড় কেনার প্রতিযোগীতা। বিনিরাইল এবং এর আশপাশের গ্রামে যারা বিয়ে করেছেন, সে সমস্ত জামাইরা হচ্ছে ওই মেলার মূল ক্রেতা ও দর্শণার্থী |

জানা যায় ,একটা মাছকে ঘিরে শুক্রবার ক্রেতা জামাইদের জটলা লেগে আছে। বিশাল আকৃতির এ মাছের নাম বাঘা আইড়। বিক্রেতা ৪০ কেজি ওজনের এ মাছের দাম হেঁকেছেন ৬৫ হাজার টাকা। ক্রেতাদের মধ্যে স্থানীয় কাপাইশ এলাকার জামাই মোহাম্মদ হোসেন আলী মাছটির দাম সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা বলছেন।,কিন্তু বিক্রেতা আরো বেশি দাম পাবার আশায় মাছটি ছাড়ছেন না। চলছে দর কষাকষি। যত না ক্রেতা তার চেয়ে অনেক বেশি উৎসুক জনতা ভিড় জমিয়েছেন মাছটি দেখার জন্য। পৌষ মাসের শেষ দিন শুক্রবার কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ত্রিমোহনার বিনিরাইল গ্রামে ঐতিহ্যবাহী আড়াইশ বছরের পুরনো মাছের মেলায় দেখা গেছে এই দৃশ্য।

এছাড়া এই মেলাকে ঘিরে এলাকার শ্বশুরদের মধ্যেও চলে এক নীরব প্রতিযোগীতা। আর এই প্রতিযোগীতাটি হচ্ছে কোন জামাই সবচেয়ে বড় মাছটি ক্রয় করে শ্বশুরবাড়ীতে নিয়ে যেতে পারে। আবার শ্বশুররাও চান কোন শ্বশুর সবচেয়ে বড় মাছটি ক্রয় করে জামাই আপ্যায়ন করতে পারে। বিনিরাইলের মাছের মেলা যেন জামাই-শ্বশুরের বড় মাছ কেনার প্রতিযোগীতার মাঠ। গাজীপুর জেলার সর্বত্র টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন কেবল এই মেলা উপলক্ষেই কালীগঞ্জে এসেছেন। এর বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন উপজেলার সর্ববৃহৎ এই মাছের মেলায়। প্রতি বছর পৌষ-সংক্রান্তিতে অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা। এবারের মেলায় প্রায় ৩ শতাধিক মাছ ব্যবসায়ী বাহারি মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় মাছ ছাড়াও আসবাবপত্র, খেলনা, মিষ্টি ইত্যাদির পসরাও বসেছে। মাছের মেলায় সামুদ্রিক চিতল, বাঘাড়, আইড়, বোয়াল, কালী বাউশ, পাবদা, গুলসা, গলদা চিংড়ি, বাইম, কাইকলা, রূপচাঁদা মাছের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে নানা রকমের দেশী মাছও।

বিনিরাইলের মাছের মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য কিশোর আকন্দ জানান, এই মেলাটি প্রথম অনুষ্ঠিত হতো খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে এটি অগ্রহায়ণের ধান কাটা শেষে পৌষ-সংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসবে আয়োজন করা হতো। প্রায় ২৫০ বছর যাবৎ মেলাটি আয়োজন হয়ে আসছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ মেলাটি একটি সর্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে বিনিরাইলের মাছের মেলা এখন ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। এ মেলা কালীগঞ্জের সবচেয়ে বড় মাছের মেলা হিসেবে স্বীকৃত। এলাকার জামাইরা বলেন, শ্বশুরবাড়ীতে মাছ নিয়ে যাওয়া বলে কথা। তাই এলাকার সকল জামাইদের নজর বিনিরাইলের মাছের মেলার বড় মাছটার দিকেই। তাই স্থানীয় বড় মাছ ব্যবসায়ীরা সপ্তাহব্যাপী বড় বড় মাছ সংগ্রহ করে থাকেন। সেই অনুযায়ী মাছের দামও হাঁকানো হয়।

বিনিরাইলের মাছের মেলা নিয়ে কথা হয় মেলা সংলগ্ন জামালপুর ইউনিয়নের কাপাইস গ্রামের জামাই মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, শ্বশুরবাড়ীতে মাছ নিয়ে যাওয়া বলে কথা। তাই এলাকার সকল জামাইদের নজর বিনিরাইলের মাছের মেলার বড় মাছটার দিকেই । তিনি জানান, এবার সাড়ে ১৭ হাজার টাকার চিতল, বোয়াল, আইড়সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনেছেন শশুরবাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা থেকে মেলায় আসা মাছ ব্যবসায়ী বিজয় কুমার দাস জানান, তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে এই মেলায় দোকান করেন। বিনিরাইলের পাশেই চুপাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসে তিন দিনব্যাপী মাছের এ মেলা। ইতিহাস ঐতিহ্যের কারণে বিনিরাইলে কেনার চেয়ে দেখতে আসা মানুষের ভীড় এখন বেশী। তাছাড়া স্থানীয় মানুষের সাথে ভালো সম্পর্ক স্থাপন হওয়াতে প্রতি বছর এ মেলায় যোগদেন। এখানে বেচা-কেনাকে মুখ্য মনে করেন না বলে জানান তিনি। এবার মেলায় প্রচুর দেশি রুই, কাতল, বোয়াল, আইড়, বাঘাইর, চিতল, কালবাউশ ও রিটা মাছের সমাগম হয়েছে। টাঙ্গাইল থেকে ঘুরতে আসা মো. আজগর আলী বলেন, ব্যবস্হাপনায় উন্নত ও ব্যাপক প্রচার হলে ঐতিহাসিক মাছের মেলায় জনসমাগম আরো বৃদ্ধি পাবে।