হোসাইন রুবেল ভোলা ।।
আগে রিকশা চালাইতাম, হোডেলে কাম করতাম, রাজে জুগালি করতাম। হেয়ার পরে অসুস্থ হইয়া কাজ কাম করতাম পারি না। স্যারেরা ভ্যান দিছে কাঁচা তৈরি তরকারি দিছে, আল্লায় যদি চায় এইডা দিয়াই সংসার চালামু। এমনটাই বলছিলেন ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ড চর সিফলি গ্রামের মোতাহার বেপাড়ি। শুধু মোতাহার বেপাড়ি নয় একই রকম হাসি ফুটেছে ১০ জন কর্মহীন মানুষে মুখে।
ভোলা সদর উপজেলায় করোনা কালিন সময়ে কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পড়া ১০ জনকে আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষে জনপ্রতি একটি করে ভ্যান গাড়ি ও ১২৫ কেজি সবজি বিতরণ করেছে ভোলার কাঞ্চন-ফাতেমা নামের একটি ফাউন্ডেশন।
মঙ্গলবার (০৫ অক্টোবর) সকালে ভোলার ইলিশা সড়কে কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন কার্যালয় থেকে কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন এর সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক বাবু এ সকল বিতরণ করেন।
এসময় সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন এর ১০ জন বেকার কর্মসংস্থানহীন মানুষের মাঝে একটি ভ্যান গাড়ি, ২০ কেজি আলু, ২০ কেজি মিষ্টি কুমরা, ২০ কেজি কচুর ছড়া, ২০ কেজি পেপে, ১০ কেজি লাউ, ১০ কেজি মূলা, ১০ কেজি পেয়াজ, ঢেরশ ৫ কেজি, ৫ কেজি মরিচ, ও ৫ কেজও রশুন বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
এময় সুবিধাভোগী পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ড গুপ্তমুন্সি গ্রামের মোঃ খালেক মিয়া বলেন, আগে ভ্যান ভাড়া লইয়া কাঁচা মালের ব্যবসা করতাম। পুঁজিপাট্টা নাই এহন অসহায় হইয়া পরছি বুড়া মানুষ কেউ কামেও লয়না। হেড়া যা দিছে শুকোর আলহামদুলিল্লাহ।
একই রকম রাজাপুর ইউনিয়ন মিজি বাজার এলকার মোঃ দুলাল বলেন, নদীতে জেলে কাজ করতাম। নদীর পারে বাড়ি থাকায় মেঘনায় বাড়িতা লইয়া গেছে। করতাম ছুডা কাম করোনা আইয়া হেইডাও লইয়া গেলো।পরে স্যারেগো খোজ পাইয়া যোগাযোগ করলে হেরা ভ্যান ও তরকারি দিছে। আশাকরি এইডি বেইচা সংসার চালাইতে পারমু।
এদিকে কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন এর সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক বাবু জানান, আমার চাচা কাঞ্চনমিয়া ও চাচি ফাতেমার নামে এই ফাউন্ডেশন এর নামকরন করা হয়েছে। ২০১৬ সালে ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ভোলায় অসহায় সুবিধাবঞ্চিতদের মুখে হাসি ফোটানো জন্য নানান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আমরা কাঞ্চন-ফাতেমা ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে এর আগেও করোনা কালিন সময়ে বিভিন্ন সহযোগিতা নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম। বর্তমানে করোনা কালিন সময়ে যারা কর্মস্থান হারিয়ে বেকার হয়ে পরেছে এ রকম অসহায় দরিদ্র ১০ টি পরিবারের জন্য ১০ টি ভ্যান ও কাঁচামাল হিসেবে ১২৫ কেজি সবজি দিয়েছি। যাতে এগুলো বিক্রি করে তাদের কর্মসংস্থান হয় এবং তাদের সংসার চালাতে যাতে সুবিধা হয়।