মোঃ মাসুদ রানা মনি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর রামগঞ্জ- সদর-রামগতি ও কমলনগর সহ পাঁচ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬১৭টি সহজ মোট ৬৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৬৫টি- মাধ্যমিক-স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও কলেজের ৮৪টি এবং সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিকের প্রায় ৫১৭টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৬ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
লক্ষ্মীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম চন্দ্র মিত্র জানান- ৮৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৬৫টি মাদ্রাসা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে-ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারন করা যাচ্ছে না বন্যার্তরা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়িতে ফিরে গেলে তখনই প্রকৌশলী ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারন করে আমাদেরকে জানাবেন।
শুক্রবার সকালে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক এবং জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অপরদিকে- গত ২ সেপ্টেম্বর রায়পুর রুস্তম আলী ডিগ্রী কলেজ- লামচরী কারামাতিয়া ফাজিল মাদ্রাসা- লুধুয়া এম এম উচ্চ বিদ্যালয়, মধ্য কেরোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বামনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়- দক্ষিন চরবংশী এলকে এইচ উপকুলী উচ্চ বিদ্যালয়- চরইন্দ্ররিয়া- দক্ষিন সাগর্দি ও দক্ষিন উদমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী বাজার এলাকার তালিমুল কোরআন মাদরাসার জমিসহ ৩টি সেমিপাকা শ্রেণিকক্ষ, অফিস কক্ষ ও শৌচাগার ভেঙে রহমতখালী খালে তলিয়ে যায়। এ সময় নারকেল গাছসহ বিভিন্ন জাতের ১৫টি গাছও তলিয়ে গেছে। মাদ্রাসাটিতে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। মাদ্রাসাটি ভেঙে খালের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
চাঁদখালী তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা মোসাদ্দেকুল হক জানান- জমিসহ প্রতিষ্ঠান খালের স্রোতে তলিয়ে গেছে। এতে আমাদের ২০ লাখ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে। পাঠদান কর্মসূচি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
রায়পুরের শিক্ষা অফিসার মইনুল ইসলাম জানান- ১২১টির মধ্যে ৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে প্রায় ৮৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মত ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা পরিদর্শক মাইনুদ্দিন বলেন- জেলা শিক্ষা অফিস ছাড়া বলতে পারছিনা।
লক্ষ্মীপুর জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক ইব্রাহিম খলিল জানান- লক্ষ্মীপুরে ১৮৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৮৬টি আশ্রয়ণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। মাদ্রাসা ও কলেজ আমাদের অধীনে নয়। কতটি মাদ্রাসা ও কতটি কলেজ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে তা রোববার জানা যাবে।
ইব্রাহিম খলিল আরও জানান- জেলার ৫টি উপজেলা মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৪৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বন্যায় ৬২টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া জেলায় ২১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়- মাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে বন্যায় ৮৪টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান তাদের ক্ষতির চাহিদা প্রেরণ করেছে। তবে আমরা তা এখনো নির্ণয় করতে পারিনি।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল লতিফ মজুমদার জানান- জেলায় ৭৩২টি বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ২০৪টি আশ্রয়ণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। বন্যায় ৫১৩টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় ৬ কোটি টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠানে আশ্রয়ণকেন্দ্র রয়েছে- তন্মধ্যে সবগুলোতে পানি উঠেনি। আবার যেগুলো আশ্রয়ণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়নি সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন অধিকাংশ বিদ্যালয়ই বন্ধ। এর মধ্যে কোনটি পানির কারণে বন্ধ- কোনটি আশ্রয়ণকেন্দ্র থাকায় তা বন্ধ রয়েছে।