Dhaka , Sunday, 16 February 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
ক্ষমা চেয়ে বিএনপি নেতার সংবাদ সম্মেলন শহীদ মোবারক স্পোর্টস টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ মহিষের দইকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য কাজ করতে হবে – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা গণমাধ্যমের দায়িত্ব সরকারের ভুলত্রুটি তুলে ধরা- পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ ১১ জনের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু পাইকগাছায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ  রামগঞ্জে  ২দিন ব্যাপী ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প উদ্বোধন  চট্টগ্রামে বনাঢ্য আয়োজনে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫’র উদ্বোধন রূপগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ আওয়ামী পন্থীদের পূর্ণবাসনের অভিযোগ ববিতে, ভাংচুরকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি উপাচার্যের  নরসিংদীর রায়পুরায় গৃহবধূ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন বাংলাদেশকে বিপজ্জনক বর্জ্যের ভাগাড় হতে দেওয়া যাবে না- পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অপারেশন ডেভিল হান্টেও ধরাছোঁয়ার বাইরে মাদকসম্রাট জসিম বাহিনীর মূলহোতা জসিম রামগঞ্জে জুলাই বিপ্লবে শহীদ ৬ পরিবারকে সম্মাননা ও প্রনোদনা প্রদান নীলফামারীতে ছাত্রদলের ফরম বিতরণ ও কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত গাজীপুরে ৩ ট্রাকের সংঘর্ষে, নিহত ৩ বিশ্বজাকের মঞ্জিল” ওরশে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় বৃদ্ধের মৃত্যূ ছাত্র আন্দোলনে হামলা মামলার আরেক আসামি গ্রেপ্তার পটিয়ায় ঘুনে ধরা রাষ্ট্রকে ঢেলে সাজাতে ৩১দফার বিকল্প নেই কালিয়াকৈরে বোয়ালী বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত  বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদের সিলেটে শীতবস্ত্র বিতরণ চট্টগ্রাম ১৪ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের দায়িত্বশীল সমাবেশ  মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির যৌথ প্রস্তুতি সভা  ভাতিজার চু’রি’কা’ঘা’তে চাচা নি’হ’ত রামগঞ্জে বিষ্ণুপুর তরুন স্পোটিং ক্লাবের শিক্ষক ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান মণিরামপুরে ইসলামী আন্দোলনের কমিটি গঠন, সভাপতি ইবাদুল ইসলাম, সম্পাদক শামছুদ্দিন আজাদী  ‘আনন্দ অ্যাকাডেমি ফর পারফর্মিং আর্টস’-এর উদ্বোধন করলেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আ ফ ম খালিদ হোসেন রচিত ইসলামী বিধিবিধান গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন কাউখালীতে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অপারেশন ডেভিল হান্ট” অভিযানে ১৩ জন গ্রেফতার

‘পুকুরের পাড় ভেঙে ছোট হচ্ছে বসত’

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 07:02:37 pm, Monday, 26 September 2022
  • 124 বার পড়া হয়েছে

‘পুকুরের পাড় ভেঙে ছোট হচ্ছে বসত’

নোয়াখালী প্রতিনিধি।।

নোয়াখালী সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের মুকিমপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০০টি ঘর এবং আন্ডারচর ইউনিয়নের পূর্ব মাইজচরা গ্রামের দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০০টি ঘর জরাজীর্ণ হয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু আশ্রয়ণের ঘরই নয়, পুকুরের চার পাড় ও খালের অংশে ভেঙে বাসিন্দাদের বসবাসের জায়গাও অনেকটা ছোট হয়ে গেছে। ফলে এসব আশ্রয়ণের ৪০০ পরিবারের সদস্যদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।
উপজেলার মুকিমপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০০টি ও পূর্ব মাইজচরার ৫০টি ঘর দীর্ঘ ২২ বছর সংস্কারহীন রয়েছে। অপরদিকে গত ৯ বছর সংস্কারহীন রয়েছে পূর্ব মাইজচরার ১৫০টি ঘর।

এসব আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রতিটি ঘরের টিনগুলো মরিচা ধরে ঝরে পড়ছে। অনেক আগেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে শৌচাগারগুলো। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে না পারা সমাজের নিম্নবিত্ত ও হতদরিদ্র মানুষ তার পরও ছাড়তে পারছে না আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। এখানে থেকে সন্তানদের নিয়ে বৃষ্টির দিনে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছেন তারা। মাঝেমধ্যে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রকল্প পরিদর্শনে এসে আশ্বাস দিলেও উদ্বোধনের পর আর কোনো সংস্কারকাজ এখানে হয়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের। এতে প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারী সহস্রাধিক মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। বর্ষার পানি ঘরে পড়ে তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। ঘর ও শৌচাগার সমস্যার বাহিরে রয়েছে পুকুর ও খাল পাড় ভেঙে বসবাসের জায়গা ছোট হওয়ার বেদনাও। উদ্বোধনের সময় বসবাসের যতটুকু জায়গা ছিল, পাড় ভেঙে এখন তার অর্ধেকে চলে এসেছে।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন, গৃহহীন এবং হতদরিদ্র মানুষের জন্য ১৯৯৯-২০০০ সালে নোয়াখালী সদরের অশ্বদিয়া ইউনিয়নের মুকিমপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২০০টি পরিবার মাথাগোঁজার ঠিকানা পায়। একই বছর সদরের আন্ডারচরের পূর্ব মাইজচরা গ্রামে মাথাগোঁজার ঠাঁই হয় ৫০ পরিবারের। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে আন্ডারচরের পূর্ব মাইজচরা গ্রামে আরো ১৫০টি পরিবারের জন্য আশ্রয়ণের ঘরের ব্যবস্থা করে সরকার। তৎকালীন সময়ের অন-উন্নত এসব এলাকায় নানা সূচকে এখন উন্নয়ন হচ্ছে। পাল্টে যাচ্ছে মানুষের জীবনের গতি ও আয় রোজগার। কিন্তু সুদিন ফিরছে না আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী হতদরিদ্র এসব মানুষের। তারা এখনো আশ্রয়ণের ঝরাজীর্ণ ঘরে জোড়াতালি ও প্লাষ্টিক টাঙ্গিয়ে কোনোরকম পরিবার নিয়ে দিনাতিপাত করছেন। ঘরের বাহিরে গিয়ে যে কিছু একটা করবে, সেই উপায়ও নাই। কারণ দীর্ঘ সময় বৃষ্টির স্রোতে পুকুর ও খালের গর্ভে চলে গেছে বসতের জায়গা।
মুকিমপুর আশ্রয়ণের সভাপতি মো. ইদ্রিস মিয়া বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ঘরে একটি করে পরিবারকে সংস্থাপন করা হয়। তৎকালীন সময়ে পৃথক শৌচাগার ও সুপেয় পানি জন্য টিউবওয়েল বসানো ছিল। কিন্তু কয়েক বছরের মাথায় ঘরের টিনগুলো মরিচা ধরে ঝরে ঝরে পড়তে থাকে। শৌচাগারগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়। পানি না ওঠায় চাপকলগুলোও পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পুকরের চার পাড় ভেঙে বসতের জায়গা ছোট হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও চলাচলের রাস্তাও পুকুরে ভেঙে পড়ে গেছে। জনপ্রতিনিধি ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবাসন প্রকল্প এলাকায় সংস্কারের দাবি জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। এ অবস্থায় নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ঘরগুলো জোড়াতালির সংস্কার করে কোনো রকম দিনাতিপাত করছে বাসিন্দারা। বর্ষার মৌসুমে নিজেদের উদ্যোগে পুকুর ঘাট ও রাস্তায় মাটি ফেলে কোনরকম চলাচলের উপযোগী করা হয়।
পূর্ব মাইজচরা আশ্রয়ণের বাসিন্দা শাহ আলম, নুর জাহান, বিবি কুলসুম বলেন, আমাদের আশ্রয়ণের ঘরগুলোর টিনসব মুইচ্চা (মরিচা) ধরি ঝরি হরছে। আমরা প্লাষ্টিক ও তেরপাল (তাবু) টাঙ্গিয়ে কোনরকম থাকছি। হইরের হাড় (পুকুর পাড়) ও খালের পাশে ভেঙে আমাদের বসবাসের জায়গা ও চলাচলের রাস্তা ছোড (ছোট) অই গেছে। মেলা বার (অনেক বার) অফিসাররা আইছে, হেতারা কইছে ঠিক করি দিবো। কিন্তু অনও ঠিক করে নো। আমরা অসহায় মানুষ, কোনাই যামু, কার কাছে যামু। আঙ্গো এগুলা কি দেখার কেউ নাই।

অশ্বদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বাবলু বলেন, আশ্রয়ণের ঘরগুলো সংস্কার ও পুকুর পাড় ভরাটের জন্য একাধিক বার উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। এই বিষয়টি উপজেলা সমন্বয় সভায়ও উপস্থাপন করেছি। কিন্তু কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। একই কথা বললেন, আন্ডারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিনও। তিনি বলেন, ভুলুয়া খালের পাশের আশ্রয়ণটির বেশিরভাগ জায়গা পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। গাইড ওয়াল নির্মাণ করে মাটি ভরাটের জন্য আমরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব রেখেছি। তা করা না হলে ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পটির ঘরগুলো বিলীন হয়ে যাবে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের জরাজীর্ণ অবস্থার কথা স্বীকার করে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেছি। ঘরগুলো সংস্কারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘরগুলো সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া, জেলা প্রশাসক মহোদয় পুকুর ও খাল পাড় মাটি ভরাটের মাধ্যমে সংস্কারের জন্য২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি পূর্ব মাইজচরার দুটি আশ্রয়ণের দুটি প্রকল্প এবং ২৪ মার্চ মুকিমপুর আশ্রয়ণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। প্রকল্পগুলো অনুমোদন হলে মাটি ভরাটের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

ক্ষমা চেয়ে বিএনপি নেতার সংবাদ সম্মেলন

‘পুকুরের পাড় ভেঙে ছোট হচ্ছে বসত’

আপডেট সময় : 07:02:37 pm, Monday, 26 September 2022

নোয়াখালী প্রতিনিধি।।

নোয়াখালী সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নের মুকিমপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০০টি ঘর এবং আন্ডারচর ইউনিয়নের পূর্ব মাইজচরা গ্রামের দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০০টি ঘর জরাজীর্ণ হয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু আশ্রয়ণের ঘরই নয়, পুকুরের চার পাড় ও খালের অংশে ভেঙে বাসিন্দাদের বসবাসের জায়গাও অনেকটা ছোট হয়ে গেছে। ফলে এসব আশ্রয়ণের ৪০০ পরিবারের সদস্যদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।
উপজেলার মুকিমপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০০টি ও পূর্ব মাইজচরার ৫০টি ঘর দীর্ঘ ২২ বছর সংস্কারহীন রয়েছে। অপরদিকে গত ৯ বছর সংস্কারহীন রয়েছে পূর্ব মাইজচরার ১৫০টি ঘর।

এসব আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রতিটি ঘরের টিনগুলো মরিচা ধরে ঝরে পড়ছে। অনেক আগেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে শৌচাগারগুলো। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে না পারা সমাজের নিম্নবিত্ত ও হতদরিদ্র মানুষ তার পরও ছাড়তে পারছে না আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। এখানে থেকে সন্তানদের নিয়ে বৃষ্টির দিনে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছেন তারা। মাঝেমধ্যে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রকল্প পরিদর্শনে এসে আশ্বাস দিলেও উদ্বোধনের পর আর কোনো সংস্কারকাজ এখানে হয়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের। এতে প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারী সহস্রাধিক মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। বর্ষার পানি ঘরে পড়ে তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। ঘর ও শৌচাগার সমস্যার বাহিরে রয়েছে পুকুর ও খাল পাড় ভেঙে বসবাসের জায়গা ছোট হওয়ার বেদনাও। উদ্বোধনের সময় বসবাসের যতটুকু জায়গা ছিল, পাড় ভেঙে এখন তার অর্ধেকে চলে এসেছে।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভূমিহীন, গৃহহীন এবং হতদরিদ্র মানুষের জন্য ১৯৯৯-২০০০ সালে নোয়াখালী সদরের অশ্বদিয়া ইউনিয়নের মুকিমপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ২০০টি পরিবার মাথাগোঁজার ঠিকানা পায়। একই বছর সদরের আন্ডারচরের পূর্ব মাইজচরা গ্রামে মাথাগোঁজার ঠাঁই হয় ৫০ পরিবারের। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে আন্ডারচরের পূর্ব মাইজচরা গ্রামে আরো ১৫০টি পরিবারের জন্য আশ্রয়ণের ঘরের ব্যবস্থা করে সরকার। তৎকালীন সময়ের অন-উন্নত এসব এলাকায় নানা সূচকে এখন উন্নয়ন হচ্ছে। পাল্টে যাচ্ছে মানুষের জীবনের গতি ও আয় রোজগার। কিন্তু সুদিন ফিরছে না আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী হতদরিদ্র এসব মানুষের। তারা এখনো আশ্রয়ণের ঝরাজীর্ণ ঘরে জোড়াতালি ও প্লাষ্টিক টাঙ্গিয়ে কোনোরকম পরিবার নিয়ে দিনাতিপাত করছেন। ঘরের বাহিরে গিয়ে যে কিছু একটা করবে, সেই উপায়ও নাই। কারণ দীর্ঘ সময় বৃষ্টির স্রোতে পুকুর ও খালের গর্ভে চলে গেছে বসতের জায়গা।
মুকিমপুর আশ্রয়ণের সভাপতি মো. ইদ্রিস মিয়া বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ঘরে একটি করে পরিবারকে সংস্থাপন করা হয়। তৎকালীন সময়ে পৃথক শৌচাগার ও সুপেয় পানি জন্য টিউবওয়েল বসানো ছিল। কিন্তু কয়েক বছরের মাথায় ঘরের টিনগুলো মরিচা ধরে ঝরে ঝরে পড়তে থাকে। শৌচাগারগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় বন্ধ করে দেয়া হয়। পানি না ওঠায় চাপকলগুলোও পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পুকরের চার পাড় ভেঙে বসতের জায়গা ছোট হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও চলাচলের রাস্তাও পুকুরে ভেঙে পড়ে গেছে। জনপ্রতিনিধি ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবাসন প্রকল্প এলাকায় সংস্কারের দাবি জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। এ অবস্থায় নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী ঘরগুলো জোড়াতালির সংস্কার করে কোনো রকম দিনাতিপাত করছে বাসিন্দারা। বর্ষার মৌসুমে নিজেদের উদ্যোগে পুকুর ঘাট ও রাস্তায় মাটি ফেলে কোনরকম চলাচলের উপযোগী করা হয়।
পূর্ব মাইজচরা আশ্রয়ণের বাসিন্দা শাহ আলম, নুর জাহান, বিবি কুলসুম বলেন, আমাদের আশ্রয়ণের ঘরগুলোর টিনসব মুইচ্চা (মরিচা) ধরি ঝরি হরছে। আমরা প্লাষ্টিক ও তেরপাল (তাবু) টাঙ্গিয়ে কোনরকম থাকছি। হইরের হাড় (পুকুর পাড়) ও খালের পাশে ভেঙে আমাদের বসবাসের জায়গা ও চলাচলের রাস্তা ছোড (ছোট) অই গেছে। মেলা বার (অনেক বার) অফিসাররা আইছে, হেতারা কইছে ঠিক করি দিবো। কিন্তু অনও ঠিক করে নো। আমরা অসহায় মানুষ, কোনাই যামু, কার কাছে যামু। আঙ্গো এগুলা কি দেখার কেউ নাই।

অশ্বদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বাবলু বলেন, আশ্রয়ণের ঘরগুলো সংস্কার ও পুকুর পাড় ভরাটের জন্য একাধিক বার উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। এই বিষয়টি উপজেলা সমন্বয় সভায়ও উপস্থাপন করেছি। কিন্তু কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। একই কথা বললেন, আন্ডারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিনও। তিনি বলেন, ভুলুয়া খালের পাশের আশ্রয়ণটির বেশিরভাগ জায়গা পানির স্রোতে ভেঙে গেছে। গাইড ওয়াল নির্মাণ করে মাটি ভরাটের জন্য আমরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব রেখেছি। তা করা না হলে ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পটির ঘরগুলো বিলীন হয়ে যাবে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের জরাজীর্ণ অবস্থার কথা স্বীকার করে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেছি। ঘরগুলো সংস্কারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘরগুলো সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া, জেলা প্রশাসক মহোদয় পুকুর ও খাল পাড় মাটি ভরাটের মাধ্যমে সংস্কারের জন্য২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি পূর্ব মাইজচরার দুটি আশ্রয়ণের দুটি প্রকল্প এবং ২৪ মার্চ মুকিমপুর আশ্রয়ণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন। প্রকল্পগুলো অনুমোদন হলে মাটি ভরাটের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।