
মহিনুল ইসলাম সুজন,নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি।।
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে মোতায়েন করা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর বাংলাদেশি সেনা সদস্য ও নীলফামারীর ডিমলার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের(২৬)দাফন নিজ গ্রামে সম্পন্ন হয়েছে।শনিবার(১৫ অক্টোবর)দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ তিতপাড়ায় তার নিজ গ্রামে সামরিক মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে এই বীর সন্তানের দাফন সম্পন্ন করা হয়।এর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ঢাকা থেকে সেনাবাহিনী প্রধানের পুষ্পস্তবক সম্বলিত জাহাঙ্গীরের মরদেহ নিয়ে একি দিনের সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে ডিমলা রাণী বৃন্দারাণী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পৌঁছালে সেখানে মরদেহ গ্রহন করেন খোলাহাটি ক্যান্টনমেন্টের ক্যাপটেন তানজিদুল ইসলাম তানজিদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর ২৫ সদস্যের একটি দল।সেখান থেকে জাহাঙ্গীরের মরদেহ নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে গেলে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।সেখানে জাহাঙ্গীরকে শেষবারের মতো এক নজর দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান।পরে দক্ষিণ তিতপাড়া(হাজ্বী পাড়া)জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জাহাঙ্গীরের জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।জানাজা নামাজে ইমামতি করেন ধর্মীয় শিক্ষক ইউসুফ আলী।এরপর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।মরদেহ গ্রহনের আগ মুহূর্ত থেকে জানাজা-দাফন সম্পন্ন পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন,নীলফামারী-১(ডোমার-ডিমলা)আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আফতাব উদ্দিন সরকার,উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুল ইসলাম,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন,ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)লাইছুর রহমান,জনপ্রতিনিধি,সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী,ব্যবসায়ী,রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ,সংগঠকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন।জানাজা নামাজের সময় এলাকাবাসী নিহত সৈনিক জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির সামনের সড়কটি জাহাঙ্গীরের নামে নামকরণ করার জোর দাবি জানালে তা করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।নিহত সৈনিক জাহাঙ্গীর ওই গ্রামের লতিফর রহমানের চতুর্থ পুত্র ছিলেন।
প্রসঙ্গত: গত ৪ অক্টোবর মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাকালে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন।তাদের মধ্যে একজন সৈনিক জাহাঙ্গীর আলম। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা সদরের দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের লতিফর রহমানের ছেলে তিনি।পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ।২০১৫ ইং সালের ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। তিনি এক বছর আগে বিয়ে করেছেন ও ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তিরক্ষা মিশনে যান।সেখানে ব্যানব্যাট-৮ এলাকার উইক্যাম্পে ছিলেন তিনি।শান্তিরক্ষা মিশনের দায়িত্ব পালনের সময় গত ৩ অক্টোবর রাতে মাটিতে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে তিনি আহত হন। পরে ৪ অক্টোবর দুপুরের দিকে জাহাঙ্গীর মারা যান।