জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি।।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় নলুয়ার হাওরের আগাম বোরো ফসল রক্ষায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্লোজারে ¯ইচগেট নির্মাণ করা হয়। ইচগেটগুলোর অবস্থান হচ্ছে, একটি জগন্নাথপুর পৌর শহরের আলখানা নদীরমুখ, আরেকটি উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের নলুয়ার হাওরের পশ্চিমপ্রান্ত ভূরাখালি গ্রাম এলাকার ক্লোজার ও অপরটি বেতাউকা গ্রাম এলাকার ক্লোজার।
১৪ মার্চ মঙ্গলবার স্থানীয় কৃষক-জনতাদের মধ্যে অনেকে জানান, প্রথমে এসব ¯ইচগেটের উপকারও পেয়েছেন মানুষ। হেমন্ত মৌসুমে এসব ইচগেট বন্ধ থাকতো। বৈশাখ মৌসুমে নদ-নদীতে অকাল বন্যার পানি আসলে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধে চাপ দিতো। তখন ইচগেট খোলে হাওরে থাকা খাল, বিল ও নদীতে কিছু পানি ছেড়ে দিলে হাওর শঙ্কামুক্ত হয়ে যেতো। তখন জমিতে অল্প পানি লেগে যেতো। পানিতে ধান কাটলেও কৃষকদের মনে আনন্দের কমতি ছিল না। সবার একটাই শান্তনা ছিল, পানিতে ধান কাটলেও হাওর তো রক্ষা হয়েছে। আমাদের কষ্টের ফসল তো গোলায় তুলতে পারছি। এখন সেই পুরনো দিনের চিত্র বদলে গেছে।
বিগত প্রায় একযুগ ধরে সেই ¯øুইচগেটগুলো অচল হয়ে পড়ে আছে হাওরে। গেটের পাকা অংশ থাকলেও ভেতরের লোহার কপাট নেই। কোনটাতে কয়েকটি কপাট থাকলেও অন্যগুলো নেই। কোনটাতে যে কপাট আছে, সেগুলো মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে অচল হয়ে পড়ে আছে। ¯øুইচগেটগুলো সচল না থাকায় এসব গেটের নিচে প্রতি বছর প্রকল্প দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন পিআইসি কমিটির লোক জানান, এ ৩টি গেট অংশ বাঁধের জন্য প্রতি বছর সরকারের কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা অপচয় যাচ্ছে। গেটগুলো সচল হলে অকাল বন্যার কবল থেকে হাওরগুলো অনেকটা শঙ্কামুক্ত থাকতো। সেই সাথে টাকাও সাশ্রয় হতো। তাই হাওরের ঝুঁকি কমাতে জরুরী ভিত্তিতে এসব ইচগেটগুলো মেরামত করে আবারো সচল করতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান, হাওর পারের সর্বস্তরের কৃষক-জনতা। এছাড়া প্রতি বছর হাওরের আগাম বোরো ফসল রক্ষায় মাটির কাঁচা বাঁধ নির্মাণ হলেও ফসল হানির শঙ্কা যেন কৃষকদের পিছু ছাড়ে না। কখন যে নদীতে পানি এসে বাঁধ ভেঙে হাওরের ফসল তলিয়ে যায়। গেটগুলো সচল হলে তো নদীর অতিরিক্ত পানি হাওরে ছেড়ে নিয়ন্ত্রন করা যেতো। এমন নানা দুঃখ, কষ্ট, হতাশা ও আশা-নিরাশার কথা জানালেন এনামুল হক, আছলম উদ্দিন সহ অন্যান্য কৃষকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, বিকল হওয়া ¯ চগেটগুলো আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বরাদ্দ পেলে গেটগুলো মেরামত কাজ করা হবে। তবে কবে হবে, তা আমার জানা নেই