হযরত বেল্লাল,
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি।।
শরতের ছোঁয়ায় কাশফুলের ঝাড়ে ভরে উঠেছে তিস্তার চরাঞ্চল। প্রকৃতির অপরুপ মহিমা দেখার জন্য তিস্তার চরাঞ্চলে এখন ভীর করছে অসংখ্য উৎসুক জনতা। পাশাপাশি চরের কৃষকরা কাশফুলের খড় বিক্রি করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। তিস্তার বালু চরে গজিয়ে উঠা কাশফুলের ঝাড় যেন চরবাসির জন্য আর্শিবাদ । গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তার চরাঞ্চল এখন আবাদি জমিতে পরিনত হয়েছে। গোটা চরাঞ্চল যেন সবুজের সমারহে ছেঁয়ে গেছে। বিশেষ করে উপজেলার তারাপুর, হরিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়ার চরে কাশফুলের ব্যাপক ঝাড় দেখা দিয়েছে। কাশফুলের খড় পানের বরজ ও বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রের ঘর ছাউনি এবং ঝাড়– তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের পাড়াসাদুয়া চরের কৃষক আকবর আলী জানান, তার পাঁচ বিঘা জমিতে কাশফুলের ঝাড় গজিয়ে উঠেছে। আবহাওয়া প্রতিকুলে থাকায় গত দু’বছর কাশফুল হয়নি। তিনি বলেন, যে ভাবে কাশফুলের ঝাড় দেখা দিয়েছে, তাতে করে ৩ লাখ টাকার কাশফুলের খড় বিক্রি করা যাবে। কৃষকরা আশাবাদী চলতি মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাহিরে কাশফুলের খড় রপ্তানি করার যাবে। উপজেলার কঞ্চিবাড়ী ইউনিয়নের কঞ্চিবাড়ী গ্রামের পানের বরজ মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, কাশফুলের (কাশিয়া খড়) খড় দিয়ে পানের বরজের বেড়া ও ছাউনি দেয়া হয়। এতে করে পানের বরজ ঠান্ড থাকে এবং ফলন ভাল হয়। আজ থেকে দশ বছর আগে তিস্তার চরে এবং বিভিন্ন উচু এলাকায় ব্যাপক হারে কাশফুল গজিয়ে উঠেছিল। বর্তমানে কাশফুল নেই বললে চলে। তিনি বলেন, কাশফুলের খড়ের আটির শ’ বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকায়। তারপরও পাওয়া যাচ্ছে না। উপজেলার হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান, তিস্তার চরের কাশফুলের ঝাড় প্রকৃতির নিয়ামত। এটি চাষাবাদ করা লাগে না। এমনিতেই জেগে উঠা চরে গজিয়ে উঠে কাশফুল। চরের অনেক কৃষক বর্তমানে কাশফুলের খড় বিক্রি করে স্বালম্বী হয়ে উঠছে। উপজেলা কৃষি অফিসার রাশিদুল ইসলাম জানান, কৃষিতে তিস্তার চরাঞ্চল এখন সম্ভাবনাময় এলাকায়। তিস্তার বালুচরে এখন নানাবিধ ফসল চাষাবাদ হচ্ছে। সেই সাথে কাশফুলের ঝাড় দেখা দিয়েছে ব্যাপক হারে। উজানের ঢলে নেমে আসা কাশফুরের বীজ চরে পড়ে গজিয়ে উঠে কাশফুলের ঝাড়। বিনা খরচে এখন স্বাবলম্বী চরের কৃষকরা।