
শওকত আলম, কক্সবাজার
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় প্রতারণার স্বীকার হয়ে পরীক্ষা দিতে পারেননি উখিয়ার হলদিয়া পালং আদর্শ বিদ্যাপীটের ১৩ শিক্ষার্থী। পরীক্ষা দিতে না পারায় জেলায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এঘটনায় বৃহস্পতিবার -১০ এপ্রিল- সকালে হলদিয়া পালং আদর্শ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুস কে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় উখিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ উল্লাহ বাদী হয়ে হলদিয়া পালং আদর্শ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুছকে ১নং আসামি করে মোট ৪ জনের নাম উল্লেখ করে উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজসে ১৩ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিকট হইতে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরন বাবদ টাকা গ্রহণ করে, ফরম ফিলাপ না করে, তথ্য গোপন করে, অপরাধ জনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারনার আশ্রয় নিয়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করিতে দেয়নি।
তবে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির দাবী বড়বিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদ্দাম হোসেন এর কাছে প্রতারণার স্বীকার হয়েছে তারা।
বিদ্যালয়ের পরিচালক জহির উদ্দিন ভূঁইয়া জানায়,
আমাদের স্কুলের রেজিস্ট্রেশন না থাকায় অন্য স্কুলের মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করে থাকি তাই চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম যথারীতি উক্ত রুমখাঁ পালং উচ্চ বিদ্যালয় হইতে সম্পন্ন করে।কিন্তু টেস্ট পরীক্ষার পর উখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জনাব খোরশেদ আলমের পরামর্শে তাহার পরিচিত উখিয়া উপজেলাধীন উত্তর বড়বিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব সাদ্দাম হোসেন এর মাধ্যমে ট্রান্সফার রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে উত্তর বড়বিল উচ্চ বিদ্যালয় হইতে চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুরোধ করেন এবং সাদ্দাম হোসেনকে উক্ত বিদ্যালয়ে এনে তার সহিত পরিচয় করিয়ে দেন।তৎমতে তাহাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউনুস সহ সকলের পরামর্শ মতে সাদ্দাম হোসেনকে ১৩ জন পরীক্ষার্থীর ট্রান্সফার রেজিষ্ট্রেশন বাবদ জনপ্রতি দুই হাজার আটশত টাকা হারে ছত্রিশ হাজার চারশত টাকা,শিক্ষা বোর্ডে যাতায়াত খরচ বাবদ দশ হাজার টাকা, ফরম পূরণ বাবদ জনপ্রতি পাঁচ হাজার পাঁচশত টাকা হারে একাত্তর হাজার পাঁচশত টাকা প্রদান করে।পরবর্তীতে ৩ জনের রেজিষ্ট্রেশন ভূল হয়েছে মর্মে পুনরায় টাকা দাবি করিলে আরো আট হাজার টাকা প্রদান করে।আমরা যথারীতি সরল বিশ্বাসে সমস্ত খরচ সাদ্দাম হোসেনকে প্রদান করি।
পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের দিন পরীক্ষা সংক্রান্ত রেজিষ্ট্রেশন কার্ড,প্রবেশপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র সরবরাহ করিবেন মর্মে আশ্বস্ত করেন।কিন্তু তিনি আমাদেরকে যথাসময়ে কাগজপত্র সরবরাহ না করায় এবং পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে আসায় আমরা বার বার তার সহিত যোগাযোগ করে কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করি এবং তিনি আজকাল করে কালক্ষেপণ করিতে থাকে।তিনি সর্বশেষ পরীক্ষার দিন সকালে আমাদের পরীক্ষার যাবতীয় কাগজপত্র সরবরাহ করিবেন মর্মে আশ্বস্ত করিয়া তার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ করিয়া দেয়।উক্ত সাদ্দাম হোসেন আমাদের সরলতার সুযোগে আমাদের প্রতি বিশ্বাস জান্মাইয়া ছলচাতুরী ও প্রতারণামূলকভাবে বর্ণিতমতে আমাদের নিকট হইতে নগদ টাকা গ্রহন করিয়া বোর্ডে এসে কোন প্রকার কার্যক্রম সম্পন্ন না করে ১৩ জন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেওয়া হইতে বঞ্চিত করিয়াছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক সর্বাত্মক চেষ্টা করা সত্ত্বেও উত্তর বড়বিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদ্দাম হোসেনের প্রতারণার কারণে তাদের স্কুলের ১৩ কোমলমতি শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিতে না পারায় তারা মর্মাহত এবং প্রিয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিকট করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থী।