নিজস্ব প্রতিবেদক।।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরার বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর সম্পর্কিত বই দিয়ে জুর পূর্বক টাকা আদায় করা সহ ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কেরানীগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনঞ্জুমান আরার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কিত বই বাধ্যতামূলক কেনার জন্য কিন্ডার গার্ডেনের এক শিক্ষক থেকে জুর পূর্বক টাকা আদায় করে,এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যেক প্রাথকিম বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের শোকজ ও হয়রানী করে টাকা আদায় করা, বিদ্যালয় উন্নয়নের কাজের বরাদ্দকৃত টাকা উন্নয়ন কাজ না করে শিক্ষকদের ম্যানেজ করে টাকা আত্মসাৎ- নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য উর্ধ্বতন অফিসার ও জনপ্রতিনিধিদের উপহার ও আর্থিক লেনদেন করে ম্যানেজ করা,কিন্ডার গার্ডের স্কুল ভিজিট করে এবং নিবন্ধন করতে জেলা দপ্তরে পাঠানোর কথা বলে আর্থিক লেনদেন করা- কিন্তু সে কাজে গড়িমশি করা- এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২য় শ্রেনীর বাচ্চাকে ধর্ষনের অভিযোগ প্রমান সহ পেয়েও টাকা খেয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া এবং ধর্ষন হওয়া মেয়ের মাকে তার পছন্দ মত স্কুলে বদলি করে তার মূখ বন্ধ করা এবং ধর্ষিত শিক্ষকের কাছ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ আদায় করা -বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও তার অফিসের কর্মচারীদের সাথে সব সময় অশালীন ও খারাপ আচরণ করা- তার অধিনস্থ প্রত্যেক স্কুলের জন্য জোরপূর্বক সিলেবাস তৈরি করে বিক্রি করতে বাধ্য করা সহ শিক্ষা অফিসারের অনিয়ম-দুর্নীতি এবং হয়রানির কারণে উপজেলা শিক্ষা অফিস সহ শিক্ষক মহলে ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
কিন্টার গার্ডেন এর প্রধান শিক্ষক বলেন, উনি জুর করে বঙ্গবন্ধুর বই দরিয়ে দিয়ে ৩-৪ হাজার টাকা করে নিতেন এগুলো বাধ্যতামূলক নিতে হবে। অতপর তিনি ঐ বই গুলো দেখিয়ে বলেন দেখেন বই গুলো আমার কােনা কাজে আসে নি আসবেও না শুধু শুধু আমার টাকা গুলো নস্ট করা হয়েছে।
শিক্ষকরা জানান- আমাদের সাথে সব সময় অসৎ আচরন করেন তিনি সাথে ১০ বছর পূর্তিতে আপগ্ৰেড স্কেলের কাজের কথা বলে আমাদের প্রায় ৭৫ জন শিক্ষকের কাছ থেকে ৪১০০ টাকা করে মোট ৩০৭৫০০- তিন লাখ সাত হাজার পাঁচ শত- টাকা অর্থ নিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার।
প্রধান শিক্ষকরা জানান- উনি বিভিন্ন মাধ্যম ও কারণ দেখিয়ে টাকা গিফ্ট চাইতেন শুধু তাই নয় কেউ দিতে না চাইলে তার সাথে খুবই জগণ্য আচরন করতেন ।এক প্রধান শিক্ষক বলেন- উনি আমার কাছে বিদ্যালয়ের জমির খাজনা বাবদ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন কিন্তু আমার প্রতিষ্ঠানের সভাপতি অনুপস্থিত থাকায় ফান্ড থেকে টাকা উত্তলন করতে পারতেছিলাম না তখন তিনি স্কুলের বই ও অন্যান্য জিনিস পত্র বিক্রি করে হলেও টাকা দেওয়ার জন্য বলেন। আমি তাতেও ব্যর্থ্যতা শিকার করে বলি যে এখান থেকেও ৫০ হাজার টাকা দেওয়া সম্ভব না। তখন তিনি রেগে গিয়ে বলেন, শিক্ষকদের নিয়ে বসেন এবং টাকার ব্যবস্থা করেন তখন শিক্ষদের নিয়ে বসি যার স্বক্ষর ও মতামত এখনো আমার কাছে আছে। তখন শিক্ষকগণ বলেন জমির খাজনার বিষয় আমরা জানি না আর আমরা কোনো টাকা পয়সা দিতে পারবো না। উনি কিশের খাজনার টাকা চাইবেন কেন চাচ্ছেন? এর পর থেকে উনি আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছে। এবং এখন পর্যন্ত শুধু ঐ টাকার জন্য ও তার মন মত সব করতে পারি নি বলে উনি সর্বদা আমার সাথে এতটাই খারাপ আচরন করেন যা মূখে আনতে ঘৃণা হয়।
শিক্ষকরা আরো বলেন,উনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন গিফ্ট ও টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে রাখেন।শুধু তাই নয় উনি স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামিলীগ নেতৃবৃন্দের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক আছে বলে তাদের ভয় দেখিয়ে তিনি বিভিন্ন কাজ করাইয়া নেওয়ার চেস্টা করতেন এবং নিজেকে আওয়ামীলীগের সমর্থক দাবী করতেন।যেনো তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ দেওয়ার সাহস না পায়।
শিক্ষকগণ আরো বলেন ,তিনি নিজের মত করে সিলেবাস তৈরি করে জুর পূর্বক প্রত্যেক স্কুলে বাচ্চাদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য করতেন।তারা আরো বলেন,আমরা লিখিত ভাবে জেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ জানিয়েছি কিন্তু এখনো কোনো তদন্ত বা ব্যবস্থা গ্রহন করে নি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী বলেন- উনার সম্পর্কে আমরাও অবগত হয়েছি শুধু তাই নয় আমাদের প্রতিনিধি তার সাথে কথা বলেছে,তারা আরো বলেন,আমাদের প্রতিনিধির সামনেই মোশারফ নামের এক বৃদ্ধ প্রধান শিক্ষকের সাথে খুবই খারাপ আচরন ও ধমকিয়ে কথা বলেন ঐ শিক্ষা কর্মকর্তা এবং স্কুল থেকে ঐ শিক্ষক ৫০ হাজার টাকা পাবেন বললে,কর্মকর্তা বলেন আগের হিসাব আগে ফেলে দিন নতুন হিসাব করুন। হিসাব কিতাব করলে অনেক কিছু বের হয়ে যাবে তাই চুপ থাকেন।
মুটোফোনে ঐ প্রধান শিক্ষক মোশারফ বলেন,আমার সাথে যা করেছে আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রেখেছি আল্লাহ বিচার করবে,আর আমি কিছু বললে আমার পেনশন নিয়ে ঝামেলা করবে। আমার চাকরির সময় থাকা সত্ত্বেও আমাকে অবসরে পাঠিয়েছে বলে সে কান্নায় বেঙ্গে পরেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমার আরা বলেন, আমার বিরুদ্ধে শিক্ষকরা যেসব অভিযোগ করেছেন তার সবগুলোই মিথ্যা। তিনি আরো বলেন আমার কথা শুনে বুঝতেছেন আমি এখনো কত স্টং ভাবে কথা বলতেছি মানে আমি অপরাধি হলে কি এত স্টংলি কথা বলতাম? আমি কোন প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত নই বরং আমি এখানে আসার পর সব দুর্নীতি মুক্ত করেছি।
কেরানীগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনঞ্জুমান আরার বিরুদ্ধে তার আগের কর্মস্থল মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় ঘুস বানিজ্যের বিরুদ্ধে বিক্রমপুর টঙ্গীবাড়ী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছিলো শিক্ষকবৃন্দ। আমরা মুন্সিগঞ্জ ২৪.কম পোটাল এ বিষয়টিও জানতে পারি ।
ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন- কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অনিয়মের বিষয়টি আমি কিছুই জানি না। তবে লিখিতভাবেও আমাকে এখনো কেউ জানায় নি।