Dhaka , Thursday, 3 July 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
দুর্গাপুর মটরযান ক’র্মচা’রী শ্র’মিক ইউনিয়ন নি’র্বাচ’নে সাধারণ সম্পাদক পদে শ্রমিকদের পছন্দের প্রার্থী আলিউল আজিম সাবেক মেয়র মাহবুব খান ও তার ছেলে সিয়ামের ৩২৯ কোটি টাকা আ’ত্মসা’ৎ, দেশ ত্যা’গে নি’ষেধা’জ্ঞা রূপগঞ্জে ট্রা’ক চা’পা’য় অ’জ্ঞা’তনা’মা ব্যক্তির মৃ’ত্যু হাটহাজারীতে কৃষক সমা’বে’শ ন্য’য্য মূল্যে সা’র,বী’জ,কী’টনা’শক ও বিনা সু’দে ঋ’নে’র জো’র দা’বি হাসিনাকে ভারত থেকে ধ’রে এনে বি’চার করতে হবে— নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী অ’গ্নিকা’ণ্ডে পু’ড়ে যায় বাড়িসহ নগদ ৫ লক্ষ টাকা এবং প’শুপা’খি  রামগঞ্জে ই’য়া’বা’স’হ যুবদল ক’র্মী আ’টক লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং কর্ণফুলী এলিট’র নতুন কমিটি গঠন কাজল প্রেসিডেন্ট ও উজ্জল সেক্রেটারী কউকের নী’রবতা’য় কক্সবাজার হোটেল জোনে প্র’ভাবশা’লী সি’ন্ডিকে’টের অ’বৈ’ধ ব’হুত’ল নি’র্মা’ণ জো’রাল! নরসিংদী প্রকল্প জা’লিয়া’তির ৫২ লাখ টা’কা উ’দ্ধা’র, ২ ক’র্মচা’রী গ্রে’প্তার হালিশহরে কোটি টাকার ম’দ উ’দ্ধা’র, কিন্তু চো’রাচা’লানী রয়ে গেছে ব’হাল ত’বিয়’তে আগামী ৬ মাসের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় বাংলাদেশ নৌ’বাহি’নীকে সু’পারি’শ করেছে সরকার নৌ’পরি’বহন উপদেষ্ট রূপগঞ্জে প্রে’মিকা ও স্বা’মীর ছু’রিকা’ঘা’তে প্রে’মিক নি’হত গাকৃবিতে উচ্চফলনশীল অধিক লবণ সহিষ্ণু গমের নতুন জা’ত ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন    রাজাপুরে সরকারি ৫টি গাছ বি’ক্রির অ’ভিযো’গ স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তার বি’রু’দ্ধে নোয়াখালীতে ক’রো’নায় বৃ’দ্ধে’র মৃ’ত্যু নতুন অর্থবছরের প্রথমদিনেই ব’ন্দর জে’টিতে চার বিদেশি জাহাজ নোয়াখালীতে সা’পের কা’ম’ড়ে শি’শু’র মৃ’ত্যু সিলেট এমএজি ওসমানী মে’ডিকে’ল কলেজ ও হা’সপাতা’লে শি’শু বিভাগে বিশেষায়িত ক্লি’নিক চালু লালমনিরহাটে বিভিন্ন মা’মলা’র উনিশ আ’সা’মি গ্রে’প্তার  লালমনিরহাটের হ’ত্যা মা’মলা’র দুই আ’সামী’কে বগুড়া থেকে গ্রে’প্তার করেছে র‍্যাব মফস্বল সাংবাদিকতায় অনন্য অবদান সাংবাদিক নোমানীকে বার্তা প্রবাহ সম্মাননা কালিয়াকৈরে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ১০ হাজার গাছের চা’রা বিত’রণ শৌলজালিয়ায় আও’য়ামী লী’গ নে’তা চেয়ারম্যান রিপন ও প্যানেল চেয়ারম্যানকে মা’রধ’র নেত্রকোণার দুর্গাপুরে ক’মরে’ড অনিমা সিং’হে’র প্র’য়াণ দিবস উপলক্ষে স্মর’ন স’ভা পদ্মা সেতু দক্ষিণে প্রায় দেড় লাখ টাকার গাঁ’জাস’হ না’রী ও পু’রুষ আ’টক আদিতমারীতে পানিতে ডু’বে ১৮ মাস বয়সী শি’শুর মৃ’ত্যু  র‍্যাবের হাতে আ’ন্তঃজে’লা ডা’কা’ত দলের স’র্দার গ্রে’প্তার সীমান্ত এলাকায় ১৫ বিজিবির অ’ভিযা’নে বি’পুল প’রিমা’ণ অ্যা’ন্ড্রয়ে’ড মোবাইল ফোনের ডি’সপ্লে উদ্ধা’র ডাক বিভাগের কো’ষাগা’র ব্য’বস্থা’প’না ডিজিটাল রূ’পা’ন্তরে’র উদ্বোধন

বিল্ডিং কোড না মেনে গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন নোয়াখালীতে বন্দোবস্তের পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখল।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 12:22:30 pm, Thursday, 17 October 2024
  • 73 বার পড়া হয়েছে

বিল্ডিং কোড না মেনে গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন নোয়াখালীতে বন্দোবস্তের পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখল।।

নোয়াখালী প্রতিনিধি।।

  

  
চান্দিনা ভিটি বন্দোবস্ত নিয়ে দোকানঘর নির্মাণ- পরবর্তীতে বন্দোবস্তের চার থেকে পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বিল্ডিং কোড না মেনেই গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন। এভাবেই বেহাত হয়ে যাচ্ছে গণপূর্ত বিভাগের সরকারি হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি। প্রশাসনের নাকের ডোগায় এসব অবৈধ দখল কর্মযজ্ঞ চললেও আইনি কোন বেগ পেতে হচ্ছে না দখলদারদের। সরকারি জায়গার জলাশয়- খাল ও ড্রেন দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ এসব স্থাপনার কারণে শহরজুড়ে তৈরী হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা আকরাম হোসেন- সাংবাদিক এমবি আলম- মাহবুবুর রহমান টিপুসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন খোকন। নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশে গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে ৬৫ ফুট সরকারি ভূমি চান্দিনা ভিটি হিসেবে বন্দোবস্ত নিয়ে গড়ে তোলেন বিশাল সেন্টার নামের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সালে নোয়াখালী চার লেন সড়ক বাস্তবায়নের জন্য তাঁর বন্দোবস্তকৃত ওই ৬৫ ফুট চান্দিনা ভিটি থেকে ২৪ ফুট ভূমি অধিগ্রহন করে নেয় সরকার। এজন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন খোকনকে ৮৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়েও তাঁর বন্দোবস্তকৃত ৪১ ফুট জায়গার বাহিরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের চত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠানের পিছনের অংশের ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ ফুট খালি সরকারি খাস জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নোয়াখালী পৌরসভার বিল্ডিং কোড না মেনেই গড়ে তোলেন বহুতল ভবন। তাদের মতে- এই যেন এক রামরাজত্ব!

স্থানীয় এসব ব্যক্তি আরো বলেন- শুধু সাহাব উদ্দিন খোকনই নয়- জেলা শহরের সোনালী ব্যাংকের দক্ষিণ পাশ থেকে বক্শি মিজির পোল পর্যন্ত প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশে ৬৫ ফুট সরকারি ভূমি চান্দিনা ভিটি বন্দোবস্ত নিয়ে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে অবৈধভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ ফুট সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তুলেন অবৈধ স্থাপনা। কেউ কেউ সরকারি খাল, ড্রেন ও কালভার্টের মুখ দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করে ফেলেছেন। এসব বহুতল ভবন নির্মাণে কেউই পৌরসভার বিল্ডিং কোড বা প্ল্যান অনুমোদন নেননি। সরকারি জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় জেলা শহরে এবার বন্যা পরবর্তী  দেখা দিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণের কারণে শহরের সৌন্দর্য নষ্টসসহ দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা।

শহরের বিশাল সেন্টারের জায়গার বন্দোবস্তের পরিমাণ, বাড়তি জায়গা দখলের বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানের মালিক সাহাব উদ্দিন খোকনের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে তার বক্তব্য জানতে হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠালোও তিনি কোন বক্তব্য দেননি।  

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে বিভিন্ন সময় সভা-সেমিনার ও প্রশাসনের কাছে জোর আবেদন-নিবেদন করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। প্রাকৃতিক বড় ধরনের দুর্যোগ অথবা জনসাধারণের জোর প্রতিবাদে ইতিপূর্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দু-একটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও বছরের পর বছর প্রভাবশালীদের চত্রছায়ায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনা উচ্ছেদে রহস্যজনক ভাবে কোন কার্যক্রম পরিচালনা নজরে আসেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কর্তব্যক্তি ও প্রভাবশালীদের মোটা অংকের বিনিময়ে ম্যানেজ করে সরকারের কোটি কোটি টাকার এসব সম্পত্তি দখলে নিয়েছে প্রভাবশালী দখলদাররা জেলা শহরে বন্যা ও জলাবদ্ধতার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির তৈরী হয়। মানবসৃষ্ট এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান বলেন- গত ১৫-২০ বছরে শহরের বেশিরভাগ সরকারি জায়গা- জলাশয় ও খালগুলো দখল করে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। যার কারণে এখানে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সরকারি এসব জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জলাশয় উন্মুক্ত ও খালগুলোর পানির গতিপথ সচল করার এখন সময় এসেছে। আশা করছি  বর্তমান প্রশাসন এব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করে নোয়াখালী শহরের সৌন্দর্য রক্ষা এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে ভূমিকা রাখবে।

ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্ল্যান পাসের বিষয়ে নোয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সুজিত বড়ুয়া বলেন- পৌর এলাকায় যেহেতু মানুষের বসবাসের গণত্- রয়েছে- সেই ক্ষেত্রে এখানে প্ল্যান পাস ছাড়া প্রত্যেকটি বিল্ডিংই ঝুঁকিপূর্ণ। জেলা শহরের প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশের চান্দিনা ভিটিতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্ল্যান অনুমোদন দিতে গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে আমাদেরকে চিঠি নিয়ে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া ভবন নির্মাণের সময় ভিটির মালিকরাও আমাদের সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি।

গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান বলেন, শহরের সোনালী ব্যাংক থেকে বকস্ মিজির পোল পর্যন্ত যে চান্দিনা ভিটি হিসেবে ৬৫ ফুট বন্দোবস্তের কথা বলা হচ্ছে সেগুলোর কাগজপত্রও সঠিকভাবে নেই। তারমধ্যে নোয়াখালী ফোরলেন সড়ক বাস্তবায়নের জন্য ব্যবসায়ীদের দখলকৃত জায়গা থেকে ২৪ ফুট জায়গা অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণ দিয়ে অধিগ্রহন করা হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে অনেকেই তাদের দোকানের পিছনের অংশে অনেক জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে।

সরকারি জায়গা থেকে অবৈধ এসব স্থাপনা কেন উচ্ছেদ করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন- আমাদের কোন ম্যাজিস্ট্রিসি পাওয়ার নেই। জেলা প্রশাসন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করলে আমরা অভিযান করতে পারি। কবে নাগাদ এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে এমন প্রশ্নে মো. কামরুল হাসান বলেন- আমরা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে জেলা প্রশাসন বরাবর চিঠি লিখবো। জেলা প্রশাসন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করলেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
জেলা প্রশাসক খন্দাকার  ইসতিয়াক আহমেদ বলেন- সরকারি জায়গা ও খাল দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। শীঘ্রই শহরের প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে সরকারি জায়গা উদ্ধার করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

দুর্গাপুর মটরযান ক’র্মচা’রী শ্র’মিক ইউনিয়ন নি’র্বাচ’নে সাধারণ সম্পাদক পদে শ্রমিকদের পছন্দের প্রার্থী আলিউল আজিম

বিল্ডিং কোড না মেনে গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন নোয়াখালীতে বন্দোবস্তের পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখল।।

আপডেট সময় : 12:22:30 pm, Thursday, 17 October 2024

নোয়াখালী প্রতিনিধি।।

  

  
চান্দিনা ভিটি বন্দোবস্ত নিয়ে দোকানঘর নির্মাণ- পরবর্তীতে বন্দোবস্তের চার থেকে পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বিল্ডিং কোড না মেনেই গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন। এভাবেই বেহাত হয়ে যাচ্ছে গণপূর্ত বিভাগের সরকারি হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি। প্রশাসনের নাকের ডোগায় এসব অবৈধ দখল কর্মযজ্ঞ চললেও আইনি কোন বেগ পেতে হচ্ছে না দখলদারদের। সরকারি জায়গার জলাশয়- খাল ও ড্রেন দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ এসব স্থাপনার কারণে শহরজুড়ে তৈরী হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা আকরাম হোসেন- সাংবাদিক এমবি আলম- মাহবুবুর রহমান টিপুসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন খোকন। নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশে গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে ৬৫ ফুট সরকারি ভূমি চান্দিনা ভিটি হিসেবে বন্দোবস্ত নিয়ে গড়ে তোলেন বিশাল সেন্টার নামের একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সালে নোয়াখালী চার লেন সড়ক বাস্তবায়নের জন্য তাঁর বন্দোবস্তকৃত ওই ৬৫ ফুট চান্দিনা ভিটি থেকে ২৪ ফুট ভূমি অধিগ্রহন করে নেয় সরকার। এজন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিন খোকনকে ৮৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ নিয়েও তাঁর বন্দোবস্তকৃত ৪১ ফুট জায়গার বাহিরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের চত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠানের পিছনের অংশের ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ ফুট খালি সরকারি খাস জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নোয়াখালী পৌরসভার বিল্ডিং কোড না মেনেই গড়ে তোলেন বহুতল ভবন। তাদের মতে- এই যেন এক রামরাজত্ব!

স্থানীয় এসব ব্যক্তি আরো বলেন- শুধু সাহাব উদ্দিন খোকনই নয়- জেলা শহরের সোনালী ব্যাংকের দক্ষিণ পাশ থেকে বক্শি মিজির পোল পর্যন্ত প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশে ৬৫ ফুট সরকারি ভূমি চান্দিনা ভিটি বন্দোবস্ত নিয়ে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে অবৈধভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ ফুট সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে তুলেন অবৈধ স্থাপনা। কেউ কেউ সরকারি খাল, ড্রেন ও কালভার্টের মুখ দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করে ফেলেছেন। এসব বহুতল ভবন নির্মাণে কেউই পৌরসভার বিল্ডিং কোড বা প্ল্যান অনুমোদন নেননি। সরকারি জায়গা দখল হয়ে যাওয়ায় জেলা শহরে এবার বন্যা পরবর্তী  দেখা দিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণের কারণে শহরের সৌন্দর্য নষ্টসসহ দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা।

শহরের বিশাল সেন্টারের জায়গার বন্দোবস্তের পরিমাণ, বাড়তি জায়গা দখলের বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানের মালিক সাহাব উদ্দিন খোকনের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে তার বক্তব্য জানতে হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠালোও তিনি কোন বক্তব্য দেননি।  

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে বিভিন্ন সময় সভা-সেমিনার ও প্রশাসনের কাছে জোর আবেদন-নিবেদন করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। প্রাকৃতিক বড় ধরনের দুর্যোগ অথবা জনসাধারণের জোর প্রতিবাদে ইতিপূর্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দু-একটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও বছরের পর বছর প্রভাবশালীদের চত্রছায়ায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনা উচ্ছেদে রহস্যজনক ভাবে কোন কার্যক্রম পরিচালনা নজরে আসেনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কর্তব্যক্তি ও প্রভাবশালীদের মোটা অংকের বিনিময়ে ম্যানেজ করে সরকারের কোটি কোটি টাকার এসব সম্পত্তি দখলে নিয়েছে প্রভাবশালী দখলদাররা জেলা শহরে বন্যা ও জলাবদ্ধতার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির তৈরী হয়। মানবসৃষ্ট এসব সমস্যা সমাধানে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান বলেন- গত ১৫-২০ বছরে শহরের বেশিরভাগ সরকারি জায়গা- জলাশয় ও খালগুলো দখল করে নিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। যার কারণে এখানে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সরকারি এসব জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জলাশয় উন্মুক্ত ও খালগুলোর পানির গতিপথ সচল করার এখন সময় এসেছে। আশা করছি  বর্তমান প্রশাসন এব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করে নোয়াখালী শহরের সৌন্দর্য রক্ষা এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে ভূমিকা রাখবে।

ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্ল্যান পাসের বিষয়ে নোয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সুজিত বড়ুয়া বলেন- পৌর এলাকায় যেহেতু মানুষের বসবাসের গণত্- রয়েছে- সেই ক্ষেত্রে এখানে প্ল্যান পাস ছাড়া প্রত্যেকটি বিল্ডিংই ঝুঁকিপূর্ণ। জেলা শহরের প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশের চান্দিনা ভিটিতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্ল্যান অনুমোদন দিতে গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে আমাদেরকে চিঠি নিয়ে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া ভবন নির্মাণের সময় ভিটির মালিকরাও আমাদের সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি।

গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল হাসান বলেন, শহরের সোনালী ব্যাংক থেকে বকস্ মিজির পোল পর্যন্ত যে চান্দিনা ভিটি হিসেবে ৬৫ ফুট বন্দোবস্তের কথা বলা হচ্ছে সেগুলোর কাগজপত্রও সঠিকভাবে নেই। তারমধ্যে নোয়াখালী ফোরলেন সড়ক বাস্তবায়নের জন্য ব্যবসায়ীদের দখলকৃত জায়গা থেকে ২৪ ফুট জায়গা অবকাঠামোর ক্ষতিপূরণ দিয়ে অধিগ্রহন করা হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে অনেকেই তাদের দোকানের পিছনের অংশে অনেক জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছে।

সরকারি জায়গা থেকে অবৈধ এসব স্থাপনা কেন উচ্ছেদ করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন- আমাদের কোন ম্যাজিস্ট্রিসি পাওয়ার নেই। জেলা প্রশাসন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করলে আমরা অভিযান করতে পারি। কবে নাগাদ এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে এমন প্রশ্নে মো. কামরুল হাসান বলেন- আমরা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে জেলা প্রশাসন বরাবর চিঠি লিখবো। জেলা প্রশাসন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করলেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
জেলা প্রশাসক খন্দাকার  ইসতিয়াক আহমেদ বলেন- সরকারি জায়গা ও খাল দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। শীঘ্রই শহরের প্রধান সড়কের পশ্চিম পাশের অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করে সরকারি জায়গা উদ্ধার করা হবে।