Dhaka , Monday, 11 August 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের আলোচনা সভায় ডা. শাহাদাত হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনের নিবন্ধন বাতিল ও আয়ান শর্মার গ্রেপ্তার দাবি সনাতন সমাজ সহ চট্টলা বাসীর ডিজিটাল যুগে গ্রাহক হয়রানি বনাম আন্তরিকতা: দুটি ভিন্ন অভিজ্ঞতা সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে নেত্রকোণার দুর্গাপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত সাতকানিয়ায় সড়ক আইন লঙ্ঘনে মোবাইল কোর্টের অভিযান: জরিমানা আদায় জুলাই শহীদ সড়ক” নামকরণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি অনুষ্ঠিত উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মেধা-মননে-শৃঙ্খলা বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার শপথ নিতে হবে ; এস এম সাহাব উদ্দিন সাংবাদিক তুহিনের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন সাধারণ সম্পাদক হলেন মির্জাপুরের জিসান; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম হল নেত্রকোণার দুর্গাপুরে সুসং সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠিত সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সিআরএ’র প্রতিবাদ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হাজী আব্দুস সাত্তার স্মৃতি সংসদ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন  উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চল জামায়াতে ইসলামীর রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত  নিলক্ষা ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয়েছে সিরাত প্রতিযোগীতা একই পরিবারের ৭জনের মৃত্যু, চালকের বিরুদ্ধে মামলা  দরপুরে সাংবাদিক তুহীন হত্যার বিচারের দাবীতে মানববন্ধন  আটঘরিয়ায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন টেকনাফে ২০০ কেজি সামুদ্রিক মাছসহ ১৭ জেলে আটক, ২ লাখ টাকা জরিমানা  নড়াইলে বাংলাদেশ তায়কোয়ানডো ফেডারেশন অনুমোদিত ক্লাবের যাত্রা শুরু রূপগঞ্জে সিএনজি চালক থেকে কোটিপতি: মাদক, জমি দখল ও নারী কেলেঙ্কারিতে আলোচিত মোতালিব র‌্যাব-১ এর হাতে গ্রেপ্তার উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মেধা-মননে-শৃঙ্খলা বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার শপথ নিতে হবে ; এস এম সাহাব উদ্দিন আওয়ামীলীগ কুকর্মের জন্য ইতিহাসের আস্তকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত – ড. মইন খান পবিপ্রবিতে ৮২ শতাংশ পদ নিয়েও বিএনপিপন্থি শিক্ষকের জামাতিকরণ অভিযোগ বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি রামগঞ্জ  উপজেলা শাখার অভিষেক ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত  গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার দায় স্বীকার করেছেন  স্বাধীন অ্যাডিশনাল ডিআইজি   মহোদয় কর্তৃক গাজীপুর জেলার বিভিন্ন ইউনিট  পরিদর্শন  রূপগঞ্জে ডাকাতির চেষ্টাকালে দুই যুবক গ্রেফতার উত্তাল যমুনার বুকে নৌভ্রমণের মাধ্যমে বলাকা সাহিত্য চর্চা পরিষদের সাহিত্য আড্ডা নেত্রকোণার দুর্গাপুরে সুসং সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠিত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ফুটপাত উচ্ছেদ অভিযান করেন হাইওয়ে পুলিশ।

দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ ইলিশ যাচ্ছে বগুড়া ও রাজশাহী- ভারতে পাচারের আশঙ্কা।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 12:10:15 pm, Tuesday, 10 September 2024
  • 151 বার পড়া হয়েছে

দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ ইলিশ যাচ্ছে বগুড়া ও রাজশাহী- ভারতে পাচারের আশঙ্কা।।

আরিফ আহমেদ
বিশেষ প্রতিবেদক।।
   
   
ভারতে রপ্তানী বন্ধ হওয়ার পরও ইলিশ এখনো দরিদ্র মানুষের নাগালের বাইরে। তবে ঝাটকা পাওয়া যাচ্ছে ৫০০-৪৫০ টাকা দরে। সংবাদ মাধ্যমের প্রচারণার কারণে গত দু’দিন ধরে কিছু ইলিশ বাজারে এলেও তার আকার খুবই ছোট। দু-চারটে বড় বা কেজি ওজনের ইলিশ এলেও সেগুলোর দাম চড়া জানালেন ক্রেতারা। ক্রেতাদের দাবি- বরিশালের বাজারে  ইলিশের আকার আকৃতি বলে দিচ্ছে এগুলো বাছাইকৃত ফেলে দেয়া মাছ। যা এলসি হয়না কখনো।  আর জেলেদের দাবি- ডিজেল খরচ বাচাঁতে তারা এখন আর গভীর সমুদ্রে যান না। মাছ যা পান তা পর্যাপ্ত নয়। কেউ কেউ অবশ্য বললেন- দেশের চাহিদা অনুযায়ী মাছের সংকট থাকলেও এখনো কোনো না কোনোভাবে ভারতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ইলিশ। তা না হলে উত্তরাঞ্চলে এতো মাছ কেন যাচ্ছে ক্রেতাদের দাবী- গতকালও ভারত থেকে ডিম এসেছে বাংলাদেশে। তাই বিনিময়ে ইলিশ দিচ্ছে না তার কি নিশ্চয়তা আছে-
যদিও মাছ ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের দাবী- সরাসরি কোনো ইলিশ ভারতে যাচ্ছে না এখন আর। পরিবেশগত কারণে সাগর ও নদীতে ইলিশ কম ধরা পরছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। তবে  আড়ৎদার ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা স্বীকার করেন- তাদের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বগুড়া ও রাজশাহী অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। এদিকে  আমাদের উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি জানালেন- সেখানের বাজারেও ইলিশ নেই। যা আছে দাম খুব চড়া।
সবমিলিয়ে ইলিশ নিয়ে বাজারে ও চা আড্ডায় আলোচনার ঝর বইছে দেশের আনাচকানাচে। সাধারণ মানুষের পাতে ইলিশ পরেনি গত ১৫টি বছর। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে পাওয়া নতুন বাংলাদেশেও কি জাতীয় মাছ ইলিশ বঞ্চিত থাকবে নিম্ন আয়ের মানুষেরা- এসময় ভারত থেকে ডিম আমদানি নিয়ে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। বলেন, ডিম যখন আসছে- ইলিশও তখন যাচ্ছে দাবী সাধারণ মানুষের। 
সরেজমিনে ১০ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে বরিশালের ইলিশ মোকাম খ্যাত পোর্ট রোড বাজার ঘুরে দেখা গেছে-আগের তুলনায় বেড়েছে ইলিশের আমদানি। তবে বেশিরভাগ মাছের আকৃতি ছোট এবং ঝাটকার পরিমাণ বেশি। ২৫০-৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছিল ৬০০ টাকা কেজি দরে। আবার ঝাটকা আকৃতির ইলিশ বিক্রি হচ্ছিল ৪০০-৫০০ টাকা দরে। তিন-চারটি ডালায় কেজি ওজনের বড় ইলিশ দেখা গেল। এখানে আবার দরে তারতম্য। ১২০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েকজন ক্রেতা বললেন-বাজারে যে ইলিশ দেখছেন- এগুলো বেশিরভাগই বাছাই করে ফেলে দেয়া মাছ। এসব ছোট মাছ এলসি হয়না। তারমানে দাড়াচ্ছে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে সাগরে। ব্যবসায়ীরা এলসি করার পর যা থেকে যাচ্ছে সেটাই এখন বাজারে এসেছে। 
আর বিক্রেতারা বলছেন- গতকাল আজকের তুলনায় ২০০ টাকা কম ছিলো- আজ আবার বেড়েছে দাম।
কেন বাড়লো আজ-উত্তরে বললেন- আজ মাছের আমদানি কম- চাহিদা বেশি বলে বেড়েছে। আমদানি কম কেন হলো আবার?
এ প্রশ্নের উত্তর আড়ৎদার ও জেলেরা জানে বলে হেসে দিলেন বিক্রেতা আনিস। ক্রেতারা তখনও ভিড় করে আছেন বিভিন্ন মাছের ডালির সামনে। সবমিলিয়ে পোর্ট রোড ইলিশ পাড়ায় ১৫-২০টি ডালিতে মোটামুটি ইলিশ দেখা গেল। 
এখানের সবচেয়ে বড় মোকাম বা আড়ৎদার আল আমিন ফিস। ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর- জহির উদ্দিন ও অঞ্জন দাস সহ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেল, বরিশালের মোকামে আগে হাজার টন ইলিশ আসতো। পদ্মা ও পায়রা সেতু হওয়ার পর থেকেই তা কমে গেছে। বর্তমানে পোর্ট রোড ইলিশ পাড়ায় সর্বোচ্চ ১০০ টন ইলিশ আসে। আর আজ মঙ্গলবার সকালে এলসি হয়েছে ৬০ টন মাত্র। 
তাদের সবচেয়ে বড় পাইকারী ক্রেতা বগুড়া ও রাজশাহী জোনের ব্যবসায়ীরা বলে জানালেন তারা। জাহাঙ্গীর বলেন- আজ সকালে বরিশালের মোকাম থেকে কেজি ওজনের যে ইলিশ বিক্রি হয়েছে তার দাম পাইকারী ১৫৫০ টাকা ছিলো। ১২০০ গ্রাম মাছটি বিক্রি হয়েছে ১৬৫০ টাকা দরে। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১২০০টাকা এবং ২৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা দরে। 
ব্যবসায়ীরা আরো বলেন- ডিজেলের দাম আরো কমাতে হবে, তানা হলে মাছের দাম কমবেনা বলে জানান তিনি। 
এ-সময় তাদের সামনেই বরগুনা ও পটুয়াখালীর দুটি মোকামে কথা বলে জানা গেল- তাদের মাছও ট্রাক বোঝাই হয়ে বগুড়া ও রাজশাহী অঞ্চলের মাছ ব্যবসায়ীরা নিয়ে গেছে। তারাও বিক্রি করেছেন একই দরে। 
বরিশালের শায়েস্তাবাদ এলাকায় কয়েক ঘর জেলে পরিবার রয়েছে। তাদের একজন রুহুল আমিন বসেছিলেন পোর্ট রোডের মোবারকের আড়তে। রুহুল আমিন জানালেন, নদীতে তীব্র স্রোত চলছে। উপর থেকে বোঝা যায়না। তাই এই সিজনে নদীতে আর ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। 
তিনি আরো বলেন- আমাদের জেলেদের অবস্থা খুবই খারাপ। নদীতে মাছ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা সবাই।
জেলেদের নেতা খোরশেদুল মুন্সি  জানান- নদীতে কোনো ইলিশ নেই। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে ডিমও ছাড়তে পারেনি এবার। তাছাড়া আমাদের যখন নিষেধাজ্ঞা চলে, ভারতের তখন ভরা মৌসুম। সাগরে কিছু মাছ এখন ধরা পরছে। তবে তা সাগর পাড়েই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
সাগর পাড় থেকে বগুনার আল্লাহর দান আড়ৎদার মোজাহিদ জানালেন- সাগরে মোটামুটি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের মোকামগুলো থেকে সকালে প্রায় ৫০০ টন ইলিশ বগুড়া ও রাজশাহী অঞ্চলে গেছে। 
এদিকে উত্তরাঞ্চলের বগুড়া ও রাজশাহীতে   পরিচিতজন ও  সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বরিশালের বাজারের সাথে খুব একটা পার্থক্য নেই ওখানকার বাজারে। ইলিশের দাম এখানেও খুবই চড়া।
বগুড়া থেকে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বগুড়া থিয়েটার অন্যতম সদস্য রুবল লোদী জানালেন- বগুড়ার বাজারেও ইলিশের দর চড়া। ৩০০-৪০০ গ্রামের ইলিশ ৬৫০-৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের ইলিশ পনেরশো টাকার নিচে নেই।
সাধারণ ক্রেতাদের মনে তাই নানান প্রশ্ন। দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ উত্তরাঞ্চলে কেন যায়-সেখানের বাজারেতো ইলিশ নেই। তাহলে  মাছগুলো যায় কোথায়?

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের আলোচনা সভায় ডা. শাহাদাত হোসেন

দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ ইলিশ যাচ্ছে বগুড়া ও রাজশাহী- ভারতে পাচারের আশঙ্কা।।

আপডেট সময় : 12:10:15 pm, Tuesday, 10 September 2024
আরিফ আহমেদ
বিশেষ প্রতিবেদক।।
   
   
ভারতে রপ্তানী বন্ধ হওয়ার পরও ইলিশ এখনো দরিদ্র মানুষের নাগালের বাইরে। তবে ঝাটকা পাওয়া যাচ্ছে ৫০০-৪৫০ টাকা দরে। সংবাদ মাধ্যমের প্রচারণার কারণে গত দু’দিন ধরে কিছু ইলিশ বাজারে এলেও তার আকার খুবই ছোট। দু-চারটে বড় বা কেজি ওজনের ইলিশ এলেও সেগুলোর দাম চড়া জানালেন ক্রেতারা। ক্রেতাদের দাবি- বরিশালের বাজারে  ইলিশের আকার আকৃতি বলে দিচ্ছে এগুলো বাছাইকৃত ফেলে দেয়া মাছ। যা এলসি হয়না কখনো।  আর জেলেদের দাবি- ডিজেল খরচ বাচাঁতে তারা এখন আর গভীর সমুদ্রে যান না। মাছ যা পান তা পর্যাপ্ত নয়। কেউ কেউ অবশ্য বললেন- দেশের চাহিদা অনুযায়ী মাছের সংকট থাকলেও এখনো কোনো না কোনোভাবে ভারতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ইলিশ। তা না হলে উত্তরাঞ্চলে এতো মাছ কেন যাচ্ছে ক্রেতাদের দাবী- গতকালও ভারত থেকে ডিম এসেছে বাংলাদেশে। তাই বিনিময়ে ইলিশ দিচ্ছে না তার কি নিশ্চয়তা আছে-
যদিও মাছ ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের দাবী- সরাসরি কোনো ইলিশ ভারতে যাচ্ছে না এখন আর। পরিবেশগত কারণে সাগর ও নদীতে ইলিশ কম ধরা পরছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। তবে  আড়ৎদার ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা স্বীকার করেন- তাদের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বগুড়া ও রাজশাহী অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। এদিকে  আমাদের উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি জানালেন- সেখানের বাজারেও ইলিশ নেই। যা আছে দাম খুব চড়া।
সবমিলিয়ে ইলিশ নিয়ে বাজারে ও চা আড্ডায় আলোচনার ঝর বইছে দেশের আনাচকানাচে। সাধারণ মানুষের পাতে ইলিশ পরেনি গত ১৫টি বছর। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে পাওয়া নতুন বাংলাদেশেও কি জাতীয় মাছ ইলিশ বঞ্চিত থাকবে নিম্ন আয়ের মানুষেরা- এসময় ভারত থেকে ডিম আমদানি নিয়ে নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। বলেন, ডিম যখন আসছে- ইলিশও তখন যাচ্ছে দাবী সাধারণ মানুষের। 
সরেজমিনে ১০ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে বরিশালের ইলিশ মোকাম খ্যাত পোর্ট রোড বাজার ঘুরে দেখা গেছে-আগের তুলনায় বেড়েছে ইলিশের আমদানি। তবে বেশিরভাগ মাছের আকৃতি ছোট এবং ঝাটকার পরিমাণ বেশি। ২৫০-৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছিল ৬০০ টাকা কেজি দরে। আবার ঝাটকা আকৃতির ইলিশ বিক্রি হচ্ছিল ৪০০-৫০০ টাকা দরে। তিন-চারটি ডালায় কেজি ওজনের বড় ইলিশ দেখা গেল। এখানে আবার দরে তারতম্য। ১২০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েকজন ক্রেতা বললেন-বাজারে যে ইলিশ দেখছেন- এগুলো বেশিরভাগই বাছাই করে ফেলে দেয়া মাছ। এসব ছোট মাছ এলসি হয়না। তারমানে দাড়াচ্ছে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে সাগরে। ব্যবসায়ীরা এলসি করার পর যা থেকে যাচ্ছে সেটাই এখন বাজারে এসেছে। 
আর বিক্রেতারা বলছেন- গতকাল আজকের তুলনায় ২০০ টাকা কম ছিলো- আজ আবার বেড়েছে দাম।
কেন বাড়লো আজ-উত্তরে বললেন- আজ মাছের আমদানি কম- চাহিদা বেশি বলে বেড়েছে। আমদানি কম কেন হলো আবার?
এ প্রশ্নের উত্তর আড়ৎদার ও জেলেরা জানে বলে হেসে দিলেন বিক্রেতা আনিস। ক্রেতারা তখনও ভিড় করে আছেন বিভিন্ন মাছের ডালির সামনে। সবমিলিয়ে পোর্ট রোড ইলিশ পাড়ায় ১৫-২০টি ডালিতে মোটামুটি ইলিশ দেখা গেল। 
এখানের সবচেয়ে বড় মোকাম বা আড়ৎদার আল আমিন ফিস। ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর- জহির উদ্দিন ও অঞ্জন দাস সহ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেল, বরিশালের মোকামে আগে হাজার টন ইলিশ আসতো। পদ্মা ও পায়রা সেতু হওয়ার পর থেকেই তা কমে গেছে। বর্তমানে পোর্ট রোড ইলিশ পাড়ায় সর্বোচ্চ ১০০ টন ইলিশ আসে। আর আজ মঙ্গলবার সকালে এলসি হয়েছে ৬০ টন মাত্র। 
তাদের সবচেয়ে বড় পাইকারী ক্রেতা বগুড়া ও রাজশাহী জোনের ব্যবসায়ীরা বলে জানালেন তারা। জাহাঙ্গীর বলেন- আজ সকালে বরিশালের মোকাম থেকে কেজি ওজনের যে ইলিশ বিক্রি হয়েছে তার দাম পাইকারী ১৫৫০ টাকা ছিলো। ১২০০ গ্রাম মাছটি বিক্রি হয়েছে ১৬৫০ টাকা দরে। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১২০০টাকা এবং ২৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা দরে। 
ব্যবসায়ীরা আরো বলেন- ডিজেলের দাম আরো কমাতে হবে, তানা হলে মাছের দাম কমবেনা বলে জানান তিনি। 
এ-সময় তাদের সামনেই বরগুনা ও পটুয়াখালীর দুটি মোকামে কথা বলে জানা গেল- তাদের মাছও ট্রাক বোঝাই হয়ে বগুড়া ও রাজশাহী অঞ্চলের মাছ ব্যবসায়ীরা নিয়ে গেছে। তারাও বিক্রি করেছেন একই দরে। 
বরিশালের শায়েস্তাবাদ এলাকায় কয়েক ঘর জেলে পরিবার রয়েছে। তাদের একজন রুহুল আমিন বসেছিলেন পোর্ট রোডের মোবারকের আড়তে। রুহুল আমিন জানালেন, নদীতে তীব্র স্রোত চলছে। উপর থেকে বোঝা যায়না। তাই এই সিজনে নদীতে আর ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। 
তিনি আরো বলেন- আমাদের জেলেদের অবস্থা খুবই খারাপ। নদীতে মাছ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা সবাই।
জেলেদের নেতা খোরশেদুল মুন্সি  জানান- নদীতে কোনো ইলিশ নেই। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে ডিমও ছাড়তে পারেনি এবার। তাছাড়া আমাদের যখন নিষেধাজ্ঞা চলে, ভারতের তখন ভরা মৌসুম। সাগরে কিছু মাছ এখন ধরা পরছে। তবে তা সাগর পাড়েই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
সাগর পাড় থেকে বগুনার আল্লাহর দান আড়ৎদার মোজাহিদ জানালেন- সাগরে মোটামুটি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের মোকামগুলো থেকে সকালে প্রায় ৫০০ টন ইলিশ বগুড়া ও রাজশাহী অঞ্চলে গেছে। 
এদিকে উত্তরাঞ্চলের বগুড়া ও রাজশাহীতে   পরিচিতজন ও  সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বরিশালের বাজারের সাথে খুব একটা পার্থক্য নেই ওখানকার বাজারে। ইলিশের দাম এখানেও খুবই চড়া।
বগুড়া থেকে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বগুড়া থিয়েটার অন্যতম সদস্য রুবল লোদী জানালেন- বগুড়ার বাজারেও ইলিশের দর চড়া। ৩০০-৪০০ গ্রামের ইলিশ ৬৫০-৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের ইলিশ পনেরশো টাকার নিচে নেই।
সাধারণ ক্রেতাদের মনে তাই নানান প্রশ্ন। দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ উত্তরাঞ্চলে কেন যায়-সেখানের বাজারেতো ইলিশ নেই। তাহলে  মাছগুলো যায় কোথায়?