আব্বাস উদ্দিন, ব্রাহ্মণ বাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে কোন পূর্ব নোটিশ ছাড়াই টানা ৪০ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিহীন ছিল ৫ গ্রাম। শীতের রাতে বিদ্যুৎহীনতার কষ্ট দূর করতে মোমবাতির সহায়তা নিয়ে অনেকেই পুঁড়িয়েছেন লেপ কম্বল। নষ্ট ও পঁচে গেছে ফ্রিজের কাঁচা তরি তরকারি। উপজেলার সদর সংলগ্ন কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ৫ গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকেই নেই বিদ্যুৎ। সমস্যা সমাধানে তড়িৎ কোন ব্যবস্থা নেননি স্থানীয় পিডিবি।
ভুক্তভোগি স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার রাত ১২টার দিকে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের নাথপাড়া, কলেজ পাড়া, সূত্রধর পাড়া, দত্তপাড়া ও ঘোষপাড়া এলাকার বিদ্যুৎ চলে যায়। ৫ গ্রামে ওই রাতে আর আসেনি বিদ্যুৎ। অপেক্ষা করতে করতে তারা শুক্রবার পুরো দিন শেষ করে। আশায় থাকে অন্তত সন্ধ্যায় মিলবে বিদ্যুৎ। না তাদের আশা পূরণ হয়নি। ফাঁকে সরাইল সরকারি কলেজের প্রভাষক মৃধা আহমাদুল কামাল পিডিবি’র সরাইল শাখার দায়িত্বশীল লোকের সাথে -নির্বাহী প্রকৗশলী- বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে কথা বলেছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই আশ্বাসে চলে গেছে বৃহস্পতিবার পুরো দিন। দ্বিতীয়বারের আশ্বাসের পর চলে গেছে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতও। এরপর ৫ গ্রামের গ্রাহকরা স্বপ্ন দেখতে থাকেন শুক্রবার সকালের। আশায় আর স্বপ্নে চলে যায় শুক্রবার দিনটিও। তখন গ্রাহকরা চারিদিকে দৌঁড়ঝাপ শুরূ করেন।
এরই মধ্যে চলে যায় শুক্রবার রাতও। শনিবার সকালে একজন গ্রাহক ফোন দিলে পিডিবি জানায় ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে গেছে। বিষয়টি দেখছি। শুক্রবার ১১ টার দিকে গ্রাহকদের জানানো হয় দেখছি ট্রান্সফরমার পাঠাচ্ছি। কিন্তু শুক্রবার বেলা ১টা পর্যন্ত ওই এলাকায় দেখা মিলেনি পিডিবি’র কোন লোকের। ওদিকে ৫ গ্রামের সহস্রাধিক গ্রাহকের ফ্রিজে থাকা সকল কাঁচা তরি তরকারি নষ্ট হয়ে গেছে। পঁচে গেছে মাছ মাংশ। অনেকে রাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে বিপদে পড়েছেন। মোমবাতির আগুনে একাধিক পরিবারের লেপ তোষক ও কম্বল পুঁড়ে ফেলেছেন। অবশেষে শনিবার বিকাল ৩টার দিকে সেখানে পৌঁছে একটি ট্রান্সফরমার ও পিডিবি’র কিছু লোক। এর আগে দেখা যায় গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ট্রান্সফরমারের জন্য টাকা উত্তোলন করছেন কিছু লোক। তবে ট্রান্সফরমারের জন্য কত টাকা দিতে হবে? এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে মুছকি হেঁসে বলেন, পরে বলব। স্থানীয় একাধিক গ্রাহক বলেন, প্রথম দিনই যদি পিডিবি কর্তৃপক্ষ সরজমিনে দেখে ব্যবস্থা নিতেন। তাহলে আমরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হইতাম না। আসছে দেখছি বলে উনারা ৪০ ঘন্টা আমাদেরকে দূর্ভোগে রাখলেন। সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী -বিক্রয় ও বিতরণ- মো. শামীম আহমেদ বলেন, ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার সারা দিন টেকনিকেল কারণে লাইনে সমস্যা ছিল। তাই কাজ করা যায়নি। আজকে -গতকাল বিকাল ৫টা- এখন পর্যন্ত সম্ভবত: ট্রান্সফরমার উঠে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে লাইন পেয়ে যাবে