মোঃরুবেল মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার
হেফাজতে ইসলামের হুমকির মুখে টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলায় প্রসাধন ও অন্যান্য সামগ্রীর একটি কোম্পানির বিক্রয়কেন্দ্র উদ্বোধনের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে, যেটি উদ্বোধন করার কথা ছিল অভিনেত্রী পরীমনির।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় উপজেলার এলেঙ্গায় টিন মার্কেটে প্রসাধন সামগ্রীর কোম্পানি হারল্যানের বিক্রয়কেন্দ্রটি উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে তা স্থগিত করা হয়েছে বলে কালিহাতি থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান।
তিনি বলেন, হুজুররা ঝামেলা করেছিল। পরে কর্তৃপক্ষ উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছে।
এলেঙ্গার বিক্রয়কেন্দ্রটির কর্ণধার মীর মাসুদ রানা বলেন, “উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চিত্রনায়িকা পরীমনির থাকার কথা ছিল। এখানে কিছু ঝামেলা হয়েছিল- হেফাজতে ইসলাম আন্দোলন সৃষ্টি করেছিল। একটা মহামারী অবস্থা ধারণ করেছিল। ওনারা অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছিল। পরীমনি আসলে না কি সমস্যা হবে। পরীমনি এল না কি রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। এ নিয়ে বিভিন্ন মসজিদেও আলোচনা হয়েছে।
“বিষয়টি নিয়ে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা ফোন করেছিলেন। বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে থানা পুলিশও আমাদেরকে আপাতত নিষেধ করেছে। পরে কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। পরে ফেইসবুকে দেখেছি তাদের -হেফাজতে ইসলাম- কর্মসূচিটিও বাতিল করেছে।
মীর মাসুদ বলেন-১০-১২ দিন ধরে প্রচার চালিয়েছি। বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করেছি। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায় বড় ধাক্কা খেয়েছি।
এ বিষয়ে সন্ধ্যায় ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমনি আজকের বাংলাকে বলেন, “নিরাপত্তাজনিত কারণে শোরুম উদ্বোধন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে বলে হারল্যান থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। এর বেশি কিছু আমি জানি না।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে হেফাজতে ইসলামের টাঙ্গাইল জেলা শাখার যুববিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ কালিহাতি উপজেলার সভাপতি মুফতি সুলাইমান হাবিব নিজের ফেইসবুক থেকে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
তাতে তিনি লিখেছেন, “এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে হারল্যান শোরুম উদ্বোধন করার জন্য একজন চিত্রশিল্পী (পরীমনি) আশার কথা ছিল। এ বিষয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে ব্যাপক নেতিবাচক আলোচনা হওয়ায় স্থানীয় ইমাম, আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ কিছু ভাই গতরাতে আমার সাথে সাক্ষাত করে বিষয়টি অবহিত করেন। যার প্রেক্ষিতে শনিবার সকালে স্থানীয় ওলামায়ে কেরামসহ আমি শোরুমের মালিক মাসউদ -মাসুদ- ভাইয়ের সাথে কথা বলি।
“মাসউদ ভাই সবার সম্মান রক্ষায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে শনিবারের প্রোগ্রাম স্থগিত করেন মর্মে আমাকে নিশ্চিত করেছেন। আমরা তার এই আন্তরিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এ নিয়ে আর কোনো আলোচনা-সমালোচনা বা মজলিস না করার জন্য তিনি ইমাম, আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইন বলেন, “শোরুম কর্তৃপক্ষ আমার কাছে অনুমতি নিতে এসেছিল। তাদের শর্ত দেওয়া হয়েছিল, সেখানে যানজট বা জনদুর্ভোগ করা যাবে না। সেটা মেনেই তারা রাজি হয়েছিল। তারা প্রোগ্রামটি করতে পেরেছিল কি না, বিষয়টি জানায়নি।”