
চট্টগ্রাম ব্যুরো:
প্রায় ৪৫ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হিলভিউ আবাসিক এলাকাটি চট্টগ্রাম মহানগরীর মধ্যে অন্যতম পরিচিত একটি আবাসিক এলাকা হয়। এখানে ৩ শতাধিক বহুতল ভবন নির্মিত হয়েছে ও ১০০ এর বেশি ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে এবং ভবনগুলোতে প্রায় ৩০ হাজারের মত লোক বসবাস করছে। হিলভিউ আবাসিকের ভূমি ১০০ বছরের ইতিহাসে কখনও সরকারি খাস সম্পত্তি ছিল না। আর এস; পিএস; বিএস ভূমি জরিপে এই ভূমি ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি হিসেবে রেকর্ড হয় এবং আর এস খতিয়ান নং-১৪৯১ পিএস খতিয়ান নং-১৯ এবং তৎ বিএস খতিয়ান নং-১৮০৫ শুদ্ধরূপে প্রচারিত ও প্রকাশিত আছে। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি ফজলুল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আব্দুল করিম, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এনামুল হক, ড. সানাউল্লাহ, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অসংখ্য ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও প্রতিষ্ঠিত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের প্লট রয়েছে এবং বসবাস করছেন।
নিম্নে হিলভিউ আবাসিক এর দালিলিক তথ্য-
১. আরএস খতিয়ান নং-১৪৯১ অবলা সুন্দরী দেবী নামে চূড়ান্তভাবে লিপি আছে।
২. পিএস জরীপে ত্রুটি দেখা দিলে এস.এ এক্ট-১৯৫০ এ মিস মামলা নম্বর ৫২৪/৩১৮-১৯৬২-৬৩ইং এর ১৯৬৪ ইং এর আদেশক্রমে মোছাম্মৎ আনজুমান্ননেসা এর নামে পিএস খতিয়ান ১৯ সৃজিত হয়। পরবর্তীতে উক্ত পিএস খতিয়ানের আলোকে নামজারী খতিয়ান ১৯/২০৮ ও ১৯/২০৯ সৃজিত হয়।
৩. এর ধারাবাহিকতায় বিএস চূড়ান্ত খতিয়ান ১৮০৫ হিলভিউ হাউজিং কোং এর নামে শুদ্ধভাবে ছাপানো আছে। পরবর্তীতে উক্ত খতিয়ানের অনুসরণে ১৪৯টি ভিন্ন ভিন্ন বরাদ্দ প্রাপ্ত ভূমির মালিকগণের অনুকুলে ১৮০৫/১-১৪৯টি খতিয়ান সৃজন পূর্বক খাজনাদি ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত পরিশোধিত হইয়াছে। ১৯৯৫ ইংরেজিতে সহকারী কমিশনার ভূমি-এর আন্তঃ বিভাগীয় পত্রের ফলশ্রুতিতে নামজারী ও খাজনা পরিশোধ স্থগিত থাকে।
৪. এই প্রেক্ষপটে ২০০৫ইং সালে নামজারী ও খাজনা স্থগিত রাখাকে চেলেঞ্জ করে হিলভিউ কল্যাণ সমিতি মহামান্য হাইকোটে ৬২৯৬নং রিট মামলা দায়ের হয়। রিট মামলা প্রেক্ষিতে নামজারী ও খাজনা স্থগিত রাখা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারী হয়।
৫. রুল জারীর প্রেক্ষিতে সরকার/ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্মারক সূত্র নং ভূঃসং/শা-৯ (নামজারী) ২২/৯৯-৪৭৯, তাং- ০৯/০৪/২০০৬ইং সালে জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম মহোদয়কে পশ্চিম ষোলশহর মৌজার হিলভিউ হাউজিং কোম্পানী লিমিটেড কর্তৃক বিক্রিত ভূমি মালিকগণের অনুকুলে নামজারী পূর্বক ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করার জন্য বিহিত আদেশ হয়।
৬. ৬২৯৬/২০০৫ইং রিট মামলা ২৫-০২-২০১০ইং তারিখের রায়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক নামজারী স্থগিতকরণ পূর্বক খাজনা আদায় বন্ধ রাখা অবৈধ এবং যাহার আইনগত কোন ভিত্তি নাই মর্মে রায় প্রদান করেন এবং নামজারী ও খাজনা আদায়ের আদেশ মহামান্য হাইকোট কর্তৃক যথাযথভাবে জারী হয়।
৭. রীট মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে ১২৩জন ভূমির মালিক সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদর পাঁচলাইশ, চট্টগ্রাম বরাবরে আবেদন করিলে দেওয়ানী আদালতে বিচারাধীন ৮৪/২০০০ এবং ৫৯৮/২০১০ মামলার অজুহাতে সমুদয় নামজারী মামলাগুলো খারিজ করিয়া দেন। মহামান্য হাইকোট বিভাগের রায় বাস্তবায়ন বিলম্বিত/অকার্যকর করার মানসে উচ্চ আদালতের রায় ঘোষণার পর তড়িঘড়ি করে নিম্ন আদালতে অপর মামলা নং-৫৯৮/২০১০ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আনয়ন করা হইয়াছে যাহা কোনভাবেই আইনসিদ্ধ বিবেচিত হয় না বরং ব্যক্তিগতভাবে সকল তথ্য উপাত্ত অবগত না হয়ে তৎকালীন এসিল্যাণ্ড (বর্তমান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার- রাজস্ব) জনাব মোয়াজ্জেম হোসাইন করেছেন বলে প্রতিয়মান হয়।
৮. অপর মামলা ৫৯৮/২০১০ উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জজ কোট চট্টগ্রামে ২০২০ সালে খারিজ হয়। উক্ত খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন মহামান্য হাইকোটে ১ম আপীল মামলা নং-৮৯/২০২৩ দায়ের করেন। আপীল মামলাটি গত ২৩/০২/২০২৫তাং উভয় পক্ষের শুনানী শেষে ডিসমিস হয়। ১ম আপীল মামলা নিষ্পত্তির পর জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ ২০০টির বেশি নামজারী মামলা নিষ্পত্তি করেছে এবং খাজনা গ্রহণ চলমান আছে।
এমতাবস্থায়, একটি গোষ্ঠীর ভিত্তিহীন তথ্য, মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে হিলভিউ এলাকার বৈধ ভূমি মালিকদের সামাজিক ও আইনগত অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা বন্ধ করা উচিত।