
আব্বাস উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের পলাতক ইউপি চেয়ারম্যান আছমা বেগমের অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ইউপি সদস্য ও ভুক্তভোগি লোকজন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দেওড়া গ্রামে উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়কে এই মানববন্ধন হয়েছে। মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া, অমরেশ সরকার, আলী রাজা, মো. লুতু মিয়া, আপন মিয়া, সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্য নাজমা আক্তার (১,২,৩), কাকলী রানী দাস (৪,৫,৬) ও মোছা. শারমিন বেগম (৭,৮,৯)। এ ছাড়াও স্থানীয় ভুক্তভোগি লোকজনও মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেছেন। ইউপি সদস্যবৃন্দ ও সাধারণ লোকজন বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নৌকার টিকিটে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান হওয়া আছমা বেগম নিজ গ্রামের এক হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় গত এক বছর আগ থেকে অফিসে আসেন না। উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আছমা বেগমকে গত ৫ আগষ্টের পর আমরা আর চোখে দেখছি না। শুনেছি আরো কয়েকটি হত্যা মামলার আসামী তিনি। তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অফিসে আসছেন না। ফলে গত ৮-৯ মাস ধরে কোন সভা হচ্ছে না। সামাজিক সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। উনার একটি স্বাক্ষরসহ না কাজে লোকজন অফিসে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা এমন কী দিন ব্যাপি অপেক্ষা করছেন। হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে জন দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। অথচ তিনি গোপন আতাতের মাধ্যমে অনিয়ম করে বরাদ্ধের টাকা উত্তোলন করছেন। আমাদেরকে কোন ধরণের (ইউপি সদস্যরা) বরাদ্ধ দিচ্ছেন না। এই ভাবে একটি পরিষদ চলতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমরা পলাতক এই চেয়ারম্যানের অপসারণ করে প্যানেল চেয়ারম্যান অথবা অন্য কোন ব্যবস্থা করে জনগণকে দূর্ভোগের হাত থেকে রক্ষার দাবী জানাচ্ছি। হেলাল মিয়া, সুজন মিয়া ও ইমরান খান বলেন, চেয়ারম্যান পলাতক থেকেও ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কাজে শুধু শাহজাদাপুরে একটি কেন্দ্র করে দেওড়া মলাইশ ও গাজিপুরের হাজার হাজার নারী পুরূষকে চরম দূর্ভোগে ফেলেছেন। রোজা রেখে প্রচন্ড তাপদাহে প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার দূরের কেন্দ্রে ওই তিন গ্রামের ৫০ ভাগ লোক যায়নি। যারা গিয়েছেন তাদেরকে সেখানে কোন পাত্তাই দেয়নি। অনেকে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্টে কান্না করে ফিরে এসেছেন। এই চেয়ারম্যানকে দিয়ে কিছুই হবে না। ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা গাজী সিরাজুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় চেয়ারম্যান অফিসে মাঝে মধ্যে আসেন। দফাদার ও উনার ছেলে অফিসের ফাইল কাগজপত্র নিয়ে যান। চেয়ারম্যান স্বাক্ষর করে দিচ্ছেন। কাজ হচ্ছে। তবে মন্থর গতিতে। জনগণের কোন দূর্ভোগ হচ্ছে না। চেয়ারম্যান আছমা বেগম বলেন, আমার বিরূদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আমাকে মামলার আসামী করা হয়েছে। তাই নিজেকে একটু আড়াল করে রাখি। পরিষদের সকল কাজ ঠিকঠাক মত চলছে। জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত আছে।