
লিটন রানা শেরপুর
সারাদেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়া শেরপুর জেলার যৌক্তিক উন্নয়নের ৫ দফা দাবিতে শেরপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা এক মিনিট থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এক নাগরিক মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে ধর্ম, বর্ণসহ রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর মোড় থেকে অস্টমীতলা পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ১৪ কিলোমিটার সড়কজুড়ে মানববন্ধনটিতে অন্তত অর্ধলক্ষাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
তথ্যমতে, ১৯৮৪ সালে শেরপুরকে মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত করা হলেও ৪১ বছর পর সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে জেলার প্রায় ১৬ লক্ষ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ফলে শেরপুরবাসী অনেক আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এসময় জেলায় উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা, উচ্চ শিক্ষার্থে বিশ্ববিদ্যালয়, যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেল নেটওয়ার্কের সংযোগ, পর্যটন খাতের উন্নয়নে পর্যটন এলাকায় সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে হোটেল-মোটেল নির্মাণসহ ব্যবসা-বানিজ্য প্রসার লাভে অর্থনৈতিক জোন নির্মাণের দাবী করেন বক্তারা।
এ মানববন্ধন চলাকালে শেরপুরের শতাধিক রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের স্বতস্ফর্ত অংশগ্রহণে অস্টমীতলা থেকে খোয়ারপাড় মোড় পর্যন্ত সকল যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। এসময় বিভিন্ন যানবাহন থামিয়েও সাধারণ মানুষ এবং রাস্তার পাশের গৃহবধুরাও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে।
অর্ধলক্ষাধিক মানুষের মানবন্ধনে অংশগ্রহণকারীদের জরুরী স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক চারটি এ্যাম্বুলেন্সে চারজন সরকারী চিকিৎসকসহ বেশ কয়েকজন করে নার্স সার্বক্ষণিক ভ্রাম্যমান ছিলেন। সর্বস্তরের মানুষের তৃষ্ণা মেটাতে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকের একটি দল পানি সরবরাহ করেছে। যে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কয়েকটি গাড়ী সার্বক্ষণিক নজরদারী করেছে মানববন্ধনটিকে। মানববন্ধনটির নিরাপত্তায় সেনাবাহীনিসহ পুলিশ সদস্যরা ছিল বেশ তৎপর। তবে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন কর্মসূচী শেষ হয়।
জেলার সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের দাবীতে অনুষ্ঠিত এই আন্দোলনের পরও শেরপুরে দৃশ্যমান উন্নয়নের ব্যবস্থা করা না হলে প্রয়োজনে জেলাকে শাটডাউনের মত কঠোর কর্মসূচী দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। জেলার ইতিহাসে রাজনৈতিক সমাবেশ ছাড়া সর্বোচ্চ জনসম্পৃক্ততা লক্ষ্য করা গেছে এ মানববন্ধনে।