স্টাফ রিপোর্টার
সিরাজগঞ্জ।।
সরাজগঞ্জে একটি হাসপাতালে যন্ত্র কিনতে অগ্রিম দেওয়া ১৬ কোটি ও সরকারি বরাদ্দের আরো ২৫ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। জেলার শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুদকসহ বিভিন্ন দফতরের তদন্ত চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের মাঝামাঝি ওই হাসপাতালের ম্যাগনেটিক রিজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) যন্ত্র কিনতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গ্রিনট্রেডকে কাজ দেওয়া হয়। এরপর যন্ত্র কেনার জন্য অগ্রীম পরিশোধ করা হয় ১৬ কোটি টাকা। তবে ১৪ মাস পেরিয়ে গেলেও এমআরআই যন্ত্র হাসপাতালে পৌছেনি এবং এখন ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক উধাও হয়েছেন। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (সিজিএ) কার্যালয় ও দুদক সহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে দফায় দফায় তদন্ত চলছে। তবে এ তদন্তের মুখোমুখি হননি ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এদিকে, হাসপাতালের সরকারি বরাদ্দের আরো ২৫ কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় জড়িত ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঢাকার এম জাহান ট্রেডার্সের মালিক মহসিন আলী ও গ্রিনট্রেডের মাহফুজ ভুয়া বিল-ভাউচার ও কোড পরিবর্তন করে সরকারের সমন্বিত বাজেট ও হিসাব সংরক্ষণ ব্যবস্থা থেকে এ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনায় ওই ২ ঠিকাদার এখন উধাও হলেও হিসাব নিয়ন্ত্রক শাখার ৫ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত হন। এমনকি ঢাকার তেজগাঁও স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চমান সহকারীও এখন দুদকের জালে। একই হাসপাতালে প্রায় ১২৫ কোটি টাকার চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র কেনাকাটায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মানি লন্ডারিং আইনে এর আগে পৃথক মামলা করে দুদক।
হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) কৃষ্ণ কুমার পাল এ বিষয়ে জানান, ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদক মামলা করেছে। কয়েক বছর আগে আরেকটি ঘটনায় দুদক তদন্ত করছে। তবে এমআরআই মেশিন ক্রয়ে আগাম বিল পরিশোধ করা হয়েছে। অবশ্য ঠিকাদারের নিরাপত্তা জামানত হিসেবে ১৪ কোটি টাকার পেমেন্ট অর্ডার রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়টি অবগত রয়েছে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ টাকা প্রাপ্তির বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে ওই দুই ঠিকাদারকে এখনও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
হাসপাতাল পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস মুহা. খায়রুল আতাতুর্ক জানান, এমআরআই যন্ত্র এখনো পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে দুদকের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ওই সংস্থার বিশেষ অনুসন্ধান-২ শাখার উপ-পরিচালক প্রকল্প পরিচালকে একাধিক পত্র দিয়েছিলেন। এ পত্রে ওই যন্ত্রের ক্রয়-সংক্রান্ত সকল তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।