
মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের তরুন কৃষক সোহাগ ১২ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করে কৃষিতে নতুন বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন।
দেশের কৃষিতে উদ্ভাবন হচ্ছে নতুন নতুন জাতের ধান। উচ্চ ফলনশীল এসব জাতে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এ বছর তিনটি নতুন জাত সহ মোট ১২টি জাতের ধান পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন লক্ষ্মীপুরের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আবদুর রহমান সোহাগ। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। সোহাগ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের নলডগী গ্রামের ইব্রাহীম খলিলের ছেলে। তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষের ছাত্র। ধান ছাড়াও সয়াবিন, সূর্যমুখী, সরিষা, তিল, ক্যাপসিকাম, চূড়াইফলসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেন তিনি।
এ বছরের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত লবণাক্ততা সহনশীল, উচ্চ ফলনশীল, বোরো ও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী- এমন তিনটি নতুন ধানের জাত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড (এনএসবি)। এ তিন জাত হলো :- ব্রি ধান-১১২, যা মাঝারি মেয়াদি রোপা আমনের জাত, এছাড়া লবণাক্ত জমির জন্য উপযোগী। ব্রি ধান-১১৩ জাতটি বোরো মৌসুমের জন্য উদ্ভাবিত এবং জনপ্রিয় জাত ব্রি ধান-২৯ এর বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ব্রি ধান-১১৪, যা ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী এবং দীর্ঘ জীবনকালীন বোরো জাত; ব্লাস্ট রোগের কারণে যে-সব এলাকায় ধানের ফলন কমছে, সেসব এলাকায় এই জাতটি চাষ করে কৃষকরা উপকৃত হবেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের যাচাই-বাছাইয়ের পর নতুন এ তিনটি জাত সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চান তিনি।
ব্রি ধান-১০৫ কে ডায়াবেটিস ধানও বলা হয়। এর চাল খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। ব্রি ধান-১০০ জিং সমৃদ্ধ। এছাড়া আউশ মৌসুমে ব্রি ধান-৯৮, আমন মৌসুমে ব্রি ধান-১০৩, ব্রি ধান-৮৭, ব্রি ধান-৯৪, ব্রি ধান-৯৫ চাষ করেছে সোহাগ। এদের মধ্যে ব্রি ধান-১০৮ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় এবং তার কাছ থেকে সারাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্রিজ সংগ্রহ করে। নতুন উদ্ভাবিত তিন জাতসহ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এখন পর্যন্ত মোট ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে ৮টি হাইব্রিড জাত।
স্থানীয় কৃষক আবদুস শহীদ বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে কৃষির সাথে জড়িত। কিন্তু কৃষিতে তেমন ভালো করতে পারছি না। সোহাগ আধুনিক কৃষির সাথে জড়িত, এতে সে ভালো ফলন পাচ্ছে। আমরাও তার কাছ থেকে নিয়মিত পরামর্শ নিচ্ছি। এছাড়া নতুন নতুন যে জাতগুলো আছে সোহাগের কাছ থেকে ঐ জাতগুলো নিয়ে আমরা চাষ করছি এবং ভালো ফলন পাচ্ছি। আমাদের এলাকার প্রায় শতাধিক কৃষক নতুন এসব জাত চাষ করে। আমরা মনে করি সোহাগের হাত ধরে আধুনিক কৃষি ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে।

























