
নাঈম ভূইয়া, রায়পুরা প্রতিনিধি
নরসিংদীর রায়পুরায় অর্থের বিনিময়ে অবৈধ উপায়ে নাগরিকদের তথ্য পাচারের দায়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসের দুইজন কর্মচারীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) রাত ৮ টায় সাংবাদিকদের সাথে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রায়পুরা উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) নির্বাচন কর্মকর্তা দ্বীন মোহাম্মদ রাসেল।
এর আগে বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইডিইএ প্রকল্প, ২য় (পর্যায়) পরিচালক (আইটি) উইং কমান্ডার সাদ ওয়ায়েজ তানভীর, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, সিস্টেম এনলিস্ট, আই এস শাখা (এনআইডি) প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, সহকারী মেইনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার, আইডিইএ প্রকল্প, ২য় (পর্যায়) মোঃ মেহেদী হাসান।
তদন্ত কার্যক্রম শেষে উপযুক্ত প্রমানের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাচন অফিসের স্ক্যানিং অপারেটর আশিকুল আলম ও ডাটা এন্ট্রি অপারেট নাহিদুল ইসলামকে আটক করে তদন্ত টিম । পরে ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কর্মকর্তা দীন মোহাম্মদ রাসেল বাদী হয়ে অভিযুক্ত দুইজনকে আসামী করে থানায় সোপর্দ করেন।
অভিযুক্ত আশিকুল আলমের বিকাশ একাউন্টে গত ৬ মাসে ১২ লাখ টাকা ও নাহিদুল ইসলামের একাউন্টে ২ লাখ টাকার বেশি আয় বহির্ভূত লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
ভারপ্রাপ্ত নির্বাচন কর্মকর্তা দীন মোহাম্মদ রাসেল বলেন , গোপন সূত্রের ভিত্তিতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা যায় যে, উপজেলায় নির্বাচন কার্যালয়ে কর্তব্যরত একজন কর্মী অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে অর্থের বিনিময়ে নাগরিক তথ্য বিভিন্ন ব্যক্তিকে হস্তান্তর করে আসছে। এমতবস্থায় জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন বিভাগ থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত তদন্ত কমিটির প্রতিনিধিরা আজ বুধবার ১১ঘটিকায় সরজমিনে উপস্থিত হয়ে তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে সক্ষম হন। তদন্তে প্রাপ্ত প্রমাণ সহ আশিকুল আলম এবং নাহিদুল ইসলাম ব্যক্তিদ্বয়দের কে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মামলা দায়ের করে থানায় হস্তান্তর করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সেই সাথে নির্বাচন কমিশন দূর্নীতি ও নাগরিক সেবার অনিয়ম প্রতিরোধে দৃড় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং নাগরিক সেবা সহজ করণে সর্বদা সচেষ্ট বলে জানান তিনি।
তদন্ত কমিটির প্রধান উইং কমান্ডার সাদ ওয়ায়েজ তানভির (পরিচালক আইটি) বলেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠিত হয়, তারই প্রেক্ষিতে আমরা আজকে উপস্থিত হয়েছি। এখানের একজন কর্মী অবৈধ উপায়ে অর্থের বিনিমিয়ে নাগরিক তথ্য হনস্তান্তর করে আসছে। আমরা এখানে উপস্থিত হবার পরপরই তার মোবাইল জব্দ করা হয় এবং তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জবানবন্দি নিতে সক্ষম হয়। আমরা তথ্য উপাত্ত প্রমানাদী নিয়ে উপস্থিত হই এবং সে এসব অবৈধ কার্যক্রমের বিষয়গুলো সরাসরি স্বীকার করে। পরবর্তীতে দেখা যায় যে, তথ্য হস্তান্তরের বিনিময়ে আশিকুল আলমের বিকাশ একাউন্টে গত ৬ মাসে ১২ লক্ষ টাকার মতো লেনদেন সংগঠিত হয়েছে। নাহিদুল ইসলাম নামে আরেকটি একাউন্টে আমরা ২ লক্ষ টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছি। যদিও এটির তথ্য আমাদের কাছে ছিলনা, সেই তথ্যের বিষয়েগুলো এখানে এসে উন্মোচিত হয়। সে বিভিন্ন সংশোধনের কার্যক্রম গুলো অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে এসব লেনদেন পরিচালনা করেন । একাউন্টে গত ৬ মাসে ২ লক্ষ টাকার বেশি লেনদেনের প্রমান পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে । পরবর্তীতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী মামলা দাখিল করা হবে।