মেহেরপুর থেকে জুরাইস ইসলাম ।।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মহিষা খোলা গ্রামের আকবর আলীর ছেলে আব্দুল মাবুদ। পিতার সংসারের হাল ধরতে পাঁচ বছর আগে যান মালয়েশিয়া। ড্রাগন ফল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনী পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। প্রবাসি জিবনে বসে ড্রাগন ফল চাষের স্বপ্ন দেখে দেশে এসে তা বাস্তবায়ন করেছেন অনুকুল আবহাওয়া আর অধিক লাভজনক হওয়ায় ইতোমধ্যে এলাকার চাষিরা ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। শিক্ষিত যুবকেরা চাকরীর প্রত্যাসা না করে অনেকেই পরামর্শ নিচ্ছেন ড্রাগন চাষের।
সুদূর প্রবাসে বসেই স্বপ্ন দেখেন দেশে কৃষি কাজ করে সাবলম্বি হওয়ার। ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হন ড্রাগন ফল চাষের। গেল বছরে দেশে ফিরে এসে নাটোর জেলা থেকে চারা সংগ্রহ করে নিজ জমিতে রোপন করেন ড্রাগন ফলের চারা । এক বিঘা জমিতে খরচ হয় তিন থেকে চার লাখ টাকা। ড্রাগন গাছে ফল দেয়া শুরু করলে আর তেমন খরচ নেই। একেকটি গাছ এক টানা ১০ থেকে ১৫ বছর ফল দিতে পারবে। প্রথম পর্যায়েই লাভের মুখ দেখেন আব্দুল মাবুদ। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে ২৮০ টাকায়। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। বর্তমানে তিনি তিন বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের আবাদ করেছেন।
আব্দুল মাবুদ জানান, প্রবাস জীবন অনেক কষ্টের। সেখানে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হয়। দেশে সেই পরিশ্রম করতে পারলে অনেক টাকা আয় করা সম্ভব। ইন্টারনেট ও ইউটিউব দেখে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি। এখন তিন বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের আবাদ রয়েছে। চারা তৈরী করেছি। অনেকেই ছাঁদ বাগানের জন্য এবং আবাদি জমিতে রোপনের জন্য চারা কিনতে আসছেন।
আব্দুল মাবুদের ড্রাগন ফলের আবাদ দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন ড্রাগন ফল চাষে। অনেকেই আসছেন ড্রাগন ফল চাষের পরামর্শ নিতে। মেহেরপুরের কৃষক বানাত আলী জানান, তিনি লোকমুখে আব্দুল মাবুদের ড্রাগন চাষের খবর শুনে দেখতে এসেছেন এবং তিনি আবাদ করবেন। একই কথা জানালেন গাংনীর কৃষক জাব্বার আলী।
ড্রাগন ক্রেতা আমজাদ হোসেন জানান, এই প্রথম ড্রাগন ফল খেলাম। খেতে সু-স্বাদু ও দেখতে সুন্দর। পুষ্টিবীদরাও ড্রাগন ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক বেশি। করোনাকালীন মুহুর্তে ড্রাগন ফল খাওয়া দরকার মনে করেই এখানে এসেছি ড্রাগন ফল ক্রয় করতে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম সাহাবুদ্দীন আহমেদ জানান, ড্রাগন ফল একটি বিদেশেী ফল। এ ফলে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। দেখতে সুন্দর এবং খেতেও অনেক মজা। বাজারে চাহিদা এবং দাম দুটোই ভাল পাচ্ছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাকে সর্বাত্মক পরামর্শ ও সহযোগীতা দেয়া হচ্ছে। অনেকেই নতুন করে আবাদের জন্য আমাদের কাছে আসছেন আমরা তাদেরকেও পরামর্শ দিচ্ছি।