স্টাফ রিপোর্টার॥
ভোলায় যৌতুক ও নেশার টাকা না দেয়ার জের ধরে চাকুরীজিবী স্ত্রী ইস্মিতারানী মন্ডলকে কয়েকদফা বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে,তার মাদকাসক্ত বখাটে স্বামী অনির্বান মজুমদার শুকান্ত । বিগত ২১আগষ্ট প্রথম ঘটনাটি ঘটে জেলা সদর ভোলার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডস্থ্য বিএভিএস রোডে অবস্থিত ভিক্টিমের ভাড়াকরা ফ্ল্যাটে এবং ২৪ আগষ্ট দ্বিতীয়বার হামলা ও নিপীড়ননের ঘটনাটি ঘটানো হয় বোরহানউদ্দিন উপজেলাধীন পক্ষিয়া ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ডস্থ্য গৃহবধূর গ্রামে বাবা’র বসতবাড়ীতে। বখাটে স্বামী শুকান্তের হামলায় আহত স্ত্রী ইস্মিতাকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তিকরা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভোলা থানায় দায়ের করা অভিযোগ ও ভিভিক্টিমসূত্রে জানা গেছে,দুই পূত্রসন্তানের জননী ইস্মিতারানী মন্ডল বোরহানউদ্দিন উপজেলায় “পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে” চাকুরী করছেন। জেলা সদর ভোলায় সন্তানদের পড়ালেখা করানোর সুবাদে তিনি ভাড়াকরা ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। বিয়ের পর স্বামী অনির্বাণ টুকটাক ব্যবসা-বাণিজ্য করলেও নেশাগ্রস্থ্য হওয়ায় এখন তিনি বেকার হয়ে মাতলামী করছেন। ফলে ইস্মিতার চাকুরীর টাকায়-ই তাদের সংসার চলে। বিয়ের পর থেকে যৌতুক হিসেবে স্বামী শুকান্ত শশুর বাড়ী হতে কয়েকলাখ টাকা নিয়েছেন।
কাজকর্ম না করে ওই টাকা নেশার পিছনে ব্যায় করে ফের টাকা চাইতে শুরু করেন। এভাবে টাকা না পেলে স্ত্রী ইস্মিতাকে প্রায় সময়-ই নির্মমভাবে নিপীড়ন চালায় শুকান্ত। স্ত্রী’র কাছ থেকে নেশার টাকা আদায় করতে পারলে তা নিয়ে হঠাৎ এক-দেড়মাসের জন্য উধাও হয়ে যান শুকান্ত। কিছুদিন পর ফিরেএসে আবার স্ত্রী’র উপর হামলা শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২১ আগষ্ট সন্ধ্যায় জেলা শহরের ভাড়া বাসায় এসে নেশার টাকার জন্য স্ত্রী ইস্মিতার উপর হামলা চালায় স্বামী শুকান্ত। স্বামীর টর্চার সইতে না পেরে স্ত্রী ইস্মিতা নিজেকে রক্ষা করতে ওইদিনই বোরহানউদ্দিনের নিজ গ্রাম পক্ষিয়ায় বাবার বাড়ীতে গিয় আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানে গিয়েও রক্ষা পাননি গৃহবধূ ইস্মিতা। ২৪ আগষ্ট বিকেলে বখাটে স্বামী-শুকান্ত ৩/৪জন ভাড়াটে গুন্ডা বাহিনী নিয়ে ইস্মিতার বাবার বাড়িতে হামলা চালায়। সেখানে ইস্মিতার উপর ফের নির্যাতন চালানো হয়। মাস্তান দিয়ে ইস্মিতাকে টেনেহিঁচড়ে অপহরনের চেষ্টা চালানো হয়। এসময় এ গৃহবধূর ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে শুকান্তসহ দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এঘটনার পর আহত গৃহবধূকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে গৃহবধূ ইস্মিতার শিশুপূত্র স্পর্শ মন্ডল ও দীর্ঘ মন্ডল গণমাধ্যমকে বলেন,আমার বাবা প্রায় সময়ই আম্মুকে ভয়ঙ্করভাবে পেটায়। তখন আমরা খুবই ভয় পাই। আম্মুকে মারতে না বললে বাবা আমাদেরকেও মা-রে। তারা বলেন,বাবা পঁচা কিছু খেয়ে বাসায় আসলে তার মূখ থেকে খুব বাজে গন্ধ বেরুই। উদ্ভূত ঘটনায় আহত গৃহবধূ ইস্মিতা রানী মন্ডল ভোলা সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
ওদিকে এসব বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত অনির্বাণ মজুমদার শুকান্ত’র সাথে। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন,আমি পারিবারিক ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি দাবী করে বলেন, আমি স্ত্রীকে টর্চার করছিনা বরং আমি নিজেই স্ত্রীর নির্যাতনের শিকার।
ভোলা সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিন ফকির গণমাধ্যমকে জানান,দু-পক্ষের কাছ থেকেই লিখিত অভিযোগ পেয়েছি,তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।