শরীয়তপুর প্রতিনিধি।।
শরীয়তপুরের ডামুড্যায় আদালতের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে মো: মিলন বেপারি নামে এক দুবাই প্রবাসীর পৈতৃক জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ডামুড্যা পৌরসভার বিএনপি সভাপতি আলমগীর মাদবরের বিরুদ্ধে।
প্রবাসী মিলন বেপারির স্ত্রীর দাবি- বিএনপি নেতা হওয়ায় আলমগীর মাদবরের নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কেউই কথা বলছেন না। এমনকি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জানানোর পরেও কোনো সমাধান মিলছে না। তাই ন্যায়বিচারের দাবিতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান- গত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পরে ওই জমি দখল নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এরপর গত ২৭ সেপ্টেম্বর ৫০-৬০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তিতে হাঙ্গামা ও ত্রাস সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে বাঁধা দিলে কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখে। এরপর গত শুক্রবার সকালে বিএনপি নেতা আলমগীর মাদবরের নেতৃত্বে কাশেম মাদবর- বাবু মাদবর- জব্বার ফরায়জী- ইসমাইল মাদবর- মালেক ফরায়জী- ওসমান মৃধা- রফিকুল- ছালামত খা- সবুজ সহ কয়েকজন মিলে জোরপূর্বক ডামুড্যা পৌরসভার বিশাকুড়ি মৌজার ১৪৬ দাগের ২২ শতাংশ জায়গা জুড়ে ইটের দেওয়াল তুলে দখলের চেষ্টা করেন। শুধু তাই নয়, জমিতে থাকা মূল্যবান ফলদ ও বনজ গাছপালাও কেটে ফেলা হয়। এসময় ওই প্রবাসীর পরিবারের লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদের মারধর ও হুমকি ধামকি দিয়ে ওই জমিতে যেতে নিষেধ করে। এর প্রতিবাদে ওই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ডামুড্যা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী প্রবাসীর স্ত্রী রাশিদা আক্তার বলেন, সরকার পতনের পরে গত ২৭ সেপ্টেম্বর আলমগীর মাদবর আমাদের জমি দখল করতে আসে। পরবর্তীতে পুলিশ এসে বাধা দিলে কাজ বন্ধ রাখে। এরপর গত শুক্রবার সকালে ৫০-৬০ জন লোক এনে আমার জমি দখল করে সে। আমি বাধা দিলে আমার মারধর ও হুমকি ধামকি দেয়। আমার শাশুড়ী ও ননদকে মারধর করেছে। আমাদের এই জমিতে আসতেও নিষেধ করে। আমি এবিষয়ে কোর্টে মামলা দায়ের করেছি। আদালত আলমগীর মাদবরকে এই বিষয়ে জবাব দিতে নোটিশ করেছে। কিন্তু এখনো সে নোটিশের জবাব না দিয়ে উল্টো আমাদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে । আদালতের রায়ও তারা মানছে না। ইচ্ছামতো গায়ের জোরে তারা কাজ করে চলেছে। সে একজন ভূমিদস্যু এবং সন্ত্রাসী তাই কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলে না। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আলমগীর মাদবর- তিনি বলেন- জমিতে স্থায়ী কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই ‘একটি দেওয়ানিমামলা চলমান। আওয়ামী লীগের আমলেও আমার চেয়ে ক্ষমতাশালী কেউ ছিলো না। আমি চাইলে তখনই দখল করতে পারতাম। আমি জমি পাবো তাই ইট দিয়ে বাউন্ডারি দিয়েছি। মারধরের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন- একটু হাতাহাতি হয়েছিল এর বেশি কিছু নয়।
এবিষয়ে শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ বলেন- আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি । দলের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে অপরাধী হলে ছাড় নেই। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে ভাঙচুর লুটপাট ও চাঁদাবাজি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -ওসি-মোহাম্মদ হাফজিুর রহমান মানিক বলেন- এবিষয়ে আমাদের থানায় একটি জিডি হয়েছে। কোর্টের অনুমতি নিয়ে তদন্ত করা হবে। জবর দখলকারী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে থানা-পুলিশের নজরদারি রয়েছে।