Dhaka , Tuesday, 8 July 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
সংবাদ প্রকাশের পর কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শোকজ গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে যারা প্রতারণা করেছে, তারা দেশের জনগণের সঙ্গেও প্রতারণা করেছে পাবনায়- নাহিদ   মুষলধারে বৃষ্টিতে ডুবল নোয়াখালী, জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ চরমে   লালমনিরহাটে গ্রেড উন্নীতকরণসহ ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি পাটগ্রাম থানায় হামলা ও ভাঙচুর , গ্রেপ্তার আরও দুই বিএনপি নেতা প্রবল বর্ষণে রামগঞ্জের নিন্মাঞ্চল প্লাবিত জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে  জাজিরায় পদ্মা নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে টিন, নগদ অর্থ বিতরণ নওপাড়া ইউপি যুবদলের কমিটি গঠন, আহ্বায়ক মহসিন সদস্য সচিব সুমন রূপগঞ্জে প্রেমিকা ও স্বামীর ছুরিকাঘাতে প্রেমিক নিহতের ঘটনার প্রধান আসামী স্বামী মুকুল মিয়া গ্রেফতার সার্চ মানবাধিকার সোসাইটি বাংলাদেশ-এর ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কক্সবাজারে উদযাপন ফরিদপুর ৪ আসনের জামায়াত ইসলামের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা সারোওয়ার হোসেনের দুর্গম চরে গণ-সংযোগ লোহাগাড়ায় ১১ জন নিহতের ঘটনায় ঘাতক বাস চালক আটক লালমনিরহাটে হাসপাতাল থেকে কলেজ ছাত্রের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার  কালীগঞ্জে বগুড়ার তিন নারী মাদক ব্যবসায়ী র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার টেকনাফে টানা বৃষ্টিতে পানিবন্দী ৩ হাজার পরিবার, চরম দুর্ভোগে স্থানীয়রা উত্তাল সমুদ্র: ট্যুরিস্টদের সচেতনতায় কক্সবাজার সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশের মাইকিং ও প্রচার অভিযান দাউদকান্দিতে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ছে, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৬৩ শাকিব খানের নতুন সিনেমা: ঈদ ২০২৬-এ আসছে, কাস্টিং নিয়ে বিতর্ক প্রবাসী রেমিট্যান্সে রেকর্ড প্রবাহ: জুলাইয়ে বেড়েছে ১৫.৩৪ শতাংশ দেবলীনা-তথাগত: এক সম্পর্কের ইতি, দুই জীবনে নতুন প্রেমের সূচনা রূপগঞ্জে অস্ত্রসহ ৭ ডাকাত দলের সদস্য গ্রেফতার রূপগঞ্জে মোবাইল কোটের মাধ্যমে ৯০০ শ অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন তিতাস কতৃপক্ষরা কুড়িগ্রাম ভুরুঙ্গামারীতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু পাবনায় ৭ দিনব্যাপী বৃক্ষরোপন অভিযান ও মেলার উদ্ধোধন গাজীপুরে  বিএনপির চার নেতা বহিষ্কার রামগঞ্জে এন সি পি র কমিটি গঠন  লরেন্স ফেস্টিভ্যালে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ড. শাহাদাত হোসেন ও এমপি সালমা জাহিদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সাক্ষাৎ রামগঞ্জে এন সি পি র  ২১ সদস্যের কমিটি ঘোষনা  অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় কুচক্রী মহলের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে যুবদল নেতার সংবাদ সম্মেলন শরীয়তপুরের নতুন জেলা প্রশাসক হলেন তাহসিনা বেগম

প্লাস্টিকের স্রোতে ভাসছে উপকূল- সংকট মোকাবেলায় এগিয়ে আসছে মানুষ

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 12:58:50 pm, Tuesday, 22 April 2025
  • 42 বার পড়া হয়েছে

প্লাস্টিকের স্রোতে ভাসছে উপকূল- সংকট মোকাবেলায় এগিয়ে আসছে মানুষ

শওকত আলম, কক্সবাজার

    

বাংলাদেশের উপকূলজুড়ে বাড়ছে প্লাস্টিক দূষণের মাত্রা। সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে উপচে পড়ছে বোতল, ব্যাগ, মোড়কসহ নানা ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য। এতে যেমন হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের জীবনযাপনও। সম্প্রতি উপকূলীয় একটি সৈকতে তোলা একটি ছবিতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি একাই সৈকত থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করছেন। এই একক প্রচেষ্টা যেমন প্রশংসনীয়, তেমনি তা আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতার প্রতিফলনও।

জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর পৃথিবীর সমুদ্রে প্রায় ৮০ লাখ টন প্লাস্টিক পড়ে। এর বড় একটি অংশ আসে অব্যবস্থাপনার কারণে। প্লাস্টিকের এই বিষাক্ত জাল ফাঁদে পড়ে যায় মাছ, কচ্ছপ, পাখিসহ অসংখ্য প্রাণী। বাংলাদেশের মতো উপকূলীয় দেশগুলোতে এর প্রভাব আরও ভয়াবহ—নদীর সঙ্গে সমুদ্রেও পৌঁছে যাচ্ছে শহর থেকে আসা অব্যবস্থাপিত বর্জ্য।

কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, কুয়াকাটা, মহেশখালী, ভোলা, খুলনার দ্বীপাঞ্চলসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় সৈকতের চিত্র প্রায় এক—যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্যে ঢেকে গেছে বালুকাবেলা। অতিরিক্ত পর্যটক প্রবাহ ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রতিদিন বেড়েই চলেছে দূষণের মাত্রা।

প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে ভেঙে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়, যা মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করে। এই প্রাণীগুলো মানুষের খাদ্য তালিকায় থাকায়, পরোক্ষভাবে এই বিষাক্ত কণাগুলো মানবদেহেও প্রবেশ করছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাবে দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সার, হরমোনজনিত সমস্যা ও প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

সত্ত্বেও, মানুষ থেমে নেই। ছবির ওই ব্যক্তি, এবং তার মতো অনেকেই নিজ উদ্যোগে সৈকত পরিষ্কারে নামছেন। বিভিন্ন স্থানীয় সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবক দল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরাও সচেতনতামূলক অভিযানে অংশ নিচ্ছে। “সেভ দ্য বে”, “ক্লিন কক্সবাজার”, “গ্রিন বাংলাদেশ” ইত্যাদি সংগঠন নিয়মিত পরিষ্কার অভিযানের পাশাপাশি সচেতনতামূলক সেমিনার, ওয়ার্কশপ আয়োজন করে আসছে।

পরিবেশবিদ ও নীতিনির্ধারকদের মতে, এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন কিছু কার্যকর উদ্যোগ:

প্লাস্টিক নিষিদ্ধকরণ: সিঙ্গল-ইউজ প্লাস্টিক উৎপাদন ও ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

পরিবেশবান্ধব বিকল্প: পাট, কাগজ, কাঁচের তৈরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্যের ব্যবহার বাড়ানো।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: শহর ও উপকূলে সুনির্দিষ্ট বর্জ্য আলাদা করে সংগ্রহ ও রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা।

আইন প্রয়োগ: পরিবেশ আইন বাস্তবায়নে প্রশাসনের কঠোর মনোভাব।

সচেতনতা: স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পরিবেশ শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি।

প্লাস্টিক দূষণ শুধু একটি পরিবেশগত ইস্যু নয়—এটি স্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্য ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্বের প্রশ্ন। একক বা ব্যক্তি উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও প্রয়োজন রাষ্ট্রীয়, জাতীয় ও বৈশ্বিক সমন্বিত পদক্ষেপ। এখনই সময়, নিজেদের জীবন ও প্রকৃতিকে বাঁচাতে আমরা সবাই যেন দায়িত্ব নিই—অন্যথায়, দূষণের ঢেউয়ে একদিন হয়তো আমাদের অস্তিত্বও বিলীন হয়ে যাবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

সংবাদ প্রকাশের পর কৈবর্তখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শোকজ

প্লাস্টিকের স্রোতে ভাসছে উপকূল- সংকট মোকাবেলায় এগিয়ে আসছে মানুষ

আপডেট সময় : 12:58:50 pm, Tuesday, 22 April 2025

শওকত আলম, কক্সবাজার

    

বাংলাদেশের উপকূলজুড়ে বাড়ছে প্লাস্টিক দূষণের মাত্রা। সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে উপচে পড়ছে বোতল, ব্যাগ, মোড়কসহ নানা ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য। এতে যেমন হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের জীবনযাপনও। সম্প্রতি উপকূলীয় একটি সৈকতে তোলা একটি ছবিতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি একাই সৈকত থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করছেন। এই একক প্রচেষ্টা যেমন প্রশংসনীয়, তেমনি তা আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতার প্রতিফলনও।

জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর পৃথিবীর সমুদ্রে প্রায় ৮০ লাখ টন প্লাস্টিক পড়ে। এর বড় একটি অংশ আসে অব্যবস্থাপনার কারণে। প্লাস্টিকের এই বিষাক্ত জাল ফাঁদে পড়ে যায় মাছ, কচ্ছপ, পাখিসহ অসংখ্য প্রাণী। বাংলাদেশের মতো উপকূলীয় দেশগুলোতে এর প্রভাব আরও ভয়াবহ—নদীর সঙ্গে সমুদ্রেও পৌঁছে যাচ্ছে শহর থেকে আসা অব্যবস্থাপিত বর্জ্য।

কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, কুয়াকাটা, মহেশখালী, ভোলা, খুলনার দ্বীপাঞ্চলসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় সৈকতের চিত্র প্রায় এক—যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্যে ঢেকে গেছে বালুকাবেলা। অতিরিক্ত পর্যটক প্রবাহ ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রতিদিন বেড়েই চলেছে দূষণের মাত্রা।

প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে ভেঙে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়, যা মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করে। এই প্রাণীগুলো মানুষের খাদ্য তালিকায় থাকায়, পরোক্ষভাবে এই বিষাক্ত কণাগুলো মানবদেহেও প্রবেশ করছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাবে দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সার, হরমোনজনিত সমস্যা ও প্রজনন ক্ষমতা হ্রাসের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

সত্ত্বেও, মানুষ থেমে নেই। ছবির ওই ব্যক্তি, এবং তার মতো অনেকেই নিজ উদ্যোগে সৈকত পরিষ্কারে নামছেন। বিভিন্ন স্থানীয় সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবক দল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরাও সচেতনতামূলক অভিযানে অংশ নিচ্ছে। “সেভ দ্য বে”, “ক্লিন কক্সবাজার”, “গ্রিন বাংলাদেশ” ইত্যাদি সংগঠন নিয়মিত পরিষ্কার অভিযানের পাশাপাশি সচেতনতামূলক সেমিনার, ওয়ার্কশপ আয়োজন করে আসছে।

পরিবেশবিদ ও নীতিনির্ধারকদের মতে, এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন কিছু কার্যকর উদ্যোগ:

প্লাস্টিক নিষিদ্ধকরণ: সিঙ্গল-ইউজ প্লাস্টিক উৎপাদন ও ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

পরিবেশবান্ধব বিকল্প: পাট, কাগজ, কাঁচের তৈরি পুনর্ব্যবহারযোগ্য পণ্যের ব্যবহার বাড়ানো।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: শহর ও উপকূলে সুনির্দিষ্ট বর্জ্য আলাদা করে সংগ্রহ ও রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা।

আইন প্রয়োগ: পরিবেশ আইন বাস্তবায়নে প্রশাসনের কঠোর মনোভাব।

সচেতনতা: স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পরিবেশ শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি।

প্লাস্টিক দূষণ শুধু একটি পরিবেশগত ইস্যু নয়—এটি স্বাস্থ্য, জীববৈচিত্র্য ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অস্তিত্বের প্রশ্ন। একক বা ব্যক্তি উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও প্রয়োজন রাষ্ট্রীয়, জাতীয় ও বৈশ্বিক সমন্বিত পদক্ষেপ। এখনই সময়, নিজেদের জীবন ও প্রকৃতিকে বাঁচাতে আমরা সবাই যেন দায়িত্ব নিই—অন্যথায়, দূষণের ঢেউয়ে একদিন হয়তো আমাদের অস্তিত্বও বিলীন হয়ে যাবে।