
সোমনাথ সেন শুভ ,পটিয়া প্রতিনিধি
পটিয়ায় ৫ লাখ টাকার লোভে প্রতিবেশীই হয়ে উঠলো শিশু আয়াতের অপহরণকারী। চিপস ও আচারের লোভ দেখিয়ে মো. আয়াত -৪- নামের এক শিশুকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনা ঘটে তারই প্রতিবেশীর মাধ্যমে।
এ ঘটনায় দুই অপহরণকারীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। তারা হলেন, পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের বাড়ৈকারা গ্রামের মো. আফছারের ছেলে মো. হৃদয় -৩০- ও কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ছিরার টেক এলাকার নাসির আহমদের ছেলে রাসেল -১৯-।
স্থানীয়দের সহায়তায় অপহৃত শিশু মো. আয়াতকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া শিশু উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের বাড়ৈকারা গ্রামের প্রবাসী মাহাবুল আলমের ছেলে। গেল মঙ্গলবার -৪ ফেব্রুয়ারি- বিকেলে বাড়ির সামনে থেকে আয়াতকে অপহরণ করা হয়।
শিশু আয়াতের চাচা মো. হাবিবুল্লাহ জানান, ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আয়াত বাড়ির সামনে রাস্তার উপর খেলছিল। সন্ধ্যার পরও সে বাড়িতে না ফেরায় সবাই তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এমনকি আশপাশের পুকুরেও জাল ফেলে খোঁজ করা হয়।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে পরিবারের নম্বরে ফোন করে জানানো হয়, আয়াতকে অপহরণ করা হয়েছে এবং তাকে জীবিত ফেরত পেতে হলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। পরে চাচা হাবিবুল্লাহ ওই নম্বারে ফোন করলে অপহরণকারী মো. হৃদয়ের কণ্ঠ চিনতে পারেন।
হৃদয় প্রতিবেশী হলেও বিষয়টি তাকে বুঝতে না দিয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় যোগাযোগ করেন। অন্যদিকে, প্রতিবেশীরা কৌশলে হৃদয়কে ফোন করে আয়াতকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাকেসহ খোঁজার জন্য গ্রামে আসতে বলেন। এলাকায় আসার পর স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলে।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হৃদয় স্বীকার করে, সে আয়াতকে অপহরণ করে কর্ণফুলী চরলক্ষ্যা এলাকায় তার বন্ধু রাসেলের বাসায় আটকে রেখেছে। পরে স্থানীয় জনতা কৌশলে হৃদয়কে দিয়ে রাসেলকে ফোন করিয়ে শান্তিরহাট এলাকায় শিশু আয়াতকে আনতে বলে।
হৃদয়ের কথামতো রাসেল শিশু আয়াতকে নিয়ে শান্তিরহাটে আসলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা জনতা তাকে ধরে ফেলে এবং আয়াতকে উদ্ধার করে। উত্তেজিত জনতা অপহরণকারী হৃদয়কে গণপিটুনি দেয়। পরে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ এসে দুই অপহরণকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় আয়াতের চাচা মো. হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি পটিয়া থানায় মো. হৃদয় ও রাসেলসহ অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পটিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. জুয়েল উদ্দিন বলেন, চিপস ও আচারের লোভ দেখিয়ে শিশু আয়াতকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করার ঘটনায় স্থানীয় জনতা দুইজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। অপহৃত শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে এবং আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।