স্টাফ রিপোর্টার
ভোলা।।
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রভাবিত হচ্ছে। এতে জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে নিম্নাঞ্চলের ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ভোলার ৩০ হাজার মানুষ। চরম দুর্ভোগে এবং মানবেতর দিন কাটাচ্ছে তারা। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে দু-এক দিনের মধ্যে জোয়ার কমলেও কমবে না বৃষ্টি।
ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের পাঁচটি,পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের দুইটি,পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের দুইটি, দৌলতখান উপজেলার মদনপুর, নেয়ামতপুর; তজুমদ্দিন উপজেলার চর মোজাম্মেল, চর জহির উদ্দিন; চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকরি-মুকরি, ঢালচর, চর নিজাম ও মনপুরা উপজেলার কলাতলির চরসহ নিম্নাঞ্চলের ১৭টি গ্রাম জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে পানিবন্দিদের নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন জেলা প্রশাসক। ইউএনওদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে তাদেরকে সাহায্য করা হচ্ছে। পানিবন্দিদের মাঝে বিতরণ করা হবে শুকনো খাবার।
সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা বাবুল চৌকিদার বলেন, গত ছয়দিন ধরে আমরা জোয়ারের পানিতে পানিবন্দি আছি। ঠিকমতো চুলায় আগুনও জ্বালাতে পারছি না। জলাবদ্ধতায় বড়দের পাশাপাশি শিশুদেরও বেড়েছে নানান অসুখ-বিসুখ।
চর জহির উদ্দিনের সোনাডাঙ্গা গ্রামের ইউপি মেম্বার আওরাব হোসেন বলেন, একদিকে জোয়ার, অন্যদিকে বৃষ্টি। চারদিকে জলাবদ্ধতায় আমরা ভালো নেই।
চর নিজামের ইয়াকুব আলী, হাসান আলী ও নয়নসহ পানিবন্দি আরও অনেকে বলেন, জোয়ার এলে আমরা ঘরের খাটের ওপর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসে থাকি। জোয়ার নেমে গেলে খাট থেকে নামি। কিন্তু বৃষ্টির পানির কারনে কোনোদিকেই যেতে পারছি না। জোয়ারের পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় গবাদিপশু রাখতে কষ্ট হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে গরু-মহিষ ও হাঁস-মুরগি ভেসে যাওয়ার ভয়ে থাকি।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান বলেন, শনিবার (৫ আগষ্ট) বিকেলে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়েছে বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। ০৬ আগষ্ট রবিবার পানি আরও বাড়বে। আগামী দু একদিনের মধ্যে পানির পরিমাণ কমলেও বৃষ্টিপাত কমার কোন সম্ভাবনা নেই।
তিনি আরও বলেন, জোয়ারের পানিতে জেলার কোথাও বেড়িবাঁধ ধ্বংসের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিভিন্ন খাল দিয়ে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পানি মানুষের বসতঘর ঢুকেছে।
অন্যদিকে ভোলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. মাহবুব আলম জানান, শনিবার বেলা ১২টা থেকে রোববার বেলা ১২টা পর্যন্ত জেলায় ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও এক সপ্তাহ এ বৃষ্টিপাত থাকবে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো.আরিফুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে জানান, জেলার প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করতে। ইতিমধ্যে কয়েকটি উপজেলা থেকে তালিকা পেয়েছি। খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হবে