
জাহিদুল ইসলাম
জামালপুরের বকশীগঞ্জে আজ সকালে যেন নেমে আসে মৃত্যুর ছায়া, মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে ঘটে গেল দুই নারীর বিভীষিকাময় মৃত্যু । একদিকে রহস্যময়ভাবে আগুনে পুড়ে ঝলসে যাওয়া এক অজ্ঞাত নারীর মরদেহ, অন্যদিকে বিদ্যুতের ছোবলে নিথর দেহ হয়ে ফিরলেন এক বিধবা নারী।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা। বগারচর ইউনিয়নের বান্দের পাড় গ্রাম। সূর্য ওঠার সাথে সাথেই লোকজনের চোখে পড়ে গা ছমছমে দৃশ্য, একজন নারীর অর্ধদগ্ধ মরদেহ পড়ে আছে পাটক্ষেতে। পুরো শরীর আগুনে পুড়ে বিকৃত, মুখ চিনে নেওয়ার উপায় নেই। চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে গন্ধ, পচা মানুষের গন্ধ।
খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। পোড়া দেহ দেখে পুলিশের সদস্যরাও স্তব্ধ। স্থানীয়দের মুখে মুখে তখন একটাই কথা এটা কি খুন ? নাকি অন্য কোনো ভয়াবহ সত্য লুকিয়ে আছে এর পেছনে ?
ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, মরদেহের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে। এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা নিশ্চিত। পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে পিবিআইকে জানানো হয়েছে। তদন্ত চলছে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
মাত্র এক ঘণ্টা পর, সকাল ৯টার দিকে আরেকটি মৃত্যু ঘটে। এবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হলো নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের খোর্শেদা বেগম নামের এক বিধবা নারীর। নিজ জমিতে সেচ দিতে গিয়ে পাম্প চালানোর সময় হঠাৎই বৈদ্যুতিক ছোবল। দগদগে শরীর নিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই প্রাণ হারান।
একদিনে দুটি নারীর রহস্যময় ও করুণ মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো বকশীগঞ্জ জুড়ে। মানুষ বলছে এ যেন মৃত্যুর সকাল। পাটক্ষেতে পোড়া মরদেহ আর বিদ্যুতের ছোবল, দুই রহস্যময় মৃত্যু এখন স্থানীয়দের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
থানা পুলিশ জানিয়েছে, অজ্ঞাত নারীর পরিচয় শনাক্তে তৎপর রয়েছে পিবিআই। আর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মৃত্যুকে আপাতদৃষ্টিতে দুর্ঘটনা বলা হলেও, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই দুই মৃত্যু কি নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে আরও গভীর কোনো ষড়যন্ত্র? এই প্রশ্ন এখন কাঁপাচ্ছে পুরো এলাকা। উত্তর দেবে সময়, আর তদন্ত।