সামাউন আলী, সিংড়া(নাটোর)সংবাদদাতা।।
বোরো ধান আবাদের পর করোনার দুর্যোগেও আমন রোপণ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চলনবিল অঞ্চলের কৃষকেরা। বৃষ্টি নির্ভর আমন ধান রোপণের জন্য খ্যাতনামা প্রবচক খনা বলেছেন,
‘আষাঢ় মাসে বান্ধে আইল তবে খায়
বহু শাইল আষাঢ়ে পনের শ্রাবনে পুরো ধান লাগাও যতো পারো।’
আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণ মাসের ২৯ দিন অতিবাহিত হলেও আশানরূপ বৃষ্টি না হওয়ায় বৃষ্টি নির্ভর আমন ধান চাষে বিপাকে পড়ছে সিংড়া উপজেলার চলনবিল অঞ্চলের কৃষকরা। সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে সেচ দিয়ে আমন ধান রোপণে কৃষকের বিঘাপ্রতি প্রায় ১০০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি খরচ হচ্ছে।
উপজেলার ০৮নং শেরকোল ইউনিয়নের ভাগনাগরকান্দী গ্রামের কৃষক খলিল সরদার, সাগর আলী ও বাবুল হোসেন ,জানান, শ্রাবন মাসের শুরুতে তেমন বৃষ্টিপাত না হলেও কৃষকরা সেচের পানি দিয়ে তাদের উচু জমি গুলো পূর্বেই রোপন শেষ করেছে। বর্তমানে নিচু জমি গুলো থেকেও পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা তরিঘড়ি শুরু করেছে আমন চাষে।
উপজেলার ০৫ নং চামারী ইউনিয়নের চক কালিকাপুর গ্রামের কৃষক মিঠু এবং ফিরোজ জানান, শ্রাবণের মাসের চলতি সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন মাঠ গুলো ছিল কৃষকদের আমন চাষে পদচারনায় উৎসব মুখর। অনেকের ছোট ডিপ মেশিন গুলো বন্ধ থাকায় সেলো মেশিনের পানি দিয়ে আমন রোপন শেষ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পরেছেন। চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধানের ভালো মূল্য পাওয়ায় এবার আমন চাষেও কৃষরা উঠে পড়ে লেগেছেন। এ উপজেলার কৃষকরা সাধারণত শ্রাবণের শেষের মধ্যেই আমন ধান রোপন সম্পন্ন করে থাকেন। মাঠ গুলো ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি মাঠে প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি জমি রোপন করা শেষ করেছেন কৃষকরা।
উপজেলার ও অনান্য প্রায় সব ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায় কিছু স্থানে চারা গাছ তুলছেন তারা। আবার কিছু স্থানে গিয়ে দেখা যায় চারা রোপণ করতে শুরু করেছেন কৃষক। এছাড়া ও দেখা যায় কেউ পাট কেটে ঘরে তোলার পর ঐ জমি রোপা ধান চাষের জন্য উপযোগী করে তুলছেন, আবার কেউ আউশ ধান কাটার পর ঐ জমিতে পুনরার আমন ধানের চারা রোপনের জন্য উপযোগী করে তুলছেন। সবকিছু মিলিয়ে এ উপজেলার কৃষক ও কৃষিতে নিয়োজিত শ্রমিকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন আমন নিয়ে। এদের মধ্যে নারী শ্রমিকদেরও কাজ করতে দেখা যায় বেশ কয়েক জায়গায়।
এ বিষয়ে সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা,সেলিম রেজা জানান, শ্রাবণ মাসের মধ্য রোপা লাগানোর কাজ শেষ করতে পারলে আমন আবাদের কোনো ক্ষতি হবে না। এবার উপজেলায় ২১ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ যাবত এ উপজেলায় মোট ১৫ হাজারের ও বেশি হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। আমন ধানের ব্যপক ফলনের লক্ষ্য নিয়ে আমরা কঠোর লকডাউনের মধ্যে কাজ করছি ও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আবহাওয়া অনুকল থাকলে আশা করি আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব।