সাকিব ফারহান
কুমারখালী প্রতিনিধি (কুষ্টিয়া)।।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সোমবার বিকেলে দুপক্ষের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে একজন আহত হয়।
পরে সন্ধায় প্রতিপক্ষ বাদশা ফকিরে ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া যায়। ঘটনাটি জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হাসিমপুর গ্রামে ঘটেছে। আহত ইমন ইউনিয়নের দয়রামপুর গ্রামের পান্না সরদারের ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাকাসী সুত্রে জানা গেছে, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্র জগন্নাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ খান গ্রুপের সাথে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আজম হান্নান গ্রুপের সমর্থকদের মাঝে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছে।
বিরোধের জেরে গত ১৯ এপ্রিল দুপুরে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে সাধারণ সম্পাদক গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এরপর থেকেই দুপক্ষের দ্বন্দ প্রকাশ্যে চলে আসে। গত কয়েকমাসে দুপক্ষের দফায় দফায় হামলা, মামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে গত ৬ মে রাতে গুলির ঘটনাও ঘটে।
দুপক্ষের চলমান দ্বন্দ্বে এলাকায় যেকোন ঘটনায় গ্রুপিং তৈরি হয়। এরই জেরে গত সোমবার (২৮ জুন) বিকেলে সভাপতির সমর্থক হাসিমপুর গ্রামের বাদশা ফকিরের ছেলে রাজার সাথে সাধারণ সম্পাকের সমর্থক লতিফ মেম্বরের ভাতিজা নিলয়ের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মাঝে সংঘর্ষ হয়। এতে সাধারণ সম্পাকের সমর্থক ইমন মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর সংঘর্ষের জের ধরেই ওইদিন সন্ধায় লতিফ মেম্বার তার লোকজন নিয়ে বাদশা ফকিরের বাড়িতে হামলা চালায়। এতে ঘর ও ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর এবং ঘরে থাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এবিষয়ে বাদশা ফকির বলেন, ‘ আমার ছেলে কোথায় কি করেছে জানিনা। আমি চেয়ারমান পক্ষের সমর্থক। তাই প্রতিপক্ষরা পূর্বশত্রুতার জেরে আমার বাড়িতে সন্ধায় ভাংচুর ও লুটপাট হয়। এতে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য রাখা নগদ তিন লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার লুট হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত লতিফ মেম্বরকে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ খান বলেন, বাদশা ফকির আমার সমর্থক। মাঝে মাঝে ওদের বাড়িতে যায়। সেই ক্ষোভে প্রতিপক্ষ সাধারণ সম্পাদকের আদেশেই লতিফ মেম্বারের লোকজন বাদশার বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আজম হান্নান বলেন, ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়, বিচ্ছিন্ন। তবুও রাজনীতিতে রূপ নিয়েছে। তুচ্ছ ঘটনায় আমাদের একজন আহত হয়েছে। থানায় মামলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, কিছু লোকজন প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। বেড়ায় কয়েকটি কোপও দিয়েছিল। কিন্তু লতিফ মেম্বর ভাংচুরে বাঁধা দিয়ে লোকজনকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার বলেন, ইমনের মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথায় তিনটি সেলায় দেওয়া হয়েছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে তুচ্ছ ঘটনায় দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আহতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তবে ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি।