
তৌহিদ বেলাল, কক্সবাজার।।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১৩ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার। এদিন সকাল দশটায় সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। প্রধান বক্তা থাকবেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এমপি, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসতে নানামুখি প্রচারণা ও তদবির চালাচ্ছেন এক ডজনেরও অধিক নেতা। এদের মধ্যে কেউ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে, কেউ সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে, কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন। অনেকে সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতাদের নিকট জোর তদবির-লবিং চালাচ্ছেন- এমনটাই জানা গেছে।
জানা যায়, সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমদ সিআইপি, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান ও জেলা সহসভাপতি রেজাউল করিম।
সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক মাশেদুল হক রাশেদ, কক্সবাজার-২ (মহেশখালি-কুতুবদিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশেক উল্লাহ রফিক, ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিত দাশ, ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব, রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল এবং জেলা কমিটির সদস্য রাশেদুল ইসলাম।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, এবারের সম্মেলনে মোট কাউন্সিলর ৪০৬ জন। এর মধ্যে জেলা কমিটির ৭১ জন, প্রতি উপজেলা কমিটি থেকে ৫জন করে এগারো উপজেলার ৫৫ জন এবং প্রতি ১০ হাজারে একজন করে ২৮০ জন- মোট ৪০৬ জনের কাউন্সিলর তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, জেলার নয়টি উপজেলা ও দুটি সাংগঠনিক উপজেলার মধ্যে ইতোমধ্যেই দশ উপজেলার সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। তবে রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল এখনো হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কাউন্সিল ছাড়াই সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা দিয়েছিলেন দলের তৎকালিন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। পরে ওই বছরের ১৩ অক্টোবর ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
জানা যায়, জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফাকে ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক করা হলে জেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান।
গেল ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে এসেছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় প্রধানের ঘুরে যাওয়ার পর মাত্র ছয়দিনের মাথায় এই সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে আরো বেশি চাঙা ভাব বিরাজ করছে।
তৃণমূলের একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগামীতে সরকার বিরোধী আন্দোলন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। তাদের দাবি, এমন নেতৃত্ব দরকার যাঁরা সকল বিতর্কের উর্ধ্বে।