
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি।।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কয়েক দিনের টানা ভারি বৃষ্টিপাতে বেড়েই চলছে বন্যার পানি। এতে নিচু এলাকার রাস্তাঘাট ও হাট-বাজার তলিয়ে যাচ্ছে। বাড়িঘরে পানি উঠে যাওয়ায় অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে চলছেন। হাওরাঞ্চলের বাড়িঘরের মানুষ পানিবন্ধি অবস্থায় আছেন। এতে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। কৃষক পরিবারের মানুষজন সবার আগে গোলায় থাকা ধান সরিয়ে অন্যত্র নিতে হচ্ছে। সেই সাথে গবাদিপশু। পরে পরিবারের মানুষকে নিয়ে যেতে হচ্ছে। যদিও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
৩ জুলাই সোমবার সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে নিচু এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌকাযোগে কোন রকমে মানুষ চলাচল করছেন। এ সময় আবদুল কাদির, সিহাব উদ্দিন সহ পথচারী জনতাদের মধ্যে অনেকে বলেন, হঠাৎ করে বন্যার পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় আমরা অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। রহিম আলী, রবিদাস, সুহেল মিয়া সহ পানিবন্ধি মানুষের মধ্যে অনেকে বলেন, মুল বসত ঘরে এখনো পানি না উঠলেও বাড়ি তলিয়ে গেছে। সাথে তলিয়ে গেছে লেট্রিন। এতে চরম কষ্টে আছি। সাথে অনেক টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। তাই পরিবারের লোকদের নিয়ে কি করবো বা কোথায় যাবো বুঝতে পারছি না। আমরা নিজের ঘর ছাড়তে চাই না। তাই ঘরে একটি চৌকির উপর আরেকটি চৌকি তুলে কোন রকমে বসবাস করছি। অনেকে আবার ঘরে বাঁশের মাচাং বানিয়ে বসবাস করছেন। আরো যদি পানি বাড়ে, তাহলে ঘর ছেড়ে অন্যত্র যেতে হবে। তাই নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ইতোমধ্যে অনেকে নিজ বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। এনামুল হক, আবদুল খালিক সহ কৃষকদের মধ্যে অনেকে বলেন, আমাদের সমস্যা বহুমুখি। আগে ঘরের ধান ও গবাদিপশু সরাতে হচ্ছে। পরে পরিবারের মানুষ নিয়ে নিরপাদে যেতে হবে। এখনো বাড়ি ছাড়িনি। আশায় আছি এখনো পানি থেমে গেলে বিপদ থেকে রক্ষা হয়। কিন্তু অভিরাম চলছে বৃষ্টি। মাঝে মধ্যে থামলেও আবার কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি চলে আসে। এতে পানি তো বেড়েই চলছে। এমতাবস্থায় গত বছরের ভয়াবহ বন্যার অশনি সংকেত দেখা যাচ্ছে। চিলাউড়া-হলদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, এ পর্যন্ত কয়েকটি পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাজেদুল ইসলাম বলেন, ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত কিছু মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন