
নুর মোহাম্মদ, কক্সবাজার:
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের নিরাপত্তা ও প্রশস্তকরণে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা আগামী ৪ মাসের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
১ সেপ্টেম্বর বিচারপতি জিনাত হক ও মাননীয় বিচারপিত আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চে একটি রিটের শুনানি শেষে বিচারক এই আদেশ দেন।
এর আগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের নিরাপত্তা ও প্রশস্তকরণের দাবিতে মহামান্য হাইকোর্ট ‘বিভাগে জনস্বাৰ্থমূলক রীট পিটিশন দায়ে করেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও রামু মিঠাছড়ির কৃতি সন্তান তাহসিন মোক্তার নিশান।
বাদী জানিয়েছেন, দেশের পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে যাতায়াতের প্রধান প্ৰবেশদ্বার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। প্ৰতিদিন হাজার হাজার যাত্রী, পণ্যবাহী ট্রাক, পর্যটন বাস এবং ব্যক্তিগত যানবাহন এই মহাসড়ক ব্যবহার করছে| অথচ দেশের সবচেয়ে ব্যস্তম ও গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির একাধিক অংশ এখন “দু’র্ঘটনাপ্রবণ মৃ’ত্যু ফাঁদে” পরিণত হয়েছে। দেশের ব্যস্ততম ও মহাগুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘ’টনা। ফলশ্রুতিতে, ঘটছে প্রাণ’হানি, বাড়ছে প’ঙ্গুত্ব। একেকটি দু’র্ঘটনা একেকটি পরিবারকে তছ’নছ করে দিচ্ছে।
গত কয়েক বছরে এ মহাসড়কে শত শত মানুষ নিহ’ত ও হাজারো মানুষ আহ’ত হয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও নাগরিক সংগঠন জানিয়েছে।
টানা দু’র্ঘটনার কারণে এলাকায় জনমনে আ’তঙ্ক বিরাজ করছে এবং মহাসড়কটির দ্রুত চার বা ছয় লেইনে উন্নীত করার জন্য জনদাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।
নাগরিক সমাজ, পরিবহন সংগঠন, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মগুলো ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও সমাবেশের মাধ্যমে বিষয়টি সামনে তুলে ধরেছে। এ প্রেক্ষাপটে কক্সবাজারের সন্তান ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী তাহসিন মোক্তার নিশান মহাসড়কটি প্রশস্তকরণ ও দ্রুত নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে মহামান্য হাইকোর্ট ‘বিভাগে একটি জনস্বাৰ্থমূলক রীট পিটিশন দায়ে করেন।
১ সেপ্টেম্বর বিচারপতি জিনাত হক ও মাননীয় বিচারপিত আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের একটি দ্বৈত বেঞ্চে এ রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিন্তে হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং আগামী ৪ মাসের মধ্যে মহাসড়কটির নিরাপত্তা ও প্রশস্তকরণ সংক্ৰান্ত কি কি পদক্ষেপ গ্ৰহণ করা হয়েছে তা হাইকোর্টকে জানাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্ৰদান করেন। আদালেত জনগুরুত্বপূর্ণ উক্ত মামলায় রীট আবেদনের পক্ষে শুনানী করেন কক্সবজারের সন্তান ব্যারিস্টার নওরোজ মোহাম্মদ রাসেল চৌধুরী।
আদালতের এ নির্দেশনায় সাধারণ মানুষ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক প্ৰশস্তকরণ ও আধুনিকায়নের কাজ দ্রুত শুরু হবে, দু’র্ঘটনা কমবে এবং যাত্রী ও চালকরা একটি নিরাপদ মহাসড়ক পাবেন।
সংশ্লিষ্ট মহল মেনে করছে, এ মহাসড়কের লেইন বৃদ্ধি শুধু দু’র্ঘটনা কমাবে না, বরং কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প অর্থনীতি, বাণিজ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের পথও সুগম করবে মনে করছে স্থানীয় বাসিন্দারা।