মোঃ নুর উদ্দিন শেখ
পিরোজপুর- প্রতিনিধি।।
আজ- খুলছে পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কে লেবুখালী ফেরিঘাটের পায়রা সেতু। এ উপলক্ষে সেতু ও সেতু এলাকা সেজেছে ব্যানার ফেস্টুন, লাল সবুজ বাতি ও বাহারি রঙয়ের পতাকায়।
আজ রোববার (২৪ অক্টোবর) সেতু জনসাধারণের পারাপারের জন্য উন্মুক্ত ও শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উদ্বোধনের সর্বশেষ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠান স্থল পরিদর্শন করেছেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগসহ সংশ্লিষ্টরা।
সব আয়োজন সন্তোষজনক, আজ রোববার দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেতুর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবদুল হালিম।
বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের পায়রা নদীর ওপর ২০১৬ সালে লেবুখালী-পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। ইতোমধ্যে মূল সেতুর শত ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
এই সেতুতে বেশ কিছু নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিশেষ করে নদীর মধ্যে এবং পাশে থাকা পিলারে যাতে কোনো নৌ-যান ধাক্কা দিতে না পারে সে জন্য পিলারের পাশে নিরাপত্তা পিলার স্থাপন করা হচ্ছে।
এছাড়া বজ্রপাত কিংবা ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেতুর কোনো ক্ষতি হলো কিনা সেটি মনিটরিংয়েরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
চীনের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘লনজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে। ১৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯.৭৬ মিটার প্রস্থের এই সেতুটি ক্যাবল দিয়ে দুই পাশে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে নদীর মাঝে একটি মাত্র পিলার ব্যবহার করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের কর্নফুলীর ব্রিজের আদলে নির্মিত দেশের দ্বিতীয় সেতু যা এক্সক্টা ডোজ ক্যাবেল সিস্টেম এ তৈরি হয়েছে। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট, ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ বিনিয়োগে সেতুর নির্মাণ ব্যায় ধরা হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।
এদিকে পায়রা সেতু এখন নতুন একটি পর্যটন ও বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে। সেতুটি বর্তমানে উদ্বোধনের অপেক্ষায়। প্রতিদিন বিকেল ও সন্ধ্যার পরে সেতুর দুইপাড়ে অ্যাপ্রোচ সড়কে স্থানীয় এবং আশপাশের জেলা থেকে ভিড় করেনে দর্শনার্থীরা। বিশেষ করে ছুটির দিনে জনসমাগম বেশি হয় এখানে।
পরিবার ও বন্ধু বান্ধবসহ ঘুরতে আসছেন অনেকে। এক্সট্রাডোজ ক্যাবলে নির্মিত দৃষ্টি নন্দন স্বপ্নের সেতুর সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলছেন দর্শনার্থীরা। সেতু কেন্দ্রিক আগত নারী-শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার জন্য দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
এদিকে সেতুটি উন্মুক্ত হলে ব্যস্ততম সড়কে জনসাধারণের পারাপারে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এ অবস্থায় দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুর দক্ষিণ পাড়ে টোল প্লাজার আগে স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের রাস্তা পারাপারের জন্য একটি ওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবিও জানিয়েছেন অনেকে।