
নিজস্ব প্রতিবেদক
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শাসনামলে দোর্দন্ড দাপটে দাপিয়ে বেড়ানো পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার পশ্চিম বালিপাড়ার সশস্ত্র সন্ত্রাসী, মাদকব্যবসায়ী জসিম বাহিনী প্রধান মোঃ জসিম উদ্দিন হাওলাদার ও তার বাহিনীর কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি। মাত্র কয়েক বছর আগের টোকাই থেকে মাফিযা ডন হয়ে ওঠা জসিম। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শাসনামলের শেষ ৩/৪ বছরে হয়ে ওঠেন ঢাকার তেজগাঁও, কাফরুল এবং পিরোজপুর জেলার মাফিয়া ডন।
ট্রাক ও ভাঙ্গারী ব্যবসার আড়ালে নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে মাদক সম্রাজ্যের। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর একান্ত আশীর্বাদ থাকায় তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কাফরুল, তেজগাঁও ও জিয়ানগর, পিরোজপুর জেলার ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল সন্ত্রাসীরা তার আশ্রয়ে চলে আসে। জসিম হয়ে ওঠে ঢাকা তেজগাও, বনানী, কাফরুল, যাত্রাবাড়ী এলাকার সরকারী, বেসরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পুরাতন ভবন, মেশিনারি ও মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের একক টেন্ডারবাজ। তার পিকআপ, ট্রাক, কাভার্ডভ্যানে এবং নারী-পুরুষ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয় মাকের চালান। অতি অল্প সময়ে
নামে বেনামে সে গড়ে তোলে সম্পদের পাহাড়। ক্রয় করে বিঘার পর বিঘা জমি, ফ্লাট, ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান।
মাদক ব্যবসার দাদন দিতে থাকে মাদকব্যবসায়ী যুবকদের। আওয়ামী নেতাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের সকল খরচ বহন করতে থাকে। ফলে সে হয়ে ওঠে আরো প্রভাবশালী। তার পোস্টার ফেস্টুনে ছেঁয়ে ফেলে বিভিন্ন এলাকা। ফ্যাসিজমের পতনের পর সারাদেশ থেকে ফ্যাসিস্টদের ব্যানার, পোস্টার, মূর্তি ভেঙে গুড়িয়ে দিলেও এখনো পশ্চিম বালিপাড়ার গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম জসিমের ব্যানার-ফেস্টুন। জুলাই বিপ্লবে যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন জায়গায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলাকারী জসিমের পোস্টারে হাত দেয়ার সাহস কারো হয় নি। সরকার পতনের পর সে কৌশলে তার সশস্ত্র গ্রুপের সদস্যদের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন দলে ঢুকিয়ে দিয়েছে। ফলে বিভিন্ন দলের ভিতর চলছে জসিমকে কোন পদ দেয়ার লবিং ও শেল্টারের প্রক্রিয়া। জিয়ানগর উপজেলায় তার নামে বিভিন্ন মামলা ও সাধারন ডায়েরি হলেও সে বা তার গ্রুপের কেউ এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় ভুক্তভোগীরা আতঙ্কগ্রস্হ। জসিম গ্রুপের নির্যাতন নীরবে মুখ বুঝে সহ্য করতে হচ্ছে এখনো। জিয়ানগরের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী যুবক এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরকে ধারকর্জের নামে কয়েক কোটি টাকা দিয়েছে। ফলে জসিমের বিরুদ্ধে কিছু বললেই তার বাহিনীর কানে চলে যায়। তখনই তারা দেখিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। সাধারণ মানুষ মুখ খোলার সাহস রাখে না। তার দলের কাছে রয়েছে মারাত্মক অস্ত্র, যা এখনো উদ্ধার হয় নি। ৫ আগষ্টের পর জসিম গা ঢাকা দিলেও তার মাদক ব্যবসা ও গ্যাংয়ের দোর্দন্ড দাপট চলছে। তেজগাঁও কাভার্ডভ্যান শ্রমিকলীগের সেক্রেটারী জসিমের টাকা ও দাপটের কাছে সবাই জিম্মি।
সচেতন মহলের দাবী জসিমসহ তার গ্যাংয়ের সদস্যদের গ্রেফতার করা হলে জিয়ানগরের মাদক সাপ্লাই বন্ধ হবে, অনেক অস্ত্র উদ্ধার হবে এবং ফ্যাসিজমের পলাতক নেতা নামের সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার হবে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তার ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, তার ট্রাকড্রাইভার ও ক্যাডার বাহিনীর বিভিন্ন বাসা ও ফ্লাটে নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছে। সেখানে বিভিন্ন সময়ে মিটিং ও মনোরঞ্জন হয়। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল উধাও হলেও তার ভয়ানক ক্যাডার মাদক ব্যবসায়ী ও অস্ত্রধারী ক্যাডার জসিম রয়েছে বহাল তবিয়তে। সচেতন মহলের প্রশ্ন সে এখন কাদের শেল্টারে কর্মকান্ড চালাচ্ছে? পিরোজপুরের পলাতক আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে সে কিভাবে কাফরুলও তেজগাঁয় থানা এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় দিচ্ছে? আমোদ স্ফুর্তি ও মনোরঞ্জন করার দ্বায়িত্ব পালন করছে?
তাকে এবং তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করা না হলে পলাতক সন্ত্রাসীরা সম্মিলিতভাবে বড় ধরনের নাশকতা ঘটাতে পারে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী