Dhaka , Tuesday, 8 October 2024
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
রামগঞ্জ বিরেন্দ্র খাল পরিস্কার পরিদর্শনে ডিডিএলজি রফিকুল ইসলাম।। ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক নান্দাইল চৌরাস্তায় মরণফাঁদ -জানজটে নাকাল চালক ও যাত্রি।। পাবনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ একজনকে ছুরিকাঘাত আহত ১২।। পাবনায় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে দুঃস্থদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ।। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নামে কটুক্তি করার প্রতিবাদে রাজাপুরে বিক্ষোভ মিছিল।। দেবহাটা উপজেলা ছাত্রদলের কর্মী সমাবেশ।। পাইকগাছায় দুর্গাপূজা উপলক্ষে লতায় বিএনপির মতবিনিময়।। শারদীয়া দুর্গা পূজার ষষ্ঠী পূজার দিন উৎসবমুখর পরিবেশে বিরাজ করছে।। দুর্গাপুর থানার নতুন ওসি দূরুল হুদা।। নির্বিঘ্নে দুর্গোৎসব পালনে বিএনপি হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে আছে- মাহবুবের রহমান শামীম।। ঠাকুরগাঁও হরিপুরে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে শিশু নিহত এবং দুই জন আহত।। ঠাকুরগাঁওয়ে বদলি হওয়ার পরেও ছাড়ছেন না কোয়ার্টার দিচ্ছেন না ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল।। সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী অসুস্থ এম. এ মান্নান সিলেট ওসমানী হাসপাতালে।। ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন সড়ক অবরোধ নাটোরের লালপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাইয়ের বাড়িতে ভাইয়ের হামলা।।  বন্যার্তদের পাশে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেবক।। উখিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দু’এনজিও কর্মীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।। বাঁশখালীর সাবেক এমপি মোস্তাফিজসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের মামলা।। মা ইলিশ রক্ষায় পিরোজপুর সদর টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত।। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পরিবারের মাঝে অর্থ বিতরণ ভোলা জেলা প্রশাসন।। আমতলীর ব্রীজ ভেঙ্গে মর্মান্তিক নিহত হওয়া সেই ব্রীজের পাশেই নির্মিত হচ্ছে কাঠেরপুল।। রূপগঞ্জে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর অবমাননাকারীর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ।। শহীদ আব্রার ফাহাদ স্মরণে চিলমারী ছাত্রদলের মৌন মিছিল ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত।। পিরোজপুর অপহরণ মামলার আসামি গ্রেফতার।। লক্ষ্মীপুরে বন্যায় সর্বশান্ত হয়েছে ৩ লাখ কৃষক।। মোংলায় সহযোগী জেলে উদ্ধারে কুমিরের সঙ্গে লড়াই।। মধুপুর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ তিন দপ্তরের প্রধান দায়িত্বে জুবায়ের হোসেন।। পাবনার যুবক ঢাকায় ছিনতাইকারীর হাতে খুন।। পর্যটকবাহী বোটে বিদেশি মদ বিয়ার বিক্রেতা সীমান্তের পেশাদার মাদক কারবারি শাহজাহন গ্রেফতার।। লালপুরের চংধুপইল শোভ ঠাকুরপাড়া গ্রামের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি।।

হরিলুট চলছে জনস্বাস্থ্য দপ্তরে -একই দপ্তরে কেউ ৩০-৩৫ বছর কেউ আবার ১৫-২০ বছর একই জেলায় থেকে হয়েছেন কোটিপতি।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 05:13:10 am, Sunday, 29 September 2024
  • 48 বার পড়া হয়েছে

হরিলুট চলছে জনস্বাস্থ্য দপ্তরে: একই দপ্তরে কেউ ৩০-৩৫ বছর কেউ আবার ১৫-২০ বছর একই জেলায় থেকে হয়েছেন কোটিপতি।।

বিশেষ প্রতিবেদক।।
   
   
সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর যেন হরিলুটের কারখানা। বিগত পলাতক সরকারের প্রেতাত্মারা এখানে এখনো বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি লুটের রাজত্ব কায়েম রেখেছেন।
   
এদের কেউ ৩৫ বছর ধরে একই দপ্তরের বিভিন্ন শাখা প্রশাখায় ঘুরে বিগত সরকারের দূর্নীতির সহায়ক হয়ে পুরস্কৃত হয়ে প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী হয়েছেন। কারো বিরুদ্ধে আবার নিজ জেলায় ১৫ বছর ধরে দূর্নীতির রাজত্ব তৈরির একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই দপ্তরের বিভিন্ন সময়ে উঠে আসা সকল দুর্নীতির সাথেই সম্পৃক্ত আছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ নিজেও। তিনি ১৯৮৯ সাল থেকে এই দপ্তরের বিভিন্ন শাখাপ্রশাখায় হয়ে গত ৭ এপ্রিল শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ী সময়ের পুরষ্কার হিসেবে এই প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী দায়িত্ব অর্জন করেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার চাকরির বিধি বহির্ভূত প্রধান প্রকৌশলীর পথ বাগিয়ে নেওয়া সহ গুরুতর বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে তার অধীনস্থ বরিশালের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধেও।  সহিদুল ইসলাম দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঘুরে ফিরে নিজ জেলা বরিশালেই পরে আছেন এবং গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবনসহ নামে-বেনামে অজস্র সম্পদ। শত কোটি টাকার মালিক এই সহিদুল ইসলাম সম্পর্কে স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রিয়ভাজন না হলে দীর্ঘ সময় নিজ জেলায় থাকা অসম্ভব বলে জানান তার সহকর্মীদের কয়েকজন। সারাদেশে এরকম ২০-২৫ ও ১০-১৫ বছর ধরে একই জেলা বা দপ্তরে ঘুষ দূর্নীতির মাধ্যমে প্রমোশন নিয়ে এরকম কয়েকজন কর্মকর্তা নিজ জেলায় দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে। 
   
ইতিমধ্যে এদের সম্পর্কে লিখিত অভিযোগও জমা পরেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নিকট।
সারাদেশের নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক তুষার মোহন সাধু খাঁ‘র বিরুদ্ধে প্রকল্প পরিচালক থাকাকালীন সময়ে দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দেশের বাইরে পাচার করছে এমন অভিযোগে অনুসন্ধান করে জানা গেছে- তার পরিবারের একাধিক সদস্য সহ তার সন্তান লেখাপড়া করছে উন্নত দেশে। সেখানে তিনি নিজের সেকেন্ড হোম তৈরিও করেছেন। ইতিপূর্বে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর তুষার মোহন সাধু খাঁ‘র বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন শামিম হোসেন নামের এক ব্যক্তি। নানারকম দুর্নীতি -অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নিম্নমানের কাজের মধ্যদিয়ে প্রকল্পের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এসব টাকা লুটপাটের অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয় অভিযোগ পত্রে।
এদিকে তারই সহচর বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম গত পনের বছর ধরে একচেটিয়া বরিশালে রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন। ঢাকা ও বরিশালে গড়ে তুলেছে একাধিক বহুতল ভবন। নামে বেনামে কিনে রেখেছেন শতবিঘা জমি। পনের বছরে কম হলেও কয়েক শত কোটি টাকার মালিক এই সহিদুল ইসলাম বরিশাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক  প্রকৌশলী হয়েও করছেন ঠিকাদারী কাজও। যে কারণে তার দপ্তরের কোনো কাজ বাইরের ঠিকাদার পায় না বলে একাধিক অভিযোগ করেছেন বরিশালের ছয় জেলার বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঘুষ ও দূর্নীতিসহ অফিস কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণেরও একাধিক লেখিত অভিযোগ হয়েছে তার বিরুদ্ধে। তারপরও বহাল তবিয়তে বরিশালের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বে আছেন এই সহিদুল ইসলাম। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ছাড়াও দূর্নীতিবাজ প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রিয়ভাজন হওয়ার কারণে সবকিছু জেনে বুঝেও গত পনের বছর চুপ থাকতে বাধ্য ছিলেন তার সহকর্মীসহ স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সম্প্রতি পটপরিবর্তন ঘটেছে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন অনেকেই। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে লেখিত অভিযোগও দিয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ অনেকে। যদিও এসবকিছুর নেপথ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ এর সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগও তুলেছেন তাদের অনেকে। বিশেষ করে, বিশুদ্ধ পানি বা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান ও জলবায়ু প্রকল্পের পিডি থাকাবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে পুকুর চুরির অভিযোগ রয়েছে। যার সাথে সাবেক পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জ্যাকব এবং প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলো বলে জানা যায়। যা মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত হলেই নজীরবিহীন লুটপাট স্পষ্ট হবে বলে জানান একাধিক ঠিকাদার। 
  
অনুসন্ধানে জানা গেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বরিশাল সার্কেল এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ এবং নিজে একজন আত্মীয়কে দিয়ে ঠিকাদারীর সব কাজ করানোর অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ইতিপূর্বে একাধিক অভিযোগ পত্র প্রদান করেছেন বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুরের কয়েকজন ঠিকাদার। বরিশালের মেসার্স সিকদার এন্টারপ্রাইজ এর মনির হোসেন জানান, তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম নিজে তার আত্মীয়-স্বজনের নামে ঠিকাদারি  কাজ করাচ্ছেন। যে কারণে দরপত্র আহ্বানে সাড়া দেওয়া ঠিকাদারকে ডেকে আগেই সাবধান করেন এবং  ঠিকাদারকে অনুরোধ করেন যে, এই কাজে আপনি অংশগ্রহণ করবে না। এমনকি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরিশাল কার্যালয়ে নিজের অফিস কক্ষে ইন্টেরিয়াল কাজ কোনো টেন্ডার ছাড়া নিজেই তা করে নিয়েছেন। এটি প্রায় ৫- ৬ লক্ষ টাকার কাজ ছিলো ।  এছাড়াও তিনি গত ১৫- ১৬ বছর যাবৎ বরিশালে চাকুরি করছেন। এমনকি মাঝে নাম মাত্র ১০ দিনের জন্য বদলী হয়ে ফরিদপুর সার্কেলে যোগদান করে আবারও বরিশাল সার্কেলে ফিরে আসেন। এটা কীভাবে সম্ভব তা প্রশাসনিক কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন। কেননা সরকারি বিধিমালা অনুসারে নিজ জেলায় বাড়ী থাকিলে সে জেলায় চাকুরি করা যায়না এমন নীতিমালা থাকার পরও বরিশালে এমন অনেকেই এভাবে নিজ জেলায় কাজ করছে। 
অভিযোগে ঠিকাদার মনির আরো বলেন- সে সাবেক নির্বাচন কমিশনার আওয়ামী লীগ পন্থি আলমগীর হোসেনের আত্মীয় হবার সুবাদে গায়ের জোরে বরিশাল সার্কেলে চাকুরী করছে বলে জানা গেছে। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বহুবার আমরা ঠিকাদারবৃন্দ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করিলে কোন সুরাহা পাইনি। 
তিনি ১৫- ২০ বছরে বরিশালে চাকুরী করে দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন বলে জানান বরগুনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান  কামাল এন্টারপ্রাইজ, পটুয়াখালীর চুন্নু মিঞা- পিরোজপুরের নিজামসহ আরো অনেকে। 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী সহিদুল ইসলামের বাড়ি জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা দুধল ইউনিয়নে। সেখানে সুন্দরকাঠী গ্রামের মোল্লা বাড়িতে তার পৈতৃক ভিটা থাকলেও সেখানে তার যাতায়াত খুবই কম। এলাকার বাসিন্দারা তার কাছে কখনো কোনো উপকার না পেয়ে তার প্রতি কিছুটা বিরক্ত। তবে তার চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর মোল্লা- মোশাররফ মোল্লাসহ কয়েকজন গ্রামের মানুষের কাছে খুবই আলোচিত নাম। গ্রামবাসী বলেন, বরিশাল শহরের কাজীপাড়ায় সহিদুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ি। তার সহধর্মিণী লিপি ইসলামকে নিয়ে তিনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন বলে জানান সুন্দরকাঠী মোল্লা বাড়ির সংলগ্ন বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী। যদিও বরিশাল শহরের বিএম কলেজ সংলগ্ন সরকারি এই কোয়ার্টারে সহিদুল ইসলাম কখনোই থাকেননি। তিনি ও তার স্ত্রী বসবাস করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ভবনের ভিআইপি গেস্ট রুমে। যা গত বৃহস্পতিবার -২৬ সেপ্টেম্বর- তড়িঘড়ি করে ছেড়ে দিয়ে পরিবার সহ তিনি ঢাকায় চলে যান বলে জানা গেছে। 
   
এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার- পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা বরাবরে পাঠানো একটি অভিযোগ পত্রের অনুলিপিতে প্রকৌশলী সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্য এবং কর্মচারীদের উপর অত্যাচার নির্যাতন অভিযোগ তুলে ধরে তারা লিখেছেন- আমরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বরিশাল সার্কেল সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে গভীর নলকুপ সহ অন্যান্য বিভিন্ন কাজ করিয়া থাকি। লাইসেন্স নবায়ন করিতে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরিশাল অফিসে গেলে ওখানে দায়িত্বরত মোঃ বাইজিদ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ১০০০- টাকা দাবী করে এবং বলেন- তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মহোদয়কে এক একটি বহিতে নবায়ন করিতে হইলে ৫০০- টাকা করে ঘুষ দিতে হয়।  তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন বরিশালে চাকুরীরত অবস্থায় বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে  টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন। এমনকি বরিশালে সি.এন্ড.বি রোডে ইয়ামাহা শোরুম স্থানের জমি ও অক্সফোর্ড মিশন রোডে জমিসহ একখানা ৫ তলা বিল্ডিং ক্রয় করেছেন। তার স্ত্রী লিপি ইসলাম ও চাচাতো ভাই বোনসহ বিভিন্ন  আত্মীয়-স্বজনদের নামে ব্যাংকে ও পোস্ট অফিসে কম হলেও শত কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট, সঞ্চয় পত্র রহিয়াছে। এছাড়াও ঢাকায় তার নামে এবং স্ত্রীর নামে গুলশানে এবং বণশ্রীতে ২টি ফ্ল্যাট রহিয়াছে বলে জানিতে পারিয়াছি। যাহা সঠিক তদন্ত করিলে প্রমাণিত হইবে। 
পত্রে আরো বলা হয়েছে, বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানিতে পারিয়াছি যে, বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার আওয়ামী লীগ পন্থি আলমগীর হোসেনের মাধ্যমে গায়ের জোরে বরিশাল সার্কেলে জণস্বাস্থ্য প্রকৌশল নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতেছেন। যাহা আপনার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করিয়া তদন্ত করিলে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বহুবার আমরা ঠিকাদারবৃন্দ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করিলে কোন সুরাহা পাইনি এবং আমরা জানিতে পারি মন্ত্রণালয় থেকে অভিযোগ পত্র টাকার বিনিময় সরিয়ে ফেলা হতো এবং এ কাজে জনস্বাস্থ্য প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী তাকে সহযোগিতা করে আসছে। 
ঠিকাদারদের এমন অভিযোগের সুত্র ধরে অনুসন্ধানে বেশকিছু সত্যতা পাওয়া যায়। নগরীর সিএন্ডবি রোডের একটি বহুতল ভবন যেখানে লেখা আছে ক্রয় সুত্রে এই ভবনের মালিক… 
১/ মেঃ জাহাজীর হোসেন মোল্লা
২/ মো মনিরুজ্জামান মোল্লা 
৩/ সাইফুন্নাহার কাকলী
৪। ডা: সাম্মি আক্তার প্রমূখ। যারা সবাই সহিদুল ইসলাম এর ভাই ও নিকটাত্মীয় বলে জানা গেছে। সহিদুল ইসলামের বিষয় জানতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁকে ফোন করলে তিনি বলেন, আমি এই মুহূর্তে একটি মিটিং এ রয়েছি। বরিশাল থেকে এ সংক্রান্ত অভিযোগ হয়েছে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। 
তার এই বক্তব্যের পরপরই বরিশাল থেকে তল্পিতল্পা গুটিয়ে ঢাকায় চলে যায় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম। শনিবার সকালে ফোনে জানান, আমিতো জরুরী প্রয়োজনে ঢাকায় অবস্থান করছি। আমার বিরুদ্ধে কার কি অভিযোগ আমি এখনো জানিনা। বরিশালে আমি একটানা ১৫ বছর আছি, এটাও সঠিক নয়, মাঝে ফরিদপুরে ছয় মাসের মতো ছিলাম। 
আর ঠিকাদারদের সাথে আমার সুসম্পর্ক রাখারও প্রয়োজন হয়না। আমি আমার কাজ করি। কে কি অভিযোগ করলো, তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। আর যে ইন্টেরিয়র ডেকারেশন এর কথা বলা হয়েছে। ওটা টেন্ডার হয়েছে। টেন্ডার করেছেন ডেপুটি ইঞ্জিনিয়ার ইমরান সাহেব। সে কীভাবে এটা করেছে তা আমি জানিনা বলে জানান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

রামগঞ্জ বিরেন্দ্র খাল পরিস্কার পরিদর্শনে ডিডিএলজি রফিকুল ইসলাম।।

হরিলুট চলছে জনস্বাস্থ্য দপ্তরে -একই দপ্তরে কেউ ৩০-৩৫ বছর কেউ আবার ১৫-২০ বছর একই জেলায় থেকে হয়েছেন কোটিপতি।।

আপডেট সময় : 05:13:10 am, Sunday, 29 September 2024
বিশেষ প্রতিবেদক।।
   
   
সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর যেন হরিলুটের কারখানা। বিগত পলাতক সরকারের প্রেতাত্মারা এখানে এখনো বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি লুটের রাজত্ব কায়েম রেখেছেন।
   
এদের কেউ ৩৫ বছর ধরে একই দপ্তরের বিভিন্ন শাখা প্রশাখায় ঘুরে বিগত সরকারের দূর্নীতির সহায়ক হয়ে পুরস্কৃত হয়ে প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী হয়েছেন। কারো বিরুদ্ধে আবার নিজ জেলায় ১৫ বছর ধরে দূর্নীতির রাজত্ব তৈরির একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই দপ্তরের বিভিন্ন সময়ে উঠে আসা সকল দুর্নীতির সাথেই সম্পৃক্ত আছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ নিজেও। তিনি ১৯৮৯ সাল থেকে এই দপ্তরের বিভিন্ন শাখাপ্রশাখায় হয়ে গত ৭ এপ্রিল শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ী সময়ের পুরষ্কার হিসেবে এই প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী দায়িত্ব অর্জন করেন। তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার চাকরির বিধি বহির্ভূত প্রধান প্রকৌশলীর পথ বাগিয়ে নেওয়া সহ গুরুতর বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে তার অধীনস্থ বরিশালের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধেও।  সহিদুল ইসলাম দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঘুরে ফিরে নিজ জেলা বরিশালেই পরে আছেন এবং গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবনসহ নামে-বেনামে অজস্র সম্পদ। শত কোটি টাকার মালিক এই সহিদুল ইসলাম সম্পর্কে স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রিয়ভাজন না হলে দীর্ঘ সময় নিজ জেলায় থাকা অসম্ভব বলে জানান তার সহকর্মীদের কয়েকজন। সারাদেশে এরকম ২০-২৫ ও ১০-১৫ বছর ধরে একই জেলা বা দপ্তরে ঘুষ দূর্নীতির মাধ্যমে প্রমোশন নিয়ে এরকম কয়েকজন কর্মকর্তা নিজ জেলায় দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে। 
   
ইতিমধ্যে এদের সম্পর্কে লিখিত অভিযোগও জমা পরেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নিকট।
সারাদেশের নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক তুষার মোহন সাধু খাঁ‘র বিরুদ্ধে প্রকল্প পরিচালক থাকাকালীন সময়ে দুর্নীতি অনিয়মের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দেশের বাইরে পাচার করছে এমন অভিযোগে অনুসন্ধান করে জানা গেছে- তার পরিবারের একাধিক সদস্য সহ তার সন্তান লেখাপড়া করছে উন্নত দেশে। সেখানে তিনি নিজের সেকেন্ড হোম তৈরিও করেছেন। ইতিপূর্বে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর তুষার মোহন সাধু খাঁ‘র বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন শামিম হোসেন নামের এক ব্যক্তি। নানারকম দুর্নীতি -অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নিম্নমানের কাজের মধ্যদিয়ে প্রকল্পের শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। এসব টাকা লুটপাটের অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয় অভিযোগ পত্রে।
এদিকে তারই সহচর বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম গত পনের বছর ধরে একচেটিয়া বরিশালে রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন। ঢাকা ও বরিশালে গড়ে তুলেছে একাধিক বহুতল ভবন। নামে বেনামে কিনে রেখেছেন শতবিঘা জমি। পনের বছরে কম হলেও কয়েক শত কোটি টাকার মালিক এই সহিদুল ইসলাম বরিশাল জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক  প্রকৌশলী হয়েও করছেন ঠিকাদারী কাজও। যে কারণে তার দপ্তরের কোনো কাজ বাইরের ঠিকাদার পায় না বলে একাধিক অভিযোগ করেছেন বরিশালের ছয় জেলার বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঘুষ ও দূর্নীতিসহ অফিস কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণেরও একাধিক লেখিত অভিযোগ হয়েছে তার বিরুদ্ধে। তারপরও বহাল তবিয়তে বরিশালের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বে আছেন এই সহিদুল ইসলাম। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ছাড়াও দূর্নীতিবাজ প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রিয়ভাজন হওয়ার কারণে সবকিছু জেনে বুঝেও গত পনের বছর চুপ থাকতে বাধ্য ছিলেন তার সহকর্মীসহ স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সম্প্রতি পটপরিবর্তন ঘটেছে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর মুখ খুলতে শুরু করেছেন অনেকেই। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে লেখিত অভিযোগও দিয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ অনেকে। যদিও এসবকিছুর নেপথ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ এর সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগও তুলেছেন তাদের অনেকে। বিশেষ করে, বিশুদ্ধ পানি বা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান ও জলবায়ু প্রকল্পের পিডি থাকাবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে পুকুর চুরির অভিযোগ রয়েছে। যার সাথে সাবেক পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জ্যাকব এবং প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলো বলে জানা যায়। যা মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত হলেই নজীরবিহীন লুটপাট স্পষ্ট হবে বলে জানান একাধিক ঠিকাদার। 
  
অনুসন্ধানে জানা গেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বরিশাল সার্কেল এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ এবং নিজে একজন আত্মীয়কে দিয়ে ঠিকাদারীর সব কাজ করানোর অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে ইতিপূর্বে একাধিক অভিযোগ পত্র প্রদান করেছেন বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুরের কয়েকজন ঠিকাদার। বরিশালের মেসার্স সিকদার এন্টারপ্রাইজ এর মনির হোসেন জানান, তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম নিজে তার আত্মীয়-স্বজনের নামে ঠিকাদারি  কাজ করাচ্ছেন। যে কারণে দরপত্র আহ্বানে সাড়া দেওয়া ঠিকাদারকে ডেকে আগেই সাবধান করেন এবং  ঠিকাদারকে অনুরোধ করেন যে, এই কাজে আপনি অংশগ্রহণ করবে না। এমনকি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরিশাল কার্যালয়ে নিজের অফিস কক্ষে ইন্টেরিয়াল কাজ কোনো টেন্ডার ছাড়া নিজেই তা করে নিয়েছেন। এটি প্রায় ৫- ৬ লক্ষ টাকার কাজ ছিলো ।  এছাড়াও তিনি গত ১৫- ১৬ বছর যাবৎ বরিশালে চাকুরি করছেন। এমনকি মাঝে নাম মাত্র ১০ দিনের জন্য বদলী হয়ে ফরিদপুর সার্কেলে যোগদান করে আবারও বরিশাল সার্কেলে ফিরে আসেন। এটা কীভাবে সম্ভব তা প্রশাসনিক কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন। কেননা সরকারি বিধিমালা অনুসারে নিজ জেলায় বাড়ী থাকিলে সে জেলায় চাকুরি করা যায়না এমন নীতিমালা থাকার পরও বরিশালে এমন অনেকেই এভাবে নিজ জেলায় কাজ করছে। 
অভিযোগে ঠিকাদার মনির আরো বলেন- সে সাবেক নির্বাচন কমিশনার আওয়ামী লীগ পন্থি আলমগীর হোসেনের আত্মীয় হবার সুবাদে গায়ের জোরে বরিশাল সার্কেলে চাকুরী করছে বলে জানা গেছে। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বহুবার আমরা ঠিকাদারবৃন্দ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করিলে কোন সুরাহা পাইনি। 
তিনি ১৫- ২০ বছরে বরিশালে চাকুরী করে দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন বলে জানান বরগুনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান  কামাল এন্টারপ্রাইজ, পটুয়াখালীর চুন্নু মিঞা- পিরোজপুরের নিজামসহ আরো অনেকে। 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী সহিদুল ইসলামের বাড়ি জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা দুধল ইউনিয়নে। সেখানে সুন্দরকাঠী গ্রামের মোল্লা বাড়িতে তার পৈতৃক ভিটা থাকলেও সেখানে তার যাতায়াত খুবই কম। এলাকার বাসিন্দারা তার কাছে কখনো কোনো উপকার না পেয়ে তার প্রতি কিছুটা বিরক্ত। তবে তার চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর মোল্লা- মোশাররফ মোল্লাসহ কয়েকজন গ্রামের মানুষের কাছে খুবই আলোচিত নাম। গ্রামবাসী বলেন, বরিশাল শহরের কাজীপাড়ায় সহিদুল ইসলামের শ্বশুরবাড়ি। তার সহধর্মিণী লিপি ইসলামকে নিয়ে তিনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন বলে জানান সুন্দরকাঠী মোল্লা বাড়ির সংলগ্ন বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী। যদিও বরিশাল শহরের বিএম কলেজ সংলগ্ন সরকারি এই কোয়ার্টারে সহিদুল ইসলাম কখনোই থাকেননি। তিনি ও তার স্ত্রী বসবাস করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ভবনের ভিআইপি গেস্ট রুমে। যা গত বৃহস্পতিবার -২৬ সেপ্টেম্বর- তড়িঘড়ি করে ছেড়ে দিয়ে পরিবার সহ তিনি ঢাকায় চলে যান বলে জানা গেছে। 
   
এদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার- পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা বরাবরে পাঠানো একটি অভিযোগ পত্রের অনুলিপিতে প্রকৌশলী সহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্য এবং কর্মচারীদের উপর অত্যাচার নির্যাতন অভিযোগ তুলে ধরে তারা লিখেছেন- আমরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বরিশাল সার্কেল সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে গভীর নলকুপ সহ অন্যান্য বিভিন্ন কাজ করিয়া থাকি। লাইসেন্স নবায়ন করিতে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরিশাল অফিসে গেলে ওখানে দায়িত্বরত মোঃ বাইজিদ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ১০০০- টাকা দাবী করে এবং বলেন- তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মহোদয়কে এক একটি বহিতে নবায়ন করিতে হইলে ৫০০- টাকা করে ঘুষ দিতে হয়।  তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন বরিশালে চাকুরীরত অবস্থায় বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে  টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন। এমনকি বরিশালে সি.এন্ড.বি রোডে ইয়ামাহা শোরুম স্থানের জমি ও অক্সফোর্ড মিশন রোডে জমিসহ একখানা ৫ তলা বিল্ডিং ক্রয় করেছেন। তার স্ত্রী লিপি ইসলাম ও চাচাতো ভাই বোনসহ বিভিন্ন  আত্মীয়-স্বজনদের নামে ব্যাংকে ও পোস্ট অফিসে কম হলেও শত কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট, সঞ্চয় পত্র রহিয়াছে। এছাড়াও ঢাকায় তার নামে এবং স্ত্রীর নামে গুলশানে এবং বণশ্রীতে ২টি ফ্ল্যাট রহিয়াছে বলে জানিতে পারিয়াছি। যাহা সঠিক তদন্ত করিলে প্রমাণিত হইবে। 
পত্রে আরো বলা হয়েছে, বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানিতে পারিয়াছি যে, বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার আওয়ামী লীগ পন্থি আলমগীর হোসেনের মাধ্যমে গায়ের জোরে বরিশাল সার্কেলে জণস্বাস্থ্য প্রকৌশল নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে দায়িত্ব পালন করিতেছেন। যাহা আপনার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করিয়া তদন্ত করিলে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বহুবার আমরা ঠিকাদারবৃন্দ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করিলে কোন সুরাহা পাইনি এবং আমরা জানিতে পারি মন্ত্রণালয় থেকে অভিযোগ পত্র টাকার বিনিময় সরিয়ে ফেলা হতো এবং এ কাজে জনস্বাস্থ্য প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী তাকে সহযোগিতা করে আসছে। 
ঠিকাদারদের এমন অভিযোগের সুত্র ধরে অনুসন্ধানে বেশকিছু সত্যতা পাওয়া যায়। নগরীর সিএন্ডবি রোডের একটি বহুতল ভবন যেখানে লেখা আছে ক্রয় সুত্রে এই ভবনের মালিক… 
১/ মেঃ জাহাজীর হোসেন মোল্লা
২/ মো মনিরুজ্জামান মোল্লা 
৩/ সাইফুন্নাহার কাকলী
৪। ডা: সাম্মি আক্তার প্রমূখ। যারা সবাই সহিদুল ইসলাম এর ভাই ও নিকটাত্মীয় বলে জানা গেছে। সহিদুল ইসলামের বিষয় জানতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁকে ফোন করলে তিনি বলেন, আমি এই মুহূর্তে একটি মিটিং এ রয়েছি। বরিশাল থেকে এ সংক্রান্ত অভিযোগ হয়েছে। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। 
তার এই বক্তব্যের পরপরই বরিশাল থেকে তল্পিতল্পা গুটিয়ে ঢাকায় চলে যায় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম। শনিবার সকালে ফোনে জানান, আমিতো জরুরী প্রয়োজনে ঢাকায় অবস্থান করছি। আমার বিরুদ্ধে কার কি অভিযোগ আমি এখনো জানিনা। বরিশালে আমি একটানা ১৫ বছর আছি, এটাও সঠিক নয়, মাঝে ফরিদপুরে ছয় মাসের মতো ছিলাম। 
আর ঠিকাদারদের সাথে আমার সুসম্পর্ক রাখারও প্রয়োজন হয়না। আমি আমার কাজ করি। কে কি অভিযোগ করলো, তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। আর যে ইন্টেরিয়র ডেকারেশন এর কথা বলা হয়েছে। ওটা টেন্ডার হয়েছে। টেন্ডার করেছেন ডেপুটি ইঞ্জিনিয়ার ইমরান সাহেব। সে কীভাবে এটা করেছে তা আমি জানিনা বলে জানান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম।