মোংলার চিলায় কবর দেয়া মরদেহটি কার হিলটনের নাকি মাহে আলমের? এমন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর।বাংলাদেশ পুলিশের ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি সিআইডি মালিবাগ শাখার ১ আগস্ট প্রকাশিত রিপোর্টের ফলাফলে জানাযায় মরদেহটি মাহে আলমের। তাহলে ময়নাতদন্তে যদি মরদেহটি মাহে আলমের হয় তাহলে হিলটন কোথায় এমন প্রশ্ন মংলাবাসীর।
গত ১৩ এপ্রিল সুন্দরবনের করমজলে অর্ধগলিত একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে খুলনার দা’কোপ থানা পুলিশ। সুন্দরবনে নিখোঁজ জেলে হিলটন নাথের পরিবারের দাবীতে ১৪ এপ্রিল দাকোপ থানা পুলিশ জেলে হিলটন নাথের পরিবারের কাছে মরাদেহটি হস্তান্তর করে।
অন্যদিকে ১০ এপ্রিল মোংলার ব্যবসায়ী মাহে আলম নিখোঁজ হন। ১৪ এপ্রিল সকালে মাহে আলম’র ছোট ছেলে সুমন রানা মোংলা থানায় পিতার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে জিডি করেন। জিডি নং- ৬৬০। পরবর্তীতে ১৪ এপ্রিল হস্তান্তরকৃত মরদেহর ছবি এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে একই লাশকে সুমন রানা তার পিতা মাহে আলম’র লাশ দাবী করেন। এব্যাপারে সুমন রানা ২৮ এপ্রিল দাকোপ থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নং- ১০৯৮। এছাড়া হিলটন নাথ’র মা বিথীকা নাথ দাকোপ থানায় বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে খুন করে লাশ গুম করার অপরাধে ( ধারা ৩০২/২০১ পেনাল কোড ১৮৬০ ) একটি মামলা দায়ের করেন। দাকোপ থানা মামলা নং- ১৬। অন্যদিকে সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ অন্যান্য আলামত দেখে সুমন রানা মামলা দায়ের করতে চাইলে মোংলা থানা প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-২ বাগেরহাটের আদেশের প্রেক্ষিতে মোংলা থানা মামলা গ্রহণ করে। মোংলা থানা মামলা নং- ১৬।
বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় গত ৯ মে ডিএনএ পরিক্ষার জন্য সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ”গ” অঞ্চল খুলনার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে ডিএনএ টেস্ট’র জন্য ঢাকার সিআইডি ল্যাবরেটরি হিলটন নাথ’র মা বিথীকা নাথ এবং মাহে আলম’র ছেলে সুমন রানার রক্ত নমুনা হিসেবে গ্রহণ করে। দুই মাস বিশ দিন পরে ১ আগস্ট প্রকাশিত ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি সিআইডি মালিবাগ শাখা প্রকাশিত রিপোর্ট প্রকাশ করেন। রিপোর্টের ফলাফলে জানাযায় মহাদেহটি মাহে আলমের।
ডিএনএ টেস্ট’র ফল প্রকাশের পর মাহে আলমের ছেলে সুমন রানা বলেন, যেহেতু চিলায় তিন মাস আঠাশ দিন আগে কবর দেয়া মরদেহটি হিলটনের নয় সেটি আমার বাবা মাহে আলমের। প্রথমত আদালত এবং প্রশাসনের মাধ্যমে লাশ উত্তোলন পূর্বক দ্রুত ইসলামী রীতি অনুযায়ি লাশ দাফন করতে চাই। একই সাথে বলতে চাই আমার বাবাকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করে লাশ গুম করার প্রক্রিয়ার সাথে যারা যুক্ত তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার দাবী করছি।
এ প্রসংগে নিখোঁজ হিলটন নাথের ভাই সাগর নাথ বলেন, ডিএনএ টেস্ট’র রিপোর্ট এখনো হাতে পাই নাই। রিপোর্টের ফলাফলে যদি কবর হওয়া মরদেহটি ব্যবসায়ী মাহে আলমের হয় তাহলে আমরা আমাদের ভাই হিলটন নাথকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই। ব্যুরো ইনভেষ্টিগেশন খুলনার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান গনমাধ্যমকে বলেন, আদালত এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাহে আলম’র ছেলে সুমন রানাকে মরদেহটি বুঝিয়ে দেয়া হবে। হিলটন নাথ’র মা বিথীকা নাথ ভুল তথ্য দেয়ায় মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া হবে। আর মাহে আলমকে পরিকল্পিত ভাবে খুন এবং লাশ গুম করার অভিযোগ থাকলে মাহে আলম’র পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক মামলা করতে হবে।