স্টাফ রিপোর্টার ভোলা।।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার রসুলপুর থানা এলাকার করিমপুর গ্রাম থেকে আসমা (২৩) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে রসুলপুর থানা পুলিশ। পাষণ্ড স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গৃহবধূ আসমা আক্তার আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সোমবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশিভূষণ থানা এলাকার রসুলপুর ইউনিয়নের করিমপুর গ্রাম থেকে তার মেয়ে আসমা আক্তারের (২৩) লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
শশিভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পাষন্ড জামাই আমার মাইয়্যাটার জীবনটা শেষ কইরা দিল। এরকম পাষণ্ড জামাই যেন কারো ভাগ্যে না জোটে-মেয়েকে হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে ফুটিয়ে এভাবেই বিলাপ করছিলেন হতভাগা বাবা মোঃ রুহুল আমীন।
আসমা আক্তার ওই গ্রামের দিনমজুর মো. রাকিবের স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তানের জননী। তার বাবার নাম মো. রুহুল আমীন ওরফে তরফ আলী। তার বাবার বাড়ি চরফ্যাশন উপজেলার পৌর ২ নম্বর ওয়ার্ডে।
হতভাগা বাবা মো. রুহুল আমীনের অভিযোগ, স্বামী রাকিবের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সইতে না পেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। স্বামীসহ শশুড়বাড়ির লোকজন তাকে বিয়ের পর থেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে রেখেছিল।
শশিভূষণ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সমেজ উদ্দিন জানান, শনিবার ৮ এপ্রিল সকালে আসমা বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। এরপর রোববার বিকেলে তার স্বামী রাকিব তাকে ফোন করে বাড়িতে চলে আসতে বলে। আসমা রোববার বিকেলে বাড়িতে না গিয়ে সোমবার বিকেলে বাড়িতে যায়। এসময় তার স্বামী রাকিব তাকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে। তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। যার কারণে এ ক্ষোভে আসমা আত্মহত্যা করতে পারে বলে পুলিশের ধারণা।
আসমার বাবা মো. রুহুল আমীন আরও জানান, কয়েকবছর ধরে রাকিব ও তার পরিবারের লোকজন আসমার সঙ্গে অসদাচরণ করে আসছে। প্রায়ই তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে আঘাত করা হত। স্বামী রাকিব তাকে ভালো জানত না। তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করত। রাকিব আসমাকে তার বাবার বাড়িতে আসতে দিত না। শনিবার সকালে আসমা তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। এরপর আজ সোমবার বিকেলে সে রাকিবের বাড়িতে গেলে রাকিব তাকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে। তাকে অপমান অপদস্ত করে কথা বলে। এ ক্ষোভ সইতে না পেরে আমার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানান।
ওসি জানান, এ ঘটনায় আসমার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাদেরকে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।