মো: সোহেল
ভোলা জেলা প্রতিনিধি।।
বাংলাদেশের দক্ষিণের দ্বীপজেলা ভোলায় ১ লাখ কোটি ঘনফুট -টিসিএফ- গ্যাস দেশের বার্ষিক চাহিদা পূরণ করতে পারে। গবেষণার আওতায়- শাহবাজপুর থেকে ইলিশা পর্যন্ত ৬০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় একটি ত্রিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপ -থ্রি-ডি সাইসমিক সার্ভে- করা হয়- যেখানে ২ দশমিক ৪২৩ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া যায়। চর ফ্যাশনে আরেকটি ১৫২.৬ লাইন- কি.মি. দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপের তথ্যে ২ দশমিক ৬৮৬ টিসিএফ গ্যাস মজুদের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বাপেক্স জানিয়েছে।
ভোলায় ৫ দশমিক ১০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট -টিসিএফ- উত্তোলনযোগ্য গ্যাস মজুদের সন্ধান মিলেছে। শাহবাজপুর ও ইলিশায় ২.৪২৩ টিসিএফ এবং চরফ্যাশনে ২.৬৮৬ টিসিএফ মজুদ গ্যাসের সন্ধান মেলে। এর বাজার মূল্য সাড়ে ছয় লাখ কোটি টাকা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন- এক টিসিএফ গ্যাস দিয়ে দেশের এক বছরের গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা যায়। সেই হিসেবে মজুদ এই গ্যাস দিয়ে বাংলাদেশ অন্তত পাঁচ বছর চলতে পারবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কো¤পানি লিমিটেড ও রাশিয়ার জ্বালানি জায়ান্ট গ্যাজপ্রমের যৌথ গবেষণায় গ্যাস মজুদের এ তথ্য মিলেছে। গবেষণাটি ২০২০ সালে শুরু হয়ে চলতি বছরের জুনে শেষ হয়। সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগ- পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সে গবেষণা প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে- বাংলাদেশ বর্তমানে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে গ্যাসের চাহিদা পূরণ করছে। খোলাবাজার প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দর ১০.৪৬ মার্কিন ডলার, সেই হিসাবে ৫.১০৯ টিসিএফ গ্যাসের মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ছয় লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
গবেষণায় বলা হয়েছে- ভোলার শাহবাজপুর থেকে ইলিশা পর্যন্ত ৬০০ বর্গকিলোমিটার থ্রিডি সিসমিক সার্ভে করা হয়। এতে ২.৪২৩ টিসিএফ উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ আবিষ্কৃত হয়। ভোলার চরফ্যাশনে ১৫২.৬ লাইন কিলোমিটার টুডি সিসমিক সার্ভে করে ২.৬৮৬ টিসিএফ গ্যাসের মজুদ পাওয়া যায়।
গ্যাজপ্রমের মুখপাত্র এলেক্সি বেলবেজিয়াভ বলেন- গবেষণাটি আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনা করা হয়েছে, যেখানে সিসমিক ডাটা- অয়েল লক ডাটা- কোর ডাটা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে আধুনিক প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার- সুপার কম্পিউটার সিস্টেম এবং উন্নত মানের ল্যাব ব্যবহার করার ফলে গবেষণার তথ্যগুলো খুবই নির্ভরযোগ্য।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার বলেন- গবেষণার প্রতিবেদনটি নিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে আনতে ভোলা-বরিশাল- বরিশাল-খুলনা গ্যাস পাইপলাইনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে এলএনজি ও সিএনজির মাধ্যমে ঢাকায় আনা হবে।
তিনি বলেন, শিগগিরই এর একটি টেন্ডার দেওয়া হবে। এখন থেকে সব কাজ উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে হবে। একাধিক কোম্পনিকে কাজের সুযোগ দেওয়া হবে। এই গ্যাস পেলে এলএনজি আমদানি সীমিত করা হবে।