সদরপুর প্রতিনিধি।।
দেওয়ালে ঝুলছে আলিমের ছবি- স্বামীর ফিরে আসার অপেক্ষায় স্ত্রী রুবী বেগমের চোখের পানি কিছুতেই থামছে না, কোথায় আছে? জীবিত আছে নাকি মরে গেছে পরিবারের কেউ কিচ্ছু জানেনা। আবদুল আলিমের বৃদ্ধা মা প্রায় ৯ মাস যাবত সন্তানের ফিরে আসার অপেক্ষা করছে। নিখোজ আবদুল আলিম বাকপুরা নিবাসী মৃত্যু মমিন মোল্যার পুত্র।
সুস্থ্য মানুষ আবদুল আলিম মোল্যা ভারতে চোখের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি।তার পাসপোর্ট নাম্বার A079440671। এমন চাঞ্চল্যকর নিখোজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর জেলার ভাংগা উপজেলার বাকপুরা গ্রামে। ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে নিখোজ আবদুল আলিমের স্ত্রী রুবী বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে জানান- আমার স্বামী আব্দুল আলিম গত ১০ বছর আগে পুলিশের চাকুরী থেকে অবসর নিয়েছে। অবসর নেওয়ার কিছুদিন পর থেকে আমার স্বামীর চোঁখে সমস্যা দেখা দেয়। তার পর আমার দূর সম্পর্কের আত্বিয় আরজু আক্তার, আঞ্জু আক্তার এবং রফিকুল ইসলাম বলেন ভারতে আমার চেনা জানা ভালো চোঁখের ডাক্তার আছে সেখানে গেলে অল্প খরচে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যাবে। তাদের কথা মতো আমার স্বামীর চোখের ছানি অপারশনের উদ্দেশ্য গত বছর ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩ টার দিকে ভারতের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা হয়। তার পরদিন ১৭ ই ডিসেম্বর ভারতে যায় এবং ১৮ ই ডিসেম্বর তার সাথে আমার শেষ কথা হয়। সে তখন বলছিল, কলকাতা আছি। এই তার সাথে আমার শেষ কথা হয়। এর একদিন পর যাদের সাথে ভারত গিয়েছিল তাদের মধ্য থেকে ঠাকুরগাও জেলার সদরে নিবাসী আমার দু:সম্পুর্কের আত্মীয় আরজু আক্তার ফোন করে জানায়, আপনার স্বামীকে ট্রেনে পাওয়া যাচ্ছেনা৷ এরপর থেকে আজ প্রায় ৯ মাস যাবত স্বামীর ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। রুবী বেগম আরো বলেন এব্যাপারে ভাংগা থানায় প্রথমে নিখোজের একটা সাধারন ডাইরী করি এবং পরবর্তিতে ৩ জনকে আসামী করে ফরিদপুর কোর্টে একটা মামলা করি। কিন্ত আজ অবধি কোন কুল কিনারা পাচ্ছিনা। তাদের নামে মামলা হলেও এখন পর্যন্ত মামলার তেমন কোন অগ্রগতি নেই। মামলায় অভিযুক্ত আরজু আক্তারের সাথে ফোনে আলাপ কালে এ প্রতিবেদককে জানান- কলকাতা হাওরা স্টেশনে নামার আগে তাকে আর আমরা ট্রেনের মধ্যে পাইনি। তার ব্যাগ পত্র এখনো আমাদের হেফাজতে রয়েছে। আমি এর বেশি কিছু জানিনা।
এদিকে স্বামীকে ফিরে পেতে দীর্ঘ ৯ মাস অপেক্ষা করেও স্বামীর কোন খোঁজ পাইনি। তিনি জানান আরজু আক্তার একেক সময় একেক ধরনের কথা বলছে। নিখোজ আবদুল আলিমের ছোটভাই শফিক বলেন- আমার বড় ভাই নিখোজ হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত তার কোন খোজ খবর পাইনাই- যাদের সাথে ভারতে গিয়েছিল তাদের এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা একেক সময় একেক ধরনের কথা বলে। আমি আমার নিখোজ ভাইয়ের সন্ধান পাওয়ার জন্য দেশের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা কামনা করি।