অরবিন্দ রায়
পলাশ প্রতিনিধি।।
নরসিংদীতে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিউলী আক্তারের অপসারণের দাবীতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিল শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকে সকাল ১১টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
এসময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষিকাকে দুর্নীতিগ্রস্ত, নিষ্ঠুর, অসৌজন্যমূলক আচরণকারী, অর্থলোভী আখ্যায়িত করে অনতিবিলম্বে তার অপসারণের দাবী জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম শিক্ষার্থীদের কয়েকজন প্রতিনিধিকে তাঁর কক্ষে ডেকে পাঠান। এসময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র শিক্ষক মোঃ লুৎফর কবীরও ছিলেন। তিনি জানান, জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের বলেছেন যে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন । দুই দিনের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দিবে তদন্ত কমিটি। পরে তা খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবর পাঠিয়ে দেয়া হবে।
আজ রবিবার বিকেলের দিকে শিক্ষার্থীরা অবস্থান ছেড়ে বিভিন্ন শ্লোগানসহ মিছিল নিয়ে পুনরায় শহর প্রদক্ষিণ করে।
অভিযোগে প্রকাশ, গত ২৫ জানুয়ারি এসএসস়ি-২০২৪ ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত হতে স্কুল গ্রুপে নোটিশ দেয়া হয়। এস.এস.সি-২০২৪ইং সালের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী স্কুলে উপস্থিত হতে একটু বিলম্ব হলে তাদের এক ঘন্টা মেইন গেইটের বাইরে দাঁড় করিয়ে গেইট ভিতর থেকে বন্ধ রাখেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ১ ঘন্টা পর স্কুল গেইট খুলে তাদেরকে ভিতরে নিয়ে লাইন করে দাঁড় করিয়ে রাখেন এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। প্রধান শিক্ষিকা বলেন, স্কুল কি তোমাদের বাপের টাকায় কেনা? এটা আমার টাকায় কেনা স্কুল। স্কুলের বিদায়ী অনুষ্ঠানের জন্য প্রতি বছর বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতনের সাথে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নেয়া হলেও স্কুলে বিদায়ী অনুষ্ঠান করার ছিল না কোন স্টেজ বা কোন সাজ-সজ্জা। মাত্র ৬ জন শিক্ষক ব্যতীত স্কুলে কোন শিক্ষকও ছিলেন না। কোন রকম মানপত্র পাঠও ছিল না। নিম্ন মানের খাবার, ফুল ও ফাইল দিয়ে ৬ জন শিক্ষক মিলে ৫ মিনিটে দায়সারাভাবে তিনশত শিক্ষার্থীর বিদায়ী অনুষ্ঠান শেষ করে দেন। এমনকি প্রধান শিক্ষিকাও সেখানে যান নাই। প্রধান শিক্ষিকাকে আনতে গেলে তিনি আসবেন না মর্মে জানিয়ে দেন।
শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষিকার রুমে দোয়া চাইতে গেলে এবং অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাগণের কথা জিজ্ঞাসা করলে তিনি রাগান্বিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। শিক্ষার্থীদেরকে এস.এস.সি পরীক্ষার এডমিট কার্ড বা প্রবেশ পত্র প্রদান না করার এবং উক্ত পরীক্ষায় হল সচিবের দায়িত্ব পালন কালে শিক্ষার্থীদের দেখে নিবেন মর্মে হুমকি দেন। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে গালিগালাজ করে রুম থেকে বের করে দেন।
তিনি দারোয়ানকে বলেন, শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে স্কুল থেকে বের করে দিতে ।
শিক্ষার্থীরা এতে প্রতিবাদ করলে শিক্ষার্থীদের
স্কুল থেকে বের করে গেইট বন্ধ করে দেন।
প্রধান শিক্ষিকার যে সব দুর্নীতির অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা পছন্দের কন্ট্রাক্টরের মাধ্যমে
অস্বাস্থ্যকর খাবার সরবরাহ করা। লাইব্রেরী কক্ষ ও কম্পিউটার কক্ষ তালাবদ্ধ করে রেখে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে না দেয়া।
ম্যাগাজিনের জন্য টাকা নিয়ে তা না করা।
আইডি কার্ডের টাকা নিয়ে সকলকে আইডি কার্ড না দেয়া। প্রধান শিক্ষিকার স্বামীর স্পটে পিকনিকে নিয়ে নিম্ন মানের খাবার দেয়া। অভিভাবকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা। শ্রেণি কক্ষের পার্টিশন ভেঙ্গে খরগোশ ছানা পালন করা।
নরসিংদী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণে শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবকরা সমর্থন করেছেন।