মোঃ মাসুদ রানা মনি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বিরেন্দ্র খাল তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে পরিস্কার না করায় ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ফেলা প্রতিদিনকার ময়লা আবর্জনার কারনে খালটি নালায় পরিনত হয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় চরম দূর্ভোগে পড়েছেন এ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। বিগত ১৮ দিন যাবত রামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও রামগঞ্জ ব্লাড ডোনারস ক্লাবের সভাপতি মাহমুদ ফারুকের উদ্যোগে
রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্বাবধানে প্রায় ৪০ বছর পর উক্ত খাল পরিষ্কার করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছে রামগঞ্জ ব্লাড ডোনার’স ক্লাবসহ বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। ফলে খালটিতে এসেছে প্রাণের সঞ্চার দৃশ্যমান হয়েছে খালের দুই কিলোমিটার এলাকা।
এখন দ্রুত বেগে পানি নামছে খালের র্দুগন্ধ আর নেই। এ কাজে আর্থিক ব্যয়ভার বহন করছেন রামগঞ্জ-সোনাপুর ও মৌলভী বাজারের ব্যবসায়ীরা। আরো ১০দিন কাজ করার পর খালটি পুরোপুরিই দৃশ্যমান হবে।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সার্বিক তত্বাবধানে গত ১৮ দিন থেকে খাল পরিস্কার অব্যাহত রেখেছেন স্বেচ্ছাসেবী- ব্যবসায়ী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
গত ২৮ আগস্ট বুধবার সকাল ১১টায় স্বেচ্ছাশ্রমের এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন ইসলাম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি দেবব্রত দাশ ও রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সোলাইমানসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যবৃন্দ।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শারমিন ইসলাম বলেন, তরুণ- যুবকদের এমন কাজকে স্বাগত জানাই। আজ তারা যে উদ্যোগ নিয়েছে তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাদের মতো সমাজের আরও স্বেচ্ছাসেবীসহ ভালো মানুষগুলো এগিয়ে এলে ছোট ছোট সমস্যাগুলো নিজেরাই সমাধান করতে পারবে। উপজেলা প্রশাসন সবসময় ভালো কাজে পাশে থাকবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রামগঞ্জ বাস টার্মিনালের পিছন থেকে সোনাপুর উত্তর বাজার ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার জায়গায় বাজারের ব্যবসায়ীরা ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলার কারনে পানি নিষ্কাশন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। ভয়াবহ বন্যায় পানি চলাচল করতে না পারায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয়।
সোনাপুর বাজারের ব্যবসায়ী মাষ্টার আবুল হোসেন বলেন- বাজারের ব্যবসায়ীরা যদি আন্তরিক হয় তাহলে এ খালটি আর্শিবাদ হবে। প্রশাসন এবং শহরবাসীর প্রচেষ্টায় দখলকারী, দুষনকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং খালটিকে সব সময় পরিস্কার রাখতে হবে। এসময় তিনি পৌর কর্তৃপক্ষকে শহরের ময়লা আবর্জনা পরিস্কারে আরো আন্তরিক হওয়ার আহবান জানান।
খালপাড়ে বসবাসকারী মোঃ ছেরাজুল হক জানান- এ খালটিতে একসময় পালতোলা নৌকা চলতো। চাঁদপুর থেকে আসতো চাল-ডাল- পেয়াজ রসুনসহ নিত্যপন্য। আর এ উপজেলা থেকে ঢাকায় যেত সোনালী আঁশ পাট- নারিকেল-সুপারি ও কাগুজি লেবু। অথচ সে খালের উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া সম্ভব।
ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন- তারেক আজিজ ও রাজন জানান বিরেন্দ্র খাল পরিস্কার একটি আধুনিক সুবিধা সংবলিত লেক পার্কে পরিণত করা সম্ভব। পরিস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা গেলে উপজেলা শহরের মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ফিরে পাবে। বিরেন্দ্র খালকে দখলমুক্ত করে বাঁচিয়ে রাখাটা জরুরি।
রামগঞ্জ ব্লাড ডোনার’স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদ ফারুক বলেন- খালে পানি আটকে প্রচুর মানুষ পানিবন্ধী হয়ে আছে। রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় ভেকুমেশিন -খননযন্ত্র- সংগ্রহ করে এটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। দীর্ঘ ৪০ বছর পর খালটি পরিস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করায়।