
তৌহিদ বেলাল, কক্সবাজার।।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো সরকারই কক্সবাজারের উন্নয়নে কোন কাজ করেনি। সবাই শুধু লুটেপুটে খেয়েছে।
পর্যটন নগরীর উন্নয়নে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে নতুন করে ৬টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। তিনি বুধবার (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারে এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এই কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট দেশে দুর্নীতি আর লুটপাট ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছে, তারেক জিয়া দশ ট্রাক অস্ত্র এনে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চালিয়েছে।
কক্সবাজারের উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লবণ শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশে লবণের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নেয়া হবে।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতর লাবণী পয়েন্ট সংলগ্ন শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, বর্তমান সরকার সমুদ্র সম্পদের সদ্ব্যবহারে কাজ করছে। জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের জীবনমান উন্নয়ন ও নিরাপত্তার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের ২৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও নতুন করে আরো ৪টি প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন করার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজয়ের মাসে এসব কক্সবাজারবাসীকে উপহার দিয়ে গেলাম। এছাড়া শহরতলির খুরুশকুলে আন্তর্জাতিক মানের শুটকি পল্লী গড়ে তোলার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
কক্সবাজারের প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আলাদা টান ছিলো জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই তিনি সময় পেতেন আমাদের সকলকে নিয়ে কক্সবাজারে চলে আসতেন। কক্সবাজার ছিলো জাতির পিতার প্রিয় একটি জায়গা।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্রী বলেন, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
কক্সবাজারবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা বারবার ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাসীন করে আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান এই দেশ স্বাধীন করেছে। তিনি বেঁচে থাকলে ১০ বছরেই বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতো।
তিনি বলেন, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্যই আমার সংগ্রাম। আপনাদের মাঝেই আমি আমার হারানো স্বজনদের খুঁজে পাই।
বক্তৃতার শেষ প্রান্তে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির ভাষায় আবেগি কন্ঠে বলেন, ‘রিক্ত আমি, নিঃস্ব আমি, দেবার কিছুই নাই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’।
সবশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আবার আসিব ফিরে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের তীরে’। এসময় লাখো জনতা তাদের প্রিয় নেত্রীকে করতালি দিয়ে অভিবাদন জানায়।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভা সঞ্চালনা করেন জেলা সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান।
জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরে গেছে। এটা আর জীবিত করার কী দরকার।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, মির্জা ফখরুল তত্ত্বাবধায়ক নিয়া চিৎকার করে। লাভ হবে? বিএনপিকে বিশ্বাস করবেন না। বিশ্বাস করলে কক্সবাজারের মানুষ ভুল করবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পূর্ব পৃথিবীর সূর্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের রূপকার শেখ হাসিনা। তিনি আছেন বলেই আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
জনসভায় আরো দেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, মাহবুবুল আলম হানিফ, বাহাউদ্দিন নাছির, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, আমিনুল হক আমিন, আশিকুর রহমান, ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, জাফর আলম এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, কানিজ ফাতেমা আহমেদ এমপি, প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, মাহবুব মোর্শেদ, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, আলমগীর চৌধুরী, শহীদুল্লাহ শহীদ, সিরাজুল ইসলাম বাবলা, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, তারেক বিন ওসমান শরীফ, শামশুল আলম মণ্ডল প্রমুখ।