
সোহানুর রহমান বাপ্পি , কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার প্রবাস ফেরত পপি আক্তার (৩৫) নামে এক প্রবাসী নারী প্রতারণরার শিকার হয়েছেন প্রতিবেশী বাদলের কাছে। এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন ওরফে ভিপি কামালের কাছে গেলে তিনি বিষয়টি সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। চাহিদামতো টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কামাল বাদলের সাথে যোগসাজশ করে পপিসহ তার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠায়।
ভুক্তভোগী পপি আক্তার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা মনিরাকান্দা গ্রামের নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মৃত সফির উদ্দিনের সন্তান। ১৪ বছর আগে বাবাকে হারানো ৫ ভাই বোনের মধ্যে সবার বড় পপি আক্তার পরিবারের হাল ধরতে ৭ বছর আগে গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে বাহরাইনে পারি জমান।
ভুক্তভোগী পপি আক্তার বলেন, প্রবাসে থাকাকালীন পরিবারের অভিভাবক হিসেবে প্রতিবেশী চাচা বাদল মিয়ার কাছে উপার্জিত অর্থ ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে প্রায় ১১ লাখ টাকা পাঠাই। বাহরাইনে অবস্থানকালে আরেক প্রবাসী ফরিদপুর জেলার মোশারফ শেখের সাথে পরিচয় ও বিয়ে হয়। স্বামীসহ দেশে আসার পর বাদল মিয়ার কাছে টাকা চাইলে ১১ লাখ টাকা পরিবর্তে ৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ফেরত দেয়। বাকি টাকা চাওয়ায় বাদল মিয়া ও তার লোকজন আমাকে বেধড়ক মারপিট করে। এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন ওরফে ভিপি কামালের কাছে গেলে তিনি বিষয়টি সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দেন।
ভিপি কামালের বিরুদ্ধে পপি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ভিপি কামাল মামলা এফ আই আর (নথিভুক্ত) করে দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ও বাকি টাকা আদায় করার জন্য দেড় লাখ টাকা চায়। মামলা নথিভুক্ত করার জন্য ২৫ হাজার টাকার পরিবর্তে ১৫ হাজার টাকা দেয়। দেড় লাখ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রতিপক্ষ বাদল মিয়ার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভিপি কামাল বাদলকে দিয়ে আমার ও আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করান।
পপি আরও বলেন, এই মামলায় একমাস জেল কাটার পর জামিনে বের হলে পুনরায় টাকা চাইতে গেলে হত্যা ও গুম করার হুমকি দেয় কামাল ও বাদলের লোকজন। বর্তমানে পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উল্লেখ করে দেশবাসী ও সরকারের কাছে বিচার দাবি করেছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে কামাল উদ্দিন ওরফে ভিপি কামাল বলেন, এই বিষয়ে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা উদ্দেশ্য প্রনোদিত। বিষয়টি তিনি জানলেও টাকা পয়সা ও মামলার ব্যাপারে তার জানা নেই। কিশোরগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর ও জেলা বিএনপি’র সহ সভাপতি অ্যডেভোকেট জালাল উদ্দিনের মুহুরি (সহকারি) বোরহান উদ্দিন বিষয়টি দেখছেন। বোরহান উদ্দিন আমাকে সহায়তা করার জন্য ফোন করার পর না করে দিয়েছেন। ১৫ হাজার টাকা বোরহান উদ্দিন নিয়েছে। কাজ না হওয়ায় পরে টাকা ফেরত দিয়েছেন। এখন রাজনৈতিক ভাবে ঘায়েল করার জন্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জালাল উদ্দিন ও তার লোকজন বিভিন্ন ভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযুক্ত বাদল মিয়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে পপি আক্তার ৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা আমার কাছে পাঠিয়েছে। তার সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখন মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমার নামে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।