
সীমান্ত দাস, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ১৫ টাকা কেজি দরের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ২ হাজার ৯১২ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামুর্কী ইউনিয়নের জামুর্কী বাজারের দুই দোকানে অভিযান পরিচালনা করে এই চাল উদ্ধার করেন।
এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক আজিজ, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর, সেনা ও পুলিশ সদস্য ছাড়াও স্থানীয় জনতা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দুস্থ মানুষের মাঝে স্বল্প মূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের জন্য মির্জাপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৩২ জন ডিলার নিয়োগ দেন।উপজেলার ১৪ হাজার ৫০৯ জন কার্ডধারী সুবিধাভোগী ১৫ টাকা কেজি দরে প্রতিজন ৩০ কেজি চাল কিনতে পারেন। সঠিকভাবে চাল বিক্রি তদারকির জন্য একজন করে অফিসারকে দায়িত্বে রাখা হয়েছে। চলতি বছর মার্চ ও এপ্রিল মাসে সপ্তাহে তিনদিন এ উপজেলার কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিক্রি করা হয়।১৫ আগস্টের পর থেকে ডিলাররা ডিও দিয়ে খাদ্য গুদাম থেকে আগস্ট মাসের চাল সংগ্রহ করে নিজ নিজ দোকানে মজুদ করেন।
জামুর্কী ইউনিয়নের ডিলার খায়রুল ইসলাম পিন্টু ৬৪৫ জন এবং মাজেদ আল মামুন ৬৪৪ জনের চাল খাদ্য গুদাম থেকে নিজ দোকানে মজুদ করেন। ডিলার খায়রুল ইসলাম পিন্টু গত সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার চাল বিক্রি করেন। গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত তার লোকজন চাল বিক্রি করেন। বিকেলে তার দোকানের পাশে শেখ হাসিনার নাম লেখা ৩০ কেজি ওজনের চালের বস্তা খুলে টিসিবির বস্তায় মজুদ করা হচ্ছিল।
স্থানীয়রা বিষয়টি দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলামকে জানান। পরে তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক আজিজ, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর, সেনা ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। রাত ৮টা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে জামুর্কী বাজারের ফরিয়া ব্যবসায়ী তানভীর ও মঞ্জুর দোকান থেকে ২ হাজার ১৯২ কেজি এবং নিমাইয়ের দোকান থেকে ৭২০ কেজি চাল উদ্ধার করেন।
জামুর্কী গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমান ও করিম জানান, ডিলারের দোকান থেকে এর আগেও দুইবার কমপক্ষে ৪০ বস্তা করে চাল একটি শিল্প কারখানায় বিক্রি করা হয়েছে। আমরা ধরার চেষ্টা করেও ধরতে পারিনিএবার ধরা পড়েছে।
জামুর্কী বাজারের ডিলার খায়রুল ইসলাম পিন্টু জানান, তিনি ৬৪৫ জনের মধ্যে ৫৩০ জনের কাছে চাল বিক্রি করেছেন। বাকি চালের বস্তা তার গুদাম ঘরে মজুদ রয়েছে। কার্ডধারীরা কম দামে চাল সংগ্রহ করে বেশি দামে ফরিয়াদের কাছে বিক্রি করেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন।
দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার প্রবীর কুমার চৌধুরী জানান, তিনি প্রথম দিন গিয়েছিলেন। পরের দুদিন ক্যাডেট কলেজে ব্যস্ত থাকায় তিনি যেতে পারেননি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেবেকা সুলতানার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছে বলে জানান।মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে জামুর্কী বাজারে অভিযান চালিয়ে দুই দোকান ঘর থেকে ২ হাজার ৯১২ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিনজনের নাম পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’