
মো. নাঈম হাসান ঈমন,
ঝালকাঠিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকসহ আওয়ামীপন্থী ১৬ জন আইনজীবীর সদস্যপদ বাতিল করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি। তবে বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের সদস্যপদ বহাল থাকায় সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি সমালোচনার মুখে পড়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিমুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে এ সিদ্ধান্তের কথা জানাজানি হয়।
বাতিল হওয়া আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনির, সাবেক সভাপতি আবদুল মান্নান রসুল, সাবেক সহ-সভাপতি মঞ্জুর হোসেন ও তার ছেলে মোর্শেদ কামাল, সাবেক সরকারি কৌশলী (জিপি) তপন কুমার রায় চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম আলম খান কামাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আ.স.ম মোস্তাফিজুর রহমান (মনু), সাবেক সভাপতি মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব জি.কে মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এপিপি সঞ্জয় কুমার মিত্র, মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, কার্তিক চন্দ্র দত্ত, সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর শামীম, তানজিলা হক, মো. আবুল বাশার ও জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এস. এম. রুহুল আমীন রিজভী। তবে সমিতির চিঠিতে সদস্যপদ বাতিলের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি। চিঠিতে বলা হয়েছে, “গত ২২ এপ্রিলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আপনার সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির ভর্তি বিষয়ক সম্পাদক আক্কাস সিকদার জানান, “শুধু আওয়ামীপন্থী নয়, আরও বিভিন্ন দলের সমর্থক ও অনিয়মিত ৩০ জনের সদস্যপদ বাতিল নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছিল। তবে সাধারণ সভা ছাড়া কার্যনির্বাহী কমিটি এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এছাড়া ভিজিলেন্স উপকমিটির মতামত ছাড়াই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা গঠনতন্ত্র বিরোধী।”
কার্যনির্বাহী সদস্য আনিসুর রহমান খান বলেন, “কার্যনির্বাহী কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে সদস্যপদ বাতিলের কথা বলা হলেও বাস্তবে সভায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি সাধারণ সভায় উপস্থাপন করার কথা ছিল।”
বাতিল হওয়া আইনজীবী কার্তিক চন্দ্র দত্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের সদস্যপদ অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে। আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব।” তবে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও শহর বিএনপির সভাপতি মো. নাসিমুল হাসান বলেন, “তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে, এরা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা অনিয়ম ও সহিংস কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গঠনতন্ত্র অনুসারেই তাঁদের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় সমিতির অভ্যন্তরীণ বিরোধ আরও প্রকাশ্যে এসেছে। বাতিলকৃতদের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।