Dhaka , Monday, 30 June 2025
নিবন্ধন নাম্বারঃ ১১০, সিরিয়াল নাম্বারঃ ১৫৪, কোড নাম্বারঃ ৯২
শিরোনাম ::
পাইকগাছায় উ’ন্মু’ক্ত লটারির মাধ্যমে এলসিএস ক’র্মী নি’র্ধার’ণ  প্রে’মের কারণে বাংলাদেশে আসলেন ভারতীয় আরিয়ান এরপর…আ’টক নি’খোঁ’জ এইচএসসি পরীক্ষার্থী মাহিরা সাভার থেকে উ’দ্ধা’র বাবুই ছানা হ’ত্যাকা’ণ্ডে ঝালকাঠিতে দু’টি মা’মলা অ’সহা’য় শতাধিক প্রা’ণের মৃ’ত্যু, গ্রে’ফতা’রের প্র’ক্রিয়া চলমান ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতিকে ইউপি চেয়ারম্যান চাঁ’দা না দেওয়ায় প’রিষ’দে আ’টদিন ধ’রে তা’লাব’দ্ধ, সেবা থেকে ব’ঞ্চিত হাজারো মানুষ বা’য়ুদূষ’ণ নি’য়ন্ত্র’ণে ও চীনা বিশেষজ্ঞদের সাথে পরিবেশ উপদেষ্টার বৈ’ঠক সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পু’লিশে’র বিশেষে অ’ভিযা’নে নিয়মিত ও পরো’য়া’নাভু’ক্ত আ’সা’মিস’হ গ্রে’ফতা’র-৩ স’মকামি’তা ও হ’য়রা’নির অ’ভিযো’গে হাফিজুল ইসলাম অ’পসা’রিত পাইকগাছায় দিনব্যা’পী পার্টনার ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর সাইমুম সাজিদের বাড়িতে হা’ম’লা, ভা’ঙচু’র ও লু’টপা’ট শরীয়তপুরে আলিম পরিক্ষায় ন’কলে’র দা’য়ে একজন ব’হিষ্কা’র  সাভারের আশুলিয়ায় জমি বি’রো’ধে গু’লিবি’নিম’য়, এলাকায় চ’রম আ’ত’ঙ্ক আওয়ামী নে’তা’দের বি’রু’দ্ধে মা’মলা দেওয়ার হুঁ’শিয়া’রি ডা. সালাউদ্দিন বাবুর শিল্পাঞ্চল আশুলিয়া বিভিন্ন সময় চাঁ’দাবা’জির ঘ’ট’না চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বি.কে ওয়াই জু’ট মিলসে শ্র’মিক আ’ন্দোল’ন বেতন বৃ’দ্ধি ও চাকরি স্থা’য়ীকর’ণের দাবিতে উ’ত্তাল পরিবেশ নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বি’ধবা’কে গ’ণধর্ষ’ণে’র অভি’যো’গে এক যুবক গ্রে’প্তার বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রামগঞ্জ উপজেলা শাখার নি’র্বাচ’নে বাসার ইউসুফ পরিষদের পরিচিতিসভা তিতাসে বৃ’ক্ষরো’পণ ও বিতরণ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত  নেত্রকোণার দুর্গাপুরে সমৃ’দ্ধি উন্নয়ন মেলা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত সাংবাদিকতায় সম্মাননা পেলেন দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি মামুন রনবীর সম্পত্তির জন্য পিতাকে হ’ত্যার উদ্দেশ্যে কু’পিয়ে জখম, ছেলে রুবেল গ্রে’ফতা’র লালমনিরহাটে একদিনে ১৬ অ’পরা’ধীকে গ্রে’প্তার করেছে পুলিশ সলিথা গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জ’মি প’রিদর্শ’নে ইউএনও রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বাজেট ঘোষণা গবাদিপ’শুর রো’গ প্র’তিরো’ধে সময়মতো ভ্যা’কসি’ন নিশ্চিত করতে হবে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা রূপগঞ্জে ১৫৫ বোতল ফে’নসিডি’লসহ তিন নারী মা’দক ব্যব’সা’য়ী গ্রেফ’তার রূপগঞ্জে শ্রমিকদলের উঠান বৈঠক  র‍্যাবের অ’ভিযা’নে ফে’নসি’ডিল’সহ দুইজন মা’দক ব্য’বসা’য়ী গ্রে’প্তার  ‎সরকারি গাছ কা’টায় প্রশাসনের নীর’বতা প্রভা’বশালী বলেই কি ছাড় পাচ্ছেন সাখাওয়াত কোম্পানীগঞ্জে বর্ণি স্টুডেন্ট ফোরামের নতুন কমিটি ঘোষণা

কিশোর রাফিকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ পরে অস্ত্র দিয়ে মামলা।।

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় : 05:14:33 am, Thursday, 5 December 2024
  • 63 বার পড়া হয়েছে

কিশোর রাফিকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ পরে অস্ত্র দিয়ে মামলা।।

 

শওকত আলম- কক্সবাজর।।

 

কিশোর রাফিকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ- পরে অস্ত্র দিয়ে মামলা
বাবাকে না পেয়ে কিশোর ছেলেকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -ওসি- গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে। ‘বাবাকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে’ এমন ভয় দেখিয়ে ওই কিশোরের কাছ থেকে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে পরিবার।

ভুক্তভোগী কিশোরের নাম তাউসিফুল করিম রাফি -১৫-। সে স্থানীয় হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এবং টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দরগাহ পাড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে।

রাফির পরিবারের অভিযোগ- ভোররাতে ঘুমন্ত রাফিকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। তা দিতে অস্বীকার করায় রাফিকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়।

 

এ ঘটনায় টেকনাফে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। স্থানীয় লোকজন ও মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -ওসি- গিয়াস উদ্দিন এই থানায় তার পূর্বসূরি বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশের পথে হাঁটা শুরু করেছেন। তার বিরুদ্ধে এমন আরও অভিযোগ শোনা যাচ্ছে।

কিশোর রাফির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ওসিসহ অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেন তারা।

 

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পুলিশের এজাহার, সাক্ষীদের বক্তব্য এবং পরিবারের অভিযোগে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য রয়েছে।

জানা গেছে, গত ২৬ নভেম্বর ভোররাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের বাড়িতে অভিযান চালায় টেকনাফ মডেল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল।

পুলিশের দাবি- অভিযানের সময় রেজাউল করিম পালিয়ে যান। তখন তার সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে রাফিকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কিন্তু রাফির মা নাছিমা আক্তার বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ভোর ৪টার দিকে পুলিশের একটি দল দরজা ধাক্কাতে শুরু করে। দরজা খুলতেই তারা আমার স্বামীকে খুঁজতে থাকে। কিন্তু তিনি বাড়িতে ছিলেন না। পরে তারা ঘরের ভেতর ঢুকে ঘুমন্ত রাফিকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায়। পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়, কিন্তু কোনো কারণ বলেনি। আমরা পরবর্তীতে রাফির সাথে কথা বলে জানতে পারি যে, আমার স্বামীকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে এমন ভয় দেখিয়ে রাফির মিথ্যা ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে।

নাছিমা অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলেকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর এক পুলিশ কর্মকর্তা তিন লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পুলিশ আমাদের জানায়, তারা পাশের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে। অথচ পরে শুনি সেই অস্ত্র রাফির কাছে পাওয়া গেছে বলে দেখানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৬ নভেম্বর থানার এসআই (নিরস্ত্র) বদিউল আলম অবৈধ অস্ত্র রাখার অপরাধে তাউসিফুল করিম রাফির বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় রাফিকে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আদালতে তোলা হয়। আদালতের বিচারক কামাল হোসেন সিকদার আসামিকে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রাফিকে বর্তমানে কক্সবাজার কারাগারের শিশু ও কিশোর ওয়ার্ড নতুন কুড়িতে রাখা হয়েছে। তাকে গাজীপুর শিশু নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তুতিও চলছে।

জোরপূর্বক বানানো হয়েছে সাক্ষী

মামলার প্রধান সাক্ষী হ্নীলা এলাকার স্থানীয় মসজিদের খতিব ও ইমাম জামাল হোসেন। তিনি বলেন, ফজরের নামাজ পড়ানোর জন্য মসজিদে যাচ্ছিলাম। পথে আমাকে থামিয়ে ওসি গিয়াস উদ্দিন পরিচয় দিয়ে একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে সিঁড়ির পাশে একটি কালো রঙের জিনিস দেখিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, আমি কিছু দেখেছি কি না। কিন্তু আমি কিছুই দেখিনি।

জামাল হোসেন বলেন, পুলিশ আমাকে জোর করে একটি খালি কাগজে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেছে। আমি কোনো অপরাধমূলক কিছু দেখিনি। অথচ আমাকে সাক্ষী বানানো হয়েছে।

মামলার দ্বিতীয় স্বাক্ষী প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ভোররাতে নারী পুলিশ সদস্যরা আমার ঘরে ঢুকে আলমারি তল্লাশি করে। পরে বলে, তারা অস্ত্র পেয়েছে। কিন্তু পরদিন শুনি, সেই অস্ত্র আমার ঘর থেকে নয়, রাফির কাছ থেকে উদ্ধার দেখানো হয়েছে।

বাবাকে না পেয়ে ১৪ বছরের ছেলেকে ‘অস্ত্র দিয়ে’ ফাঁসানোর অভিযোগ
লোক ভাড়া করে ওসির পক্ষে মানববন্ধন

এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে টেকনাফ মডেল থানা। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওসি গিয়াস উদ্দিন মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজন ব্যক্তিকে দিয়ে রাফির পরিবারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন ব্যক্তি এর আগে ইয়াবাসহ র‍্যাব ও পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল্লাহ বলেন, ওসি মাত্র দুই মাস হলো টেকনাফ থানায় দায়িত্ব নিয়েছেন। এত অল্প সময়ে তার এমন কোনো কৃতিত্ব নেই, যার জন্য সাধারণ মানুষ তার পক্ষে মানববন্ধন করবে। এটি পুরোপুরি সাজানো একটি নাটক।

মানবাধিকার কর্মীদের প্রতিক্রিয়া

জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর জেলা কমিটির সভাপতি সুবিমল পাল পান্না বলেন, একজন কিশোরকে এভাবে রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। এটি শিশু সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের বড় উদাহরণ। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত।

তিনি আরও বলেন, টেকনাফে প্রদীপ কুমার দাশের কুখ্যাত কর্মকাণ্ডের যে ধারা ছিল, তা আবার ফিরে আসছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। না হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

পুলিশের বক্তব্য

অভিযোগের বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, রাফির বাবা রেজাউল করিম একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং মাদক কারবারি। আমরা তার বাসায় অভিযান চালাই। অভিযানকালে রাফির কাছ থেকে একটি নীল রঙের ব্যাগে বিদেশি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি এবং ৪০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করি। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য এই অস্ত্র মজুত রাখা হয়ে

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রূপগঞ্জে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর নির্দেশে নির্মিত চার সড়কের উদ্বোধন।।

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্লাবিত,২ শত পরিবার পানিবন্দী।।

পাইকগাছায় উ’ন্মু’ক্ত লটারির মাধ্যমে এলসিএস ক’র্মী নি’র্ধার’ণ 

কিশোর রাফিকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ পরে অস্ত্র দিয়ে মামলা।।

আপডেট সময় : 05:14:33 am, Thursday, 5 December 2024

 

শওকত আলম- কক্সবাজর।।

 

কিশোর রাফিকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ- পরে অস্ত্র দিয়ে মামলা
বাবাকে না পেয়ে কিশোর ছেলেকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -ওসি- গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে। ‘বাবাকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে’ এমন ভয় দেখিয়ে ওই কিশোরের কাছ থেকে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে পরিবার।

ভুক্তভোগী কিশোরের নাম তাউসিফুল করিম রাফি -১৫-। সে স্থানীয় হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এবং টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দরগাহ পাড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে।

রাফির পরিবারের অভিযোগ- ভোররাতে ঘুমন্ত রাফিকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর পরিবারের কাছে তিন লাখ টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। তা দিতে অস্বীকার করায় রাফিকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়।

 

এ ঘটনায় টেকনাফে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। স্থানীয় লোকজন ও মানবাধিকার কর্মীদের অভিযোগ, টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা -ওসি- গিয়াস উদ্দিন এই থানায় তার পূর্বসূরি বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশের পথে হাঁটা শুরু করেছেন। তার বিরুদ্ধে এমন আরও অভিযোগ শোনা যাচ্ছে।

কিশোর রাফির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ওসিসহ অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি করেন তারা।

 

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পুলিশের এজাহার, সাক্ষীদের বক্তব্য এবং পরিবারের অভিযোগে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য রয়েছে।

জানা গেছে, গত ২৬ নভেম্বর ভোররাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের বাড়িতে অভিযান চালায় টেকনাফ মডেল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল।

পুলিশের দাবি- অভিযানের সময় রেজাউল করিম পালিয়ে যান। তখন তার সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে রাফিকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কিন্তু রাফির মা নাছিমা আক্তার বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ভোর ৪টার দিকে পুলিশের একটি দল দরজা ধাক্কাতে শুরু করে। দরজা খুলতেই তারা আমার স্বামীকে খুঁজতে থাকে। কিন্তু তিনি বাড়িতে ছিলেন না। পরে তারা ঘরের ভেতর ঢুকে ঘুমন্ত রাফিকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায়। পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়, কিন্তু কোনো কারণ বলেনি। আমরা পরবর্তীতে রাফির সাথে কথা বলে জানতে পারি যে, আমার স্বামীকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে এমন ভয় দেখিয়ে রাফির মিথ্যা ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছে।

নাছিমা অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলেকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর এক পুলিশ কর্মকর্তা তিন লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে অস্ত্র মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পুলিশ আমাদের জানায়, তারা পাশের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে। অথচ পরে শুনি সেই অস্ত্র রাফির কাছে পাওয়া গেছে বলে দেখানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৬ নভেম্বর থানার এসআই (নিরস্ত্র) বদিউল আলম অবৈধ অস্ত্র রাখার অপরাধে তাউসিফুল করিম রাফির বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় রাফিকে কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আদালতে তোলা হয়। আদালতের বিচারক কামাল হোসেন সিকদার আসামিকে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রাফিকে বর্তমানে কক্সবাজার কারাগারের শিশু ও কিশোর ওয়ার্ড নতুন কুড়িতে রাখা হয়েছে। তাকে গাজীপুর শিশু নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তুতিও চলছে।

জোরপূর্বক বানানো হয়েছে সাক্ষী

মামলার প্রধান সাক্ষী হ্নীলা এলাকার স্থানীয় মসজিদের খতিব ও ইমাম জামাল হোসেন। তিনি বলেন, ফজরের নামাজ পড়ানোর জন্য মসজিদে যাচ্ছিলাম। পথে আমাকে থামিয়ে ওসি গিয়াস উদ্দিন পরিচয় দিয়ে একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে সিঁড়ির পাশে একটি কালো রঙের জিনিস দেখিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, আমি কিছু দেখেছি কি না। কিন্তু আমি কিছুই দেখিনি।

জামাল হোসেন বলেন, পুলিশ আমাকে জোর করে একটি খালি কাগজে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেছে। আমি কোনো অপরাধমূলক কিছু দেখিনি। অথচ আমাকে সাক্ষী বানানো হয়েছে।

মামলার দ্বিতীয় স্বাক্ষী প্রবাসী নুরুল আমিনের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ভোররাতে নারী পুলিশ সদস্যরা আমার ঘরে ঢুকে আলমারি তল্লাশি করে। পরে বলে, তারা অস্ত্র পেয়েছে। কিন্তু পরদিন শুনি, সেই অস্ত্র আমার ঘর থেকে নয়, রাফির কাছ থেকে উদ্ধার দেখানো হয়েছে।

বাবাকে না পেয়ে ১৪ বছরের ছেলেকে ‘অস্ত্র দিয়ে’ ফাঁসানোর অভিযোগ
লোক ভাড়া করে ওসির পক্ষে মানববন্ধন

এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে টেকনাফ মডেল থানা। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওসি গিয়াস উদ্দিন মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজন ব্যক্তিকে দিয়ে রাফির পরিবারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কয়েকজন ব্যক্তি এর আগে ইয়াবাসহ র‍্যাব ও পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল্লাহ বলেন, ওসি মাত্র দুই মাস হলো টেকনাফ থানায় দায়িত্ব নিয়েছেন। এত অল্প সময়ে তার এমন কোনো কৃতিত্ব নেই, যার জন্য সাধারণ মানুষ তার পক্ষে মানববন্ধন করবে। এটি পুরোপুরি সাজানো একটি নাটক।

মানবাধিকার কর্মীদের প্রতিক্রিয়া

জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর জেলা কমিটির সভাপতি সুবিমল পাল পান্না বলেন, একজন কিশোরকে এভাবে রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। এটি শিশু সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের বড় উদাহরণ। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা উচিত।

তিনি আরও বলেন, টেকনাফে প্রদীপ কুমার দাশের কুখ্যাত কর্মকাণ্ডের যে ধারা ছিল, তা আবার ফিরে আসছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। না হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

পুলিশের বক্তব্য

অভিযোগের বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, রাফির বাবা রেজাউল করিম একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং মাদক কারবারি। আমরা তার বাসায় অভিযান চালাই। অভিযানকালে রাফির কাছ থেকে একটি নীল রঙের ব্যাগে বিদেশি পিস্তল, ৬ রাউন্ড গুলি এবং ৪০ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করি। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য এই অস্ত্র মজুত রাখা হয়ে