মাজিদ আল মামুন- মেহেরপুর।।
মেহেরপুরে কিছুটা শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথে কমতে শুরু করেছে সকল ধরনের সবজির মূল্য। তবে বাড়তি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে শিম ও আলু। গত তিন সপ্তাহ পূর্বে এসব সবজি চওড়া মূল্যে বিক্রি হলেও এখন তা প্রতি কেজিতে কমেছে ২০- ৩০ টাকা। মেহেরপুরে শীতের ইমেজ ও কুয়াশা শুরু হওয়ার সাথে সাথে কমতে শুরু করে দাম। শীত বাড়ার সাথে সাথে আরও কমবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা।
মৌসুমের শুরুতে সরবরাহ কম থাকায় মেহেরপুর বড়বাজার তহবাজার-গাংনী-বামুন্দী-ভাটপাড়া-মাইলমারী-হিন্দা-হেমায়েতপুর, মড়কা- বাঁশবাড়ীয়া- জোড়পুকুরিয়া- কাঁঠালপোতা- সোনাপুর ও আমঝুপিসহ গ্রামাঞ্চলের সকল ধরনের হাট বাজারগুলোতে লক্ষ্য করা গেছে বেগুন-শিম-মুলা-টমেটো-শসা-উচ্চ্ছে-করলা ও ঢেঁড়সসহ সকল ধরনের সবজির মূল্য বেশ চওড়া থাকায় খালি হাতে বাসায় ফিরেছেন অনেক ক্রেতা। তবে বর্তমান বাজার মূল্যে স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন ক্রেতাদের অনেকেই।
বুধবার -২৭ নভেম্বর- সকাল থেকে সন্ধা অবধি মেহেরপুরের বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে-শিম ১০০ টাকা-আলু নতুন ১০০ টাকা- পুরাতন ৭৫-৮০ টাকা-বেগুন ৫০ টাকা- পটল ৪০ টাকা- মুলা ২৫-৩০ টাকা- কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা-পিয়াজ ১২০ টাকা-রসুন ২৫০-৩০০ টাকা-মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা-পেঁপে ৪০ টাকা- কাঁচা কলা ৪০-৫০ টাকা- লাউ ৪০ টাকা- ধুন্দল ৫০ টাকা- পুঁই শাক ২০ টাকা- করলা ৮০ টাকা- উচ্ছে ১২০ টাকা-ঢেঁড়স ৩০-৪০ টাকা-ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা-শসা ৩০-৪০ টাকা- লাল শাক প্রতি আটি ১০ টাকা- পালং শাক প্রতি আটি ২০ টাকা এবং আদা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৬০ টাকা দরে।
এদিকে মাছের বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকা- সিলভার কার্প ২০০ টাকা- কাতলা ২৫০ টাকা-ভেটকি ১৭০ টাকা, গ্লাস কার্প ২২০ টাকা- পাঙ্গাস ১৪০ টাকা- ছোট ময়া মাছ ৩০০ টাকা, হাইব্রিড কৈ মাছ ১৫০-২০০ টাকা এবং পাকাল বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি দরে।
হিন্দা বাজারের কয়েকজন মাছ বিক্রেতা জানান- আড়ৎ থেকে বেশি মূল্যে মাছ কিনে বাজারে বিক্রি না হওয়ায় তা লোকশানে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া মানুষের মাঝে অভাব-অনটন বিরাজ করায় মাছ কেনা থেকে বিরত রয়েছে সাধারণ ক্রেতারা। কোন কোন ব্যবসায়ী জানান, ১০ কেজি মাছ এনেও তা বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতি ১ ঘন্টায় ১ টি মাছ বিক্রি হচ্ছে।
হিজলবাড়ীয়া গ্রামের ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম জানান- শীতকালীন আলু ১০০ টাকা কেনা আমাদের সাধ্যের বাইরে। এ কোন দেশে বসবাস করছি যে প্রতি ৬ পিস -১ কেজি- আলু ১০০ টাকায় কিনতে হবে।
শিক্ষক তাহাজ উদ্দিন জানান- শীতকালীন সবজি আলু কেন ১০০ টাকায় কিনতে হবে। বিগত বছরগুলোতে নতুন আলু ৮০ টাকা হলেও এবার তা ১০০-১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বাজার তদারকি জরুরি বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে সবজি বিক্রেতা তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক জানান- বেশি মূল্যে জমি কনট্যাক্ট নিয়ে সবজি চাষ করে বিপাকে পড়েছি। সবজি বিক্রি করে আসল টাকা ওঠানোই সম্ভব না।
অপরদিকে বাজার মূল্য ও কৃষকের প্রাপ্য মূল্যে বিশাল ফারাক রয়েছে বলে জানান- হাড়াভাঙ্গা গ্রামের ইউসুফ আলীসহ হিন্দা, করমদী ও সহড়াতলা গ্রামের কয়েকজন কৃষক।
তিনারা জানান- কিছুদিন পূর্বে সবজির মূল্য আশানুরূপ পেলেও শীতের আগমনী বার্তা আসার সাথে সাথে সবজির মূল্য কমে যাচ্ছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিক্রেতারা সবজি উৎপাদনকারীর কাছ থেকে কম মূল্যে সবজি ক্রয় করে তা বাজারে অধিক মুনাফাতে বিক্রি করছেন। এতে করে সবজি উৎপাদনকারী ও ভোক্তা দু’জনেই বিপাকে, সুবিধা নিচ্ছে মধ্যস্থ খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতা।