উৎপল রক্ষিত
গাজীপুর প্রতিনিধি।।
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের ছেলে পাবরিয়া চালা গ্রামের আতিকুর রহমান কলা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি ৮০ বিঘা জমির মধ্যে সাগর কলা- সবরি কলা- চাম্পা কলা- অমৃত কলা সহ বিভিন্ন জাতের কলা চাষ করে থাকেন।
আতিকুর রহমান জানান- ২০১৮ সাল থেকে তিনি কলা চাষ শুরু করেন। তাকে কলা চাষে সহযোগিতা করছেন গ্রীন বাংলা এগ্রোভেট লিমিটেড। গ্রীন বাংলা এগ্রোভেট লিমিটেড কলা চাষের জন্য আর্থিক- ঔষধ- ও বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ প্রদান করছেন।
আতিকুর কলাচাষ করে বছরে ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন। কলাচাষের সাথে ১৩- ১৪ জন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্হা করছেন।
ড. চিওরঞ্জন রায় মনে করেন- শিক্ষিত ছেলেদের চাকরির পিছনে না ঘুরে নিজে উদ্যেক্তা হবার পরামর্শ দেন। স্বনির্ভর বাংলাদেশ কে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য আধুনিক কৃষির সাথে শিক্ষিত মানুষ যুক্ত হলে কৃষির উন্নয়ন হবে। কলা চাষে লাভ বেশি, ঝুঁকি কম।
বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ফল কলা। সহজলভ্যতা- পুষ্টিগুণ- এবং সুস্বাদু হওয়ার কারণে সবাই কলা খেয়ে থাকেন । আমাদের দেশে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিও ও উচ্চবিও শ্রেনির মানুষ প্রায় সবাই কম বেশি কলা খেয়ে থাকেন। অনেকের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা স্থান পেয়েছে। কলার মধ্যে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন থাকে। যেমন ভিটামিন-খনিজ-অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অক্সিজেন সমৃদ্ধ এই উপাদান গুলো আমাদের দেহে বিভিন্ন কার্যকারিতা সমর্থন করে। সুস্থ জীবনের জন্য প্রয়োজন
কলা খাওয়া প্রয়োজন ।
একটি মাজারি আকারের কলায় প্রায় ১০৫ গ্রাম ক্যালরি-২৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট-৩ গ্রাম ফাইবার-১ গ্রাম প্রোটিন-১৪ গ্রাম চিনি থাকে। এছাড়াও কলায় রয়েছে পটাশিয়াম যা শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কলায় থাকা আয়রন রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদন বাড়ায়। কলায় ফাইবার থাকায় হজম শক্তি বাড়ায়। এ ছাড়াও কলা মানব দেহের বিভিন্ন রোগের উপকার করে থাকে।
বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অনেকেই কলা চাষ করে থাকে। অমৃত সাগর- চম্পা- মিহের সাগর- বিচি কলা- আনাজি কলা- বারি-১- বারি -৩ সহ বিভিন্ন জাতে কলা সারা বছর বাংলাদেশে চাষ করা হয়।
পর্যাপ্ত রোদযুক্ত ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধা যুক্ত জমি কলা চাষের জন্য উপযোগী। উর্বর মাটিতে কলা চাষের জন্য উত্তম চাষ ও মই দিয়ে জমি সমতল ও আগাছা মুক্ত করে কলা চারা বপন করতে হবে। একটি আদর্শ কলা চাষের জন্য শারীরিক দূরত্ব ২ মিটার এবং কলার চারার দূরত্ব ২ মিটার হলে ভালো হয়।
কলার স্বাস্থ্য উপকারিতা এত বেশি যে কলা আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা অবশ্যই রাখা উচিত। কলা শুধু পুষ্টিকর নয়- এর মধ্যে রয়েছে অসাধারণ স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিভিন্ন উপাদান। আমরা নিয়মিত কলা খেলে সুস্থ থাকতে পারি।
বাংলাদেশের কলার চাষ দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বানিজ্যিক ভাবে কলা চাষ করা ছাড়াও গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে বাড়িতে- পুকুর পাড়ে- ফাঁকা জমিতে কলা চাষ করা হয়ে থাকে। চায়ের দোকান, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির টিফিনে- অফিস থেকে শুরু করে বাসা বাড়িতে প্রচুর কলার চাহিদা বেড়েছে। কলার চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে কলার উৎপাদন বেড়েছে।অনেক শিক্ষিত যুবক চাকরির পিছনে না ঘুরে কলা চাষ করে আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন।
অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন- কলার বিভিন্ন পুষ্টিগুন মানব দেহের জন্য প্রয়োজন। বাংলাদেশে কলা চাষ বৃদ্ধি পেলে দেশের চাহিদা পূরন করে একদিন কলা বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।